সড়কের মোড়ে মোড়ে গ্যাস ও জ্বালানী তেলের দোকানের ছড়াছড়ি সড়কের মোড়ে মোড়ে গ্যাস ও জ্বালানী তেলের দোকানের ছড়াছড়ি - ajkerparibartan.com
সড়কের মোড়ে মোড়ে গ্যাস ও জ্বালানী তেলের দোকানের ছড়াছড়ি

3:41 pm , June 23, 2022

শামীম আহমেদ ॥ কোনো ধরনের আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করেই বরিশাল শহরসহ দক্ষিণাঞ্চলের রাস্তার মোড়ে মোড়ে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসের সিলিন্ডার ও পেট্রল। অনুমোদিত পেট্রলপাম্প ছাড়া পেট্রলজাতীয় দাহ্য পদার্থ বিক্রির বিধান নেই। কিন্তু তা উপেক্ষা করে বরিশালের বিভিন্ন এলাকার মোড়ে মোড়ে এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের পাশাপাশি জারিকেন ও বোতলে পেট্রলসহ দাহ্য পদার্থ বিক্রি হচ্ছে। আর নিরব ভূমিকায় রয়েছে বিস্ফোরক অধিদপ্তরসহ বরিশালের প্রশাসন। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, এর ফলে যেকোনো সময় বিস্ফোরণ ও দাহ্য পদার্থ থেকে আগুনে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। একই আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বরিশাল নগরীর চার রাস্তার মোড় চৌমাথা সহ বাংলা বাজার, রূপাতলী, নথুল্লাবাদ, বটতলা বাজার, পোট রোড, বাজার রোড, কাশিপুর বাজার, ভাটার খাল, চাঁদমারী সংলগ্ন স্টিডিয়ামের সামনে, পলাশপুর বস্তি, ব্রাউন কম্পাউন্ট, রূপাতলীর চান্দু মার্কেট, শেরে-বাংলা সড়ক, কালিজিরা বাজার, সোনালী আইক্রিমের মোড়, তালতলী বাজারসহ বিভিন্ন পয়েন্টের ওষুধের দোকান, রেস্তোরাঁ, মুদির দোকান, ক্রোকারিজের দোকান, ফলের দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের দোকানে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার ও গাড়ির জ্বালানি তেল পেট্রল বিক্রি করার জন্য রাখা হয়েছে সাজিয়ে। বিষয়টি নিয়ে নগরীর চাঁদমারি এলাকার তেলের দোকানদার জাকিরের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি দোকানের ট্রেড লাইসেন্স করছি। বিস্ফোরক অধিদপ্তর থেকে কোন লাইসেন্স নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভাই আমি বছরের পর বছর ধরে এখানে ব্যবসা করে আসছি। আমার লাইন্সের কোন প্রয়োজন হয় না। এবং কি আজ পর্যন্ত বিস্ফোরক অধিদপ্তর থেকে কোন লোকও আসেনি লাইসেন্স আছে কিনা তা দেখতে। জ্বালানি তেল পেট্রল ও এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের বিক্রিতে লাইসেন্সের বিষয়ে আমি তেমন কিছু জানিনা। তাঁর দাবি, এ বিষয়ে কোনো গ্যাস কোম্পানির লোকজন তাঁকে কিছু বলেননি। তাঁর দোকানে গ্যাস কোম্পানির ১৯ টি গ্যাসের সিলিন্ডার এবং কয়েকটি ব্যারেল ভর্তি পেট্রল সহ তেলে বোতল সাজিয়ে রাখা হয়েছে সামনে। এছাড়া মহাসড়কসহ জেলার বিভিন্ন সড়কের পাশে অবৈধ জ্বালানী তেলের দোকান গড়ে ওঠায় বৈধ ব্যবসায়ীরাও ব্যবসায় লোকসান গুনছে বলে জানা যায়। এ সব অবৈধ দোকানদাররা শুধু ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এ জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসের সিলিন্ডারের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া এসব দোকানে চোরাই তেল বিক্রি হচ্ছে অহরহ। দোকান গুলোতে ফায়ার লাইসেন্স তো দূরের কথা, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রও তাদের নেই। বরিশালের মুদি ও রকমারি দোকানেও পেট্রলের পাশাপাশি দাহ্য পদার্থ বিক্রি হচ্ছে। এ বিষয়ে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিমুল করিম বলেন, এসব দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা না করায় দিন দিন বেড়ে চলেছে এই ব্যবসা। কোমল পানীয়র পুরোনো বোতলে ভরে পেট্রল বিক্রি করা হচ্ছে। এসব দোকানের পেট্রলের ক্রেতাদের অনেক দোকানি চেনেন না বা জানেন না। এটি খুবই বিপজ্জনক। দুষ্কৃতকারীদের হাতে পেট্রল চলে যেতে পারে। বরিশাল ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়ন অফির্সার মোঃ আব্দুর মান্নান বলেন, গ্যাসের সিলিন্ডারের ব্যবসা করলে অবশ্যই তাঁকে ফায়ার লাইসেন্স নিতে হবে। সরকারী নীতিমালা মেনে ব্যবসা করতে হবে। সড়কের ধারে সাজিয়ে রেখে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করা খুবই বিপজ্জনক। এ ছাড়া যত্রতত্র পেট্রল বা দাহ্য পদার্থ বিক্রির কারণে ভয়াবহ অগ্নিকা-সহ প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। বিষয়টি নিয়ে বরিশাল বিভাগীয় বিস্ফোরক পরিদর্শকের কার্যালয়ের সহকারী বিস্ফোরক পরিদর্শক মোঃ মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, সরকার নির্ধারিত পরিমাপের অতিরিক্ত গ্যাস কিংবা জ্বালানি তেল খোলা বাজারে বিক্রি করতে হলে অবশ্যই বিস্ফোরক অধিদপ্তরের লাইসেন্স থাকতে হবে। যদি কেউ তা অমান্য করেন তাহলে অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে জেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বরিশাল বিভাগীয় অফিসে আমাদের জনবল সংকট থাকার কারনে আমাদের একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে কিছু দিনের মধ্যেই আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সাথে নিয়ে অভিযানে নামবো।

এই বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০  
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT