3:22 pm , May 21, 2022
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বরিশাল ঢাকা নৌ-রুটের অন্যতম জনপ্রিয় একটি জলযান এমভি মধুমতি। অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার আরেক নামও বিআইডব্লিউটিসি পরিচালিত সরকারি এই নৌযানটি। যে কারণে এই জলযান থেকে আজ পর্যন্ত লাভের মুখ দেখেনি সরকার। ধীরে চল নীতির অনন্য উদাহরণ স্থাপনকারী এই নৌযানটিতে বরিশাল থেকে ঢাকা যেতে সময় লাগে ১২ ঘন্টারও বেশি। যেখানে অন্যসব জলযান রাত নটায় ছেড়ে ভোররাতে ঢাকা পৌঁছে যায়। তারপও কম ভাড়ার কারণে আজো এই জলযানটিতে ভ্রমণে আস্থা রাখেন সাধারণ খেটে খাওয়া যাত্রীরা। বরিশাল থেকে ডেক যাত্রীকে এই লঞ্চে সর্বোচ্চ ভাড়া গুনতে হয় দুইশত টাকা। চেয়ার বা সোফা ভাড়া ৩০০ টাকা। ফলে অসময়ে ঘাটে ভেড়া এই জলযানেও উপচে পরা ভিড় সবসময়। অথচ সরেজমিনে শনিবার বিকালে দেখা গেল যাত্রীদের সাথে প্রবেশ টিকিট কাউন্টার থেকে শুরু করে লঞ্চের ডেক পর্যন্ত অমানবিক আচরণ। চারিদিকে অপরিচ্ছন্নতা এড়িয়ে গেলেও ডেকে বিছানা পেতে ঢাকাগামী যাত্রীদের ঠাসাঠাসি চিত্রটি বড়বেশি চোখে বাজে। তিনতলা এম ভি মধুমতি খুলনা থেকে মঠবাড়িয়া, কাউখালী, ঝালকাঠি হয়ে ঠিক সন্ধ্যা ছটায় বরিশাল বিআইডব্লিউটিসির ঘাটে এসে পৌঁছে। আধাঘন্টা অবস্থান করে ছুটে চলে ঢাকার পথে। ফলে যাত্রীদের হুড়োহুড়ি পড়ে যায় আগে ওঠার প্রতিযোগিতায়। বিশেষ করে চেয়ারে কোনো আসন নম্বর না থাকায় আগে বসা নীতি বড়ই বিপর্যয় তৈরি করে। একই সমস্যা ডেকে বিছানা পাতা নিয়েও। বরিশাল থেকে সাড়ে ছয়টায় ছাড়ার পর বেশকিছু ঘাট হয়ে চাঁদপুর পৌছাতে রাত বারোটা পার হবে বলে জানালেন টিকিট বিক্রেতা। মধুমতির ভিতরে তখন চলছিলো কোলাহল। শোভন চেয়ারের যাত্রীরা টিকিট হাতে সিট পাচ্ছেন না খুঁজে। অথচ প্রতিটি সিট দখল করে আছে টিকিটহীন যাত্রীরা। জানা গেল অনেক যাত্রী অগ্রীম টিকিট না কেটে উঠে পড়েন ও চেয়ার দখল করে পরে লঞ্চের কর্মীদের ম্যানেজ করেন। উপরি আয়ের লোভে কিছু কর্মী বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করেন এবং পরে তারাই চেয়ার ও কেবিন থেকে ভাড়া তুলে নেন। আর যে কারণে চমৎকার নিরাপত্তা নিশ্চিত ব্যবস্থা সহ সরকারের সব বিধিনিষেধ মান্য করে চলাচলকারী এই জলযানটি আজ পর্যন্ত লাভের মুখ দেখতে পারেনি বলে অভিযোগ যাত্রীদের তো বটেই স্বয়ং বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তাদেরও। পর্যাপ্ত টয়লেট ব্যবস্থা, দোতলা ও তিনতলাতেও রয়েছে নিরাপত্তা নিশ্চিত বয়া ও লাইফজ্যাকেট। শুধু যাত্রী ধারণ ক্ষমতার বিধিনিষেধ টুকু মানা না হলেও আজ পর্যন্ত কোনো দূর্ঘটনার অভিযোগ নেই এই জলযানটির। তবে মাঝে মধ্যেই ইঞ্জিন বিকল হয়ে পরার কারণে এর চলাচল অনিশ্চিত হয়ে যায়। ফলে বিআইডব্লিউটিএর উপ পরিচালক নৌ বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানও জানেন না এটির সঠিক খবর।