3:42 pm , June 12, 2022
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ এর চিকিৎসা ও শিক্ষা ব্যবস্থা দিন দিন বেহাল দশার দিকে যাচ্ছে । এমনিতেই রয়েছে প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক ও জনবল সংকট তার মধ্যে সিনিয়র অনুপস্থিতি। তাই ইন্টার্নী চিকিৎসকরাই একমাত্র ভরসা। যার জন্য ইন্টার্নী চিকিৎসকরা গুরুতর রোগী এলে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশি খায়। আর এ কারনেই সময়মত সঠিক চিকিৎসার অভাবে অনেক রোগী মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে । ফলে চিকিৎসা অবহেলার অপবাদে প্রায়ই ঘটে ইন্টার্নী চিকিৎসকদের সাথে রোগীর স্বজনদের সংঘর্ষের ঘটনা। আর এ সংঘর্ষের কারনে চিকিৎসকরা আন্দোলনের নামে করেন কর্মবিরতি আর রোগীর স্বজনরা করেন রাস্তা অবরোধ। তাতে ভোগান্তিতে পরে চিকিৎসা নিতে আসা হাজারো মানুষ। গোটা দক্ষিণাঞ্চল তথা বরিশাল বিভাগের মানুষের চিকিৎসার শেষ আশ্রয়স্থল হচ্ছে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এক সময় হাসপাতালটির বেশ সুনাম ছিল। এখন দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতি ও অদক্ষ লোকদ্বারা পরিচালনার কারনে হাসপাতালের চিকিৎসা ও একাডেমিক কার্যক্রম মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। চিকিৎসক হতে তাদের মৌখিক ও প্রাকটিক্যাল ক্লাস যথারীতি হওয়ার নিয়ম থাকলেও ইদানীং বেশির ভাগ সিনিয়র শিক্ষকরা সময় মত ক্লাস নিতে ও অফিসে আসেন না। তারা নিয়মিত ক্লাস নেন না এবং হাসপাতালে ভর্তি রোগী দেখার ব্যাপারে অনিহা প্রকাশ করেন। সরেজমিনে দেখা যায়, মেডিকেল কলেজে ১০ টার আগে কোন প্রভাষক বা সহকারী অধ্যাপক রুমে আসেন না। এ নিয়ে কয়েক দিন পূর্বে সোস্যাল মিডিয়ায় বায়োকেমিস্ট বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এক সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ হানিফের ষ্ট্যাটাস ভাইরাল হয়। তিনি তার ফেজবুক ওয়ালে লিখেন মেডিকেল কলেজের বিভাগীয় প্রধান শিক্ষক থাকেন কর্মস্থল থেকে অনেক দূরে। তিনি মাসে দুই তিন দিন অফিস করেন। আবার পরিক্ষা অনলাইনে নিয়ে হাজিরা খাতায় সব শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর রাখেন । ছাত্রছাত্রীরা নির্ধারিত ক্লাসে এসে শিক্ষকদের না পেয়ে হাজিরা খাতায় নিজেরা হাজিরা দিয়ে চলে যান। তার ষ্ট্যাটাসের লিংকে অনেকে কমেন্ট করে বলেন, শিক্ষকরা অনেক দাপুটে হয়। এসবের প্রতিবাদ করলে নাকি পরিক্ষায় ফেল করার আশংকা থাকে। বরিশাল মেডিকেল কলেজ ফিজিওলজি বিভাগের প্রধান অহিদা সুলতানা খুলনা থাকেন, মাসে তিনি দুদিন অফিস করেন। অধ্যক্ষ ডাঃ মনিরুজ্জামান বিষয়টি জেনেও কোন ব্যবস্থা নেন না। আবার উপাধ্যক্ষ ডাঃ নাজিমুল হক সপ্তাহে দু দিন পটুয়াখালীতে সারাদিন রোগী দেখেন বলে জানা যায় । এতে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের একদিকে যেমন ক্ষতি হচ্ছে অন্যদিকে তারা দক্ষ চিকিৎসকও হয়ে উঠছেন না।