আলেম ওলামা নয়, দূর্নীতিবাজদের তালিকা তৈরি করে গণমাধ্যমে প্রচারের আহ্বান চরমোনাই পীরের আলেম ওলামা নয়, দূর্নীতিবাজদের তালিকা তৈরি করে গণমাধ্যমে প্রচারের আহ্বান চরমোনাই পীরের - ajkerparibartan.com
আলেম ওলামা নয়, দূর্নীতিবাজদের তালিকা তৈরি করে গণমাধ্যমে প্রচারের আহ্বান চরমোনাই পীরের

3:13 pm , May 20, 2022

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ আলেম ওলামা নয়, দূর্নীতিবাজদের তালিকা তৈরি করে তা গণমাধ্যমে প্রচারের আহ্বান জানিয়েছেন চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলনের আমীর মুফতি মুহাম্মদ রেজাউল করিমসহ ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশে আগত ওলামা ও বিভিন্ন মসজিদের ঈমামগন। শুক্রবার বিকালে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফতি রেজাউল করিম বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী যারাই ক্ষমতায় এসেছে, সবাই জনগণের স্বপ্নকে গলাটিপে হত্যা করেছে। গণতন্ত্রের নামে সর্বত্র দলীয়করণ এবং স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। গুম খুনের রাজত্ব কায়েম করেছে। ১৫ দফ দাবীতে আয়োজিত এই সমাবেশে কথিত গণকমিশন – কর্তৃক ১১৬ জন আলেম ও ১০০০ মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন এবং ইসলাম ও দেশ বিরোধী চক্রান্তের প্রতিবাদ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ, শিক্ষা সিলেবাসে ধর্মীয় শিক্ষার সংকোচন, ইসলাম – দেশ ও মানবতাবিরোধী মদের বিধিমালা বাতিলসহ আরো একাধিক দাবী অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম। সভাপতির বক্তব্যে ফয়জুল করিম বলেন, ১০০ জন মদ্যপ হলেই মদের দোকান খোলা যাবে। ২১ বছর হলেই যে কেউ মদপান করতে পারবে। ওরা চায় বাংলাদেশের মানুষকে পশু বানাতে। ফয়জুল করিম ব্রিটিশ ভারতের ইতিহাস তুলে ধরে মুসলমানদের অবদান স্মরণ করিয়ে দেন এবং বলেন, আমাদের আলেমদের ওরা ধর্ম ব্যবসায়ী বলে। আসলে ওদের অন্যায় ও অবৈধ ব্যবসায় বাধা দেয় বলেই আলেমরা এখন ধর্ম ব্যবসায়ী। তিনি আরো বলেন, দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতি নয়, রকেট গতি চলছে। এই গতি চলতে থাকলে জনগণ সরকারকে গদি ছাড়তে বাধ্য করবে। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমদ, জাতীয় উলামা মশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি মাওলানা নুরুল হুদা ফয়েজী, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, কেন্দ্রীয় দাওয়াহ বিষয়ক উপদেষ্টা প্রিন্সিপ্যাল মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক বেলায়েত হোসেন, কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, সহ অর্থ-সম্পাদক মাওলানা নূরুল ইসলাম আল আমীন, ইসলামী যুব আন্দোলন সেক্রেটারী জেনারেল আতিকুর রহমান মুজাহিদ, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সেক্রেটারী জেনারেল হাফেজ মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল করীম আকরাম, চরমোনাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুফতী সৈয়দ জিয়াউল করীম, বরিশাল সদর জাগুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুফতী হেদায়েতুল্লাহ আজাদী, বাকেরগঞ্জ নিয়ামতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুহাম্মাদ হুমায়ুন কবির সহ বিভাগস্থ জেলা মহানগর নেতৃবৃন্দ। সমাবেশ পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক উপাধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম। সমাবেশে ঘোষিত ১৫ দফা দাবি হলো-যেকোন মূল্যে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি রোধ করতে হবে। বাজার কারসাজীর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। দেশে মদ ও সকল ধরণের মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ করতে হবে। শিক্ষার সকল স্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। পূর্ণ ও আবশ্যিক বিষয় হিসেবে গণ্য করতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুসলিম শিশুদের জন্য নামাজ শিক্ষা ও কোরআন শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। শিক্ষা সিলেবাস থেকে চরম নাস্তিকক্যবাদী সকল ধর্মবিরোধী, অবৈজ্ঞানিক ও বস্তাপঁচা ডারউইনের থিউরি বাদ দিতে হবে। কারান্তরীণ সকল মজলুম আলেম এবং রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বে জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। সকল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মতামত নিয়ে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত সশস্ত্রবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং নির্বাচনের দিন সশস্ত্রবাহিনীর হাতে বিচারিক ক্ষমতা দিতে হবে। নির্বাচনে সকল দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে। রেডিও, টিভিসহ সকল সরকারি বেসরকারি গণমাধ্যমে সবাইকে সমান সুযোগ দিতে হবে এবং রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে সকল ধরণের হয়রানী বন্ধ করতে হবে। দুর্নীতিবাজদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জাতীয় সংহতি ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠায় জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির (চ.জ) নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে প্রণীত বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে সকল রাজনৈতিক দলের জন্যে সভা-সমাবেশসহ সাংবিধানিক স্বীকৃত সকল রাজনৈতিক কর্মসূচি ও বাকস্বাধীনতা উন্মুক্ত করতে হবে। বাদ জুম’আ সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও জুম’আর আগেই বঙ্গবন্ধু উদ্যান ও আশপাশের এলাকা লোকে লোকারন্য হয়ে যায়। সমাবেশের কারণে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা যানবাহন শূণ্য হয়ে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের দখলে চলে যায়।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT