3:05 pm , May 13, 2022

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ আমার উপর ভরসা রাখুন। আমি এখনি এই কাজটি করে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে দিচ্ছি। গ্রামের একটি সড়কের উন্নয়ন নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় একথা বলেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল অবঃ জাহিদ ফারুক শামীম এমপি। তিনি আরো বলেন, অনেকেই আসেন ব্যক্তিগত সাহায্য, চাকুরী ইত্যাদি বিষয় নিয়ে। যতটুকু পারি চেষ্টাও করি। কিন্তু খুব ভালো লাগে, আমি মন থেকে আনন্দ পাই যখন কেউ দশজনের সমস্যার সমাধান নিয়ে, রাস্তা, ব্রীজ, ফসলের নতুন কোনো চিন্তা নিয়ে আসেন। জাহিদ ফারুক আজকের পরিবর্তনের সাথে একান্ত সাক্ষাতকালে বলেন, এলাকার প্রয়োজনে, বরিশালের মানুষের প্রয়োজনে যখন কোনো সাংবাদিক কলম ধরেন কিংবা কেউ এসে বলেন, তখন আমার মনে হয় ওটা আমারই কাজ। তাই আমি সেই কাজটি আগে করার চেষ্টা করি। কথায়ই শুধু নয়, সাথে সাথে নিজের কাজ দিয়ে তা প্রমাণ করেই দেখিয়েছেন বরিশালের এই সাংসদ ও পানি প্রতিমন্ত্রী। তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন সদর উপজেলার চাঁদপুরা ইউনিয়নের তালুকদার হাট বাজারের ভিতর গুচ্ছ গ্রাম তৈরির কাজ। তালুকদার হাট স্কুল এন্ড কলেজ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন এবং একই এলাকায় বাদশা বাড়ি সড়কের বাকী অংশ নির্মাণেরও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। আর এ কাজে তাকে সবসময় সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে বরিশালবাসীর কাছে দায়িত্বশীল জনপ্রতিনিধি হিসেবে ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করছেন জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার। বরিশালের মানুষের কাছে আরেক আস্থার নাম তিনি। ইতিপূর্বেই জেলা প্রশাসক থেকে শুনে ও প্রতিবেদন পড়ে বরিশালের আলোচিত পূর্ব কর্ণকাঠী থেকে চরকরঞ্জী হাইস্কুল সড়ক নির্মাণ ও একই সড়কে দুটি ব্রীজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তিনি। যেকোনো মূহুর্তে প্রকৌশলী নিয়ে ঐ এলাকায় ঘুরে আসার কথা জানান একান্ত আলাপে। আর এ কাজগুলো করতে যেয়ে তাকেও সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে নিজ দলের লোকের কাছেও। কেননা পূর্ব কর্ণকাঠী থেকে চরকরঞ্জী এলাকাটি বরিশালে বিএনপির ঘাঁটি এলাকা হিসেবে পরিচিত এবং ওখানকার চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ছবি গত দশ বছরে কখনোই ঐ এলাকায় যাননি। যদিও এবার সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার ভয়ে ঐ এলাকায় যান ও ব্রীজ করার প্রতিশ্রুতিও দেন। কিন্তু ঐ এলাকা থেকে তিনি ভোট না পেয়ে পুনরায় হতাশ হয়ে কোনো প্রতিশ্রুতি আর রক্ষা করবেন না বলে নিজেই স্বীকার করেন। এমন অবস্থায় সাংসদ জাহিদ ফারুক ঐ এলাকার জন্য কাজ করে তোপের মুখে পড়বেন এটাই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। এছাড়াও চরকাউয়া ও চরবাড়িয়া এলাকায় বেরীবাধ দুটো ঘুরে দেখেছেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী। চমৎকার পর্যটন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ঐ বাঁধ দুটো ঘিরে। সরেজমিনে ১৩ মে শুক্রবার চরকাউয়া ও চরবাড়িয়া বেরীবাঁধ এর ৫৩০০ মিটার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চমৎকার ব্লক করে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে এখানে। চরকাউয়া অংশের কাজ সম্পন্ন হলেও চরবাড়িয়া অংশে এখনো কিছু কাজ বাকী। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা দীপক দাশ জানালেন, চরবাড়িয়া অংশে নদী তীরবর্তী ৬০০ মিটার কাজ এখনো চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, চরবাড়িয়া ও চরকাউয়া এলাকায় মোট নদী তীর সংরক্ষণ কাজ ৫৬৮৭ মিটার। সম্পন্ন কাজের মোট দৈর্ঘ্য ৫৩০০ মিটার। কিন্তু এরই মধ্যে চরবাড়িয়া অংশের বাঁধ এলাকায় পসরা খুলে বসেছেন এলাকাবাসী। চটপটি, হাওয়াই মিঠা, চা-পুরি ছাড়াও রয়েছে কাচের চুরি, আলতাসহ বিভিন্ন মাটির আসবাব বিক্রির দোকান। দূর দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা তাদের। একইচিত্র বিকালে চরকাউয়া অংশের বেরী বাঁধ এলাকায়। এখানে চরকাউয়া ১ নং ওয়ার্ডের নদী তীরবর্তী বাসিন্দা মমতাজ বেগম বলেন, আমরাতো আতঙ্কে রাতে ঘুমাতাম না। নদী ভাঙনের ভয়ে কেউ একজন জেগে রাতে পাহারা দিতে হতো। আল্লাহ দয়া করেছেন। এই বাঁধ নির্মাণ হওয়ার পর শান্তিতে ঘুমাতে পারি এখন। সরকারের কাছে তাই আমাগো কৃতজ্ঞতা অনেক। পাশের ঘর থেকে বের হয়ে এসে এক বৃদ্ধ আসগর আলী মাতুব্বর বললেন, এতোদিনে আল্লাহ আমাগো একজন ভালো এমপি দিছেন। শেরেবাংলা ফজলুল হকের পর আমাগো কথা কেউই ভাবে নাই। এই প্রথম জাহিদ ফারুক এমপি ভাবছে। আল্লাহ হেরে বাঁচাইয়া রাখুন। তার নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক থাকলেও সাংসদ জাহিদ ফারুক শামীম এর কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই বরিশালবাসী তথা বাংলাদেশের মানুষের কাছে। কেননা পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে তিনিই একমাত্র সাংসদ যিনি সারা বাংলাদেশ ঘুরে বেড়াবার পাশাপাশি নির্দিষ্ট দিনে ঠিক হাজির থাকেন নিজ এলাকার মানুষের কাছে। জাহিদ ফারুক বলেন, সপ্তাহে দুটোদিন আমি আমার এলাকার মানুষের কথা শুনতে ছুটে আসতে প্রস্তুত থাকি। বৃহস্পতিবার রাতে আসি এবং শনিবার রাতে চলে যাই। কখনো কখনো আগেই চলে যেতে হয় কাজের প্রয়োজনে। তবে আমার ফোন সার্বক্ষণিক খোলা থাকে। এলাকায় আমার লোক থাকে। আমি চেষ্টা করি সততার সাথে আমার দায়িত্ব পালন করতে। ঠিক তার এই কথারই প্রশংসা করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারও। বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমি বরিশাল ৫ আসনের সাংসদ জাহিদ ফারুককেই পেলাম। যে নিজের বুকে হাত রেখে দাবী করলেন আমি সৎ। আর সাংসদ জাহিদ ফারুক বলেন, আমার কাজই তার প্রমাণ দেবে। আমি আমার দায়িত্ব সততার সাথে পালন করার চেষ্টা করছি। এলাকাবাসীর প্রতি অনুরোধ, আপনারাও আপনার নিজ নিজ দায়িত্ব সততার সাথে পালন করুন। আমরা সবাই মিলে একটি সুন্দর বরিশাল গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।