3:45 pm , May 19, 2022
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ অশনি’তে ভর করে প্রবল বর্ষণে তরমুজ সহ রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির সাথে হুমকিতে পড়া উঠতি বোরো ধান ঘরে তুলতে এখন দুঃসহ গরম আর লাগামহীন তাপ প্রবাহে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি যোদ্ধাগন চরম বিড়ম্বনায়। বরিশাল কৃষি অঞ্চলের ১১ জেলায় ৩ লাখ ৩৭ হাজার ১৮৫ হেক্টরে আবাদ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এবার ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৬৫০ হেক্টরে বোরো আবাদ হলেও এ পর্যন্ত তার ৫৫% জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। অশনি’র বৃষ্টিতে ধান কাটা ব্যাহত হবার পরে দুঃসহ গরমের সাথে কৃষি শ্রমিকের অভাবে অধিকাংশ জমির পাকা ধান এখনো মাঠে। গত কয়েক দিনের তাপ প্রবাহে সাধারন মানুষ ঘর থেকে বের হতেই সাহস পাচ্ছেন না। লাগাতার তাপ প্রবাহে দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হবার প্রবনতাও ক্রমশ বাড়ছে। উপরন্তুতাপ প্রবাহের কারণে আক্রান্তরা দ্রুত পানি শূণ্যতার কবলে পড়ছেন । অশনি’তে ভর করে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত বিদায় নেয়ার পরে দক্ষিনাঞ্চল যুড়ে এখন তাপ প্রবাহ চলছে।
গত মাসে বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ ৩৬.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠে যাবার পরে বৃহস্পতিবারেই তা আবার ৩৬ ডিগ্রী ছুই ছুই করছিল। যা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৩ ডিগ্রী বেশী। অপরদিকে গত মাসে বরিশালে স্বাভাবিক ১৩২ মিলিমিটরের স্থলে মাত্র ১৯ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। যা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ৮৫.৬% কম। চলতি মাসেও আবহাওয়া বিভাগ থেকে বরিশালে স্বাভাবিক ২৬০ মিলিমিটারের স্থলে ২৪৫ থেকে ৩১০ মিলি মিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিলেও মাসের প্রথম ১৯ দিনে বৃষ্টি হয়েছে ১শ মিলি মিটারেরও কম। তবে কুয়াকাটা সংলগ্ন কলাপাড়া, পাথরঘাটা, দুবলার চর এবং ভোলার দক্ষিণ প্রান্তের উপকূলীয় এলাকায় অশনি’তে ভর করে একদিনেই প্রায় ২১০ মিলি মিটার সহ চলতি মাসের ১৯ দিনে প্রায় ২৮০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। মাসের শুরুতে অশনি’তে ভর করে বৃষ্টিপাত ঘূর্ণিঝড়টি দূর্বল হবার সাথে বিদায় নেয়। আর এর পরেই দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে মৃদু তাপ প্রবাহ শুরু হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে অস্থায়ী দমকা হাওয়া সহ বজ্র বৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সবার মাঝেই একই কামনা ‘আল্লাহ মেঘ দে পানি দেরে তুই, আল্লাহ মেঘ দে’। যদিও আসন্ন বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে মাঠে থাকা অবশিষ্ট বিপুল বোরো ধান ঘরে তোলার এখনই উপযুক্ত সময়, কিন্তু অত্যাধিক তাপ প্রবাহের কারনে মাঠে নামতে পারছেন না কৃষকগন। সাথে কৃষি শ্রমিকের সংকট পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর-ডিএই’র তরফ থেকে যত দ্রুত সম্ভব মাঠে থাকা পাকা বোরো ধন ঘরে তুলুতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কারণ আবহাওয়অ বিভাগের হিসেবে সাধারনত মে মাসের ২৯ তারিখ থেকে যেকোন সময়ই বর্ষা মাথায় করে মৌসুমী বায়ু দক্ষিণ উপকুলে পৌছে যাবার কথা।