দক্ষিণাঞ্চলে করোনার প্রতিষেধক বুষ্টার ডোজ গ্রহনকারীর হার ১০ ভাগেরও কম দক্ষিণাঞ্চলে করোনার প্রতিষেধক বুষ্টার ডোজ গ্রহনকারীর হার ১০ ভাগেরও কম - ajkerparibartan.com
দক্ষিণাঞ্চলে করোনার প্রতিষেধক বুষ্টার ডোজ গ্রহনকারীর হার ১০ ভাগেরও কম

3:23 pm , June 3, 2022

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ প্রায় ১ কোটি জনসংখ্যার দক্ষিণাঞ্চলে ১২ বছরের ঊর্ধ্বে ৮৫ লাখেরও বেশী মানুষের প্রায় ৭০ লাখ এ পর্যন্ত করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ এবং ৬০ লাখ দ্বিতীয় ডোজ গ্রহন করলেও বুষ্টার ডোজ গ্রহনকারীর সংখ্যা সাড়ে ৬ লাখেরও কম। যা ভ্যাকসিন গ্রহনযোগ্য মানুষের ১০ ভাগেরও কম। এ অবস্থায়ই শণিবার থেকে দেশব্যাপী বুষ্টারডোজ প্রদানের ক্যাম্পেইনে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার ৪২ উপজেলাতেও ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহন করা হয়েছে। এ সময়ে জেলা ও উপজেলা সদর থেকে ইউনিয়ন পর্যায়েও বুষ্টার ডোজ প্রদানের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ডা. হুমায়ুন শাহিন খান জানিয়েছেন, আমরা চেষ্টা করব সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষকে বুষ্টার ডোজ দিতে। তার মতে, ৪ মাস আগে যারাই দ্বিতীয় ডোজ গ্রহন করেছেন, যেকোন কেন্দ্রে গেলেই তাকে বুষ্টার ডোজ দেয়া হবে। প্রতিটি ইউনিয়নের নুন্যতম ৩টি কেন্দ্রে এসব ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। এ লক্ষ্যে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ছাড়াও গ্রাম পর্যায়ের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকেও বুষ্টার ডোজ প্রদানের লক্ষ্যে ব্যবহার করা হবে বলে জানা গেছে।
এবারের ক্যাম্পেইনে দক্ষিণাঞ্চলে ‘এ্যাস্ট্রেজেনেকা, ফাইজার ও মডার্ণা’ ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ দেয়া হবে বলে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। ২০২১-এর ৭ ফেব্রুয়ারী থেকে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হয়। গত ৩১ মে পর্যন্ত ১৫ মাস ২৭ দিনে এ অঞ্চলের ৬ জেলায় ৬৯ লাখ ৩ হাজার ৯৩৪ জন প্রথম ডোজ গ্রহন করেছেন। প্রথম ডোজ গ্রহনকারীদের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ গ্রহন করেছেন ৫৯ লাখ ৮২ হাজার ৩৬৯ জন। কিন্তু বুষ্টার ডোজ গ্রহনকারীর সংখ্যা মাত্র ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩ জন। এরমধ্যে বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রথম ডোজ গ্রহনকারীর সংখ্যা ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৩০৮ জন। আর ৪ লাখ ১ হাজার ৮৮০ জন দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন গ্রহন করলেও এ নগরীতে বুষ্টার ডোজ গ্রহনকারীর সংখ্যা মাত্র ৯৯ হাজারের মত।
অপরদিকে দক্ষিণাঞ্চলের ১০ লাখ ৩৩ হাজার ১৪৮ ছাত্রÑছাত্রী গত ৩১ মে পর্যন্ত প্রথম ডোজ ও ৮ লাখ ৯ হাজার ৬৩৬ জন দ্বিতীয় ডোজ গ্রহন করেছে। এরমধ্যে বরিশাল মহানগরীতেই ৯৩ হাজার ৫৯৯ ছাত্রÑছাত্রী প্রথম ডোজ ও প্রায় ৭৯ হাজার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহন করেছে বলে জানা গেছে।
তবে করোনা সংক্রমন উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পাওয়ায় সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল জুড়েই বুষ্টার ডোজ গ্রহনকারীর সংখ্যা এখনো এত কম বলে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্রে বলা হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত মে মাসে সমগ্র দক্ষিনাঞ্চলে মাত্র ৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। যারমধ্যে নগরীতে দুজন ও ভোলাতে ১ জন। যা ২০২১-এর মধ্য মার্চে দক্ষিনাঞ্চলে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তে পরে এ অঞ্চলে সর্বনি¤œ সংক্রমন। গত মার্চে এ অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১২০ জন। মৃত্যু হয় দুজনের। তবে এপ্রিলে ৭ জনের দেহে সংক্রমন শনাক্ত হলেও কোন মৃত্যু ছিল না। মে মাসেও কোন মৃত্যু নেই।
তবে এ অঞ্চলে ৩১ মে পর্যন্ত সর্বমোট আক্রান্ত ৫২ হাজার ৭০৭ করোনা আক্রান্তের মধ্যে বিদায়ী মে মাসে ৪২৭ জন সহ ৫১ হাজার ৪৬৫ সুস্থ হয়ে উঠেছেন ইতোমধ্যে। সর্বশেষ হিসেব সুস্থতার হার ৯৯%-এর ওপরে। সর্বমোট মৃত্যু হয়েছে ৬৯০ জনের।
স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেব অনুযায়ী দক্ষিনাঞ্চলের মধ্যে সর্বাধিক করোনা শনাক্ত হয়েছে বরিশাল জেলায়, ২১ হাজার ২২৩ জন। এ জেলায় ইতোমধ্যে মারা গেছেন ২২৫ জন। তবে জেলায় আক্রান্ত ও মৃতের এ তালিকা ভারি হয়েছে বরিশাল মহানগরী কারণে। দক্ষিণাঞ্চলের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৬%-এর এ নগরীতে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ১০৩ জন।
দ্বীপজেলা ভোলাতে ৭ হাজার ৮৬৫ জন আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৯২ জনের। পটুয়াখালী জেলায় আক্রান্ত ৭ হাজার ৪১ জনের মধ্যে মারা গেছেন ১১০ জন। পিরোজপুরেও ৬ হাজার ৩০৬ জন আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮৩ জনের। দক্ষিণাঞ্চলের সর্বাধীক মৃত্যু হারের বরগুনাতে ৪ হাজার ৬৬৮ জন আক্রান্তের মধ্যে ৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর নমুনা পরিক্ষার তুলনায় সর্বাধীক শনাক্ত হারের ঝালকাঠীতে ৫ হাজার ৬০৪ জন আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছেন ৭১ জন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT