দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি কমায় কৃষকের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি কমায় কৃষকের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে - ajkerparibartan.com
দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি কমায় কৃষকের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে

3:26 pm , May 10, 2022

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ ঘূর্ণিঝড় ‘অশণি’ ভারতের উড়িশ্যা উপকুলে এগিয়ে আসার সাথে ক্রমশ শক্তি হারাচ্ছে। ফলে দক্ষিনাঞ্চল সহ সংলগ্ন উপকুলভাগে মঙ্গলবার শেষ রাত থেকে আবহাওয়া পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করায় কৃষকদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরতেও শুরু করেছে। তবে আবহাওয়া বিভাগ থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত বরিশাল বিভাগ সহ উপকুলীয় এলাকায় মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষনের সম্ভাবনার কথা জানিয়ে আরো ৩দিন বজ্র সহ বৃষ্টির প্রবনতা অব্যাহত থাকার কথা বলা হয়েছে। আহাওয়া বিভাগ বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের ওপর দিয়ে ৬০Ñ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবার আশংকায় সব নদী বন্দরগুলোকে ২ নং নৌ হুশিয়ারী সংকেতের আওতায় এনেছে। ফলে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলেই অনধিক ৬৫ ফুট দৈর্ঘ্যরে যাত্রীবাহী সব নৌযানের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পায়রা সমুদ্র বন্দরকেও ২ নং দুরবর্তী হুশিঁয়ারী সংকেতের আওতায় রাখা হয়েছে। সাগর মাঝারী উত্তাল রয়েছে। কুয়াকাটা ও হরিনঘাটা সহ উপকুল এলাকায় ৫-৭ ফুট উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়ছে। গত দুদিনের হালকা থেকে মাঝারী বৃষ্টিপাতে দক্ষিণাঞ্চলের মাঠে থাকা আড়াই লক্ষাধিক হেক্টর জমির আধা পাকা ও পাকা বোরো ধান নিয়ে কৃষকগন যথেষ্ট দু.শ্চিন্তায় রয়েছেন। এমনকি মঙ্গলবার সকাল ৯টার পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় দেশের সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়, ২০৭ মিলিমিটার। এসময়ে পটুয়াখালীতে ৪৯, ভোলাতে ৩৫, গোপালগঞ্জে ২৯, বরিশালে ১০ এবং মাদারীপুরে ১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। অথচ এসব এলাকার হাজার হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান এখনো মাঠে। তবে মঙ্গলবার দিনভরই দক্ষিণাঞ্চল সহ উপকুলভাগে বৃষ্টিপাত ছিল আগের দিনের অনেকটাই কম। তবে ঘূর্ণিঝড় ‘অশণি’ ক্রমশ দূর্বল হতে শুরু করায় বরিশাল কৃষি অঞ্চলের ১০ লক্ষাধিক কৃষক কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে পাচ্ছেন। রোববার শেষ রাত থেকে সোমবার দিনভর বৃষ্টিপাত রাতের শেষ প্রহর পর্যন্ত গড়ায়। গত বছরও মে মাসেরই ২০ তারিখের পরে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নি¤œচাপ ‘ইয়াশ’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে ২৭ মে ভারতের অন্ধ্র ও উড়িশ্যা উপকুলে আঘাত হানলেও তার প্রভাবে দক্ষিনাঞ্চলের শত কোটি টাকার ফসলহানীর সাথে বিভিন্ন ঘের ও বদ্ধ জলাশয়ের ১শ কোটি টাকার মাছ ভেসে যায়। ঐ ঝড়ের প্রভাবে জলোচ্ছাসে উপকুলের বিপুুল নদী তীর রক্ষা বাঁধ সহ উপকুলীয় বেড়ীবাঁধের ক্ষতিও ছিল প্রায় দেড়শ কোটি টাকা। ইয়াশ-এ ভর করে প্রবল বর্ষনে উঠতি বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার নুতন আশায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী জমিতে আবাদ করেছেন দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকগন। কিন্তু এবারো আরেক ঘূর্ণিঝড় ‘অশণি’র প্রভাবে সে ধান ঘরে তোলা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মুখে গত দুদিন এ অঞ্চলের অনেক আধা পাকা ধানও কেটে ফেলেছেন কৃষকগন। সদ্য সমাপ্ত রবি মৌসুমে বরিশাল ও ফরিদপুর সহ দক্ষিণাঞ্চলের ১১ জেলায় ৩ লাখ ৩৭ হাজার ১৮৫ হেক্টরে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৬৫০ হেক্টরে বোরো আবাদ সম্পন্ন হলেও রোববার পর্যন্ত মাত্র ৩০% জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়। যদিও গত দুদিনে আরো ১% জমির ধান কর্তন হয়েছে বলে মনে করছে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর। বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় লক্ষ্যমাত্রার ১১৩ ভাগ এবং বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫ জেলায় ১০২% জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে এবার। ফলে এবার দক্ষিণাঞ্চলে বোরো ধান থেকে ১৫ লাখ ২২ হাজার ৫২০ টন চাল পাবার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদন ১৬ লাখ টনে উন্নীত হবার সম্ভাবনা থাকলেও, ‘অশণি’র চোখ রাঙানীতে শংকিত দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি যোদ্ধাগন। এদিকে ঘূর্ণিঝড় অশণি দূর্বল হবার সম্ভবনা প্রবল হলেও উপকুল যুড়ে রেড ক্রিসেন্টের ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী-সিপিপি’র ৭০১টি ইউনিটের প্রায় ৭৫ হাজার স্বেচ্ছা সেবককে সার্বক্ষনিকভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপকুলের ১৩ জেলার ৪১টি উপজেলার বিশাল এলাকায় যেকোন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে ঝুকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে স্বল্পতম সময়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে তারা কাজ করবেন। তবে ৪ নং বিপদ সংকেত ঘোষিত না হওয়ায় এবার উপকুলে কোন ধরনের বিপদ সংকেতের পতাকা উত্তোলন বা মাইক-মেগাফোন থেকে সতর্কবার্তা প্রচার করা হয়নি। উপকুলের কয়েক হাজার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রও প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে বরিশালের বিভাগীয় প্রশাসন সহ বিভিন্ন জেলা প্রশাসন জানিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT