লক্ষাধিক লোকের বরিশাল ত্যাগ ফেরি ঘাটে অপেক্ষমান ১২শ যানবাহন লক্ষাধিক লোকের বরিশাল ত্যাগ ফেরি ঘাটে অপেক্ষমান ১২শ যানবাহন - ajkerparibartan.com
লক্ষাধিক লোকের বরিশাল ত্যাগ ফেরি ঘাটে অপেক্ষমান ১২শ যানবাহন

3:07 pm , May 7, 2022

ঈদ পরবর্তী কর্মস্থলমুখী জনস্রোতে ঠাসা দক্ষিণাঞ্চলের নৌ টার্মিনাল

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ করোনা মহামারী সংকটের দুবছর পরে নিকটজনের সাথে ঈদ করতে এবার দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ অনেকটা স্বস্তিতে ঘরে ফিরেছিল। তবে এখন কর্মস্থলমুখি জন¯্রােতের চাপে বরিশাল নৌ বন্দর সহ ফেরি ঘাটগুলো বিপর্যস্তকর অবস্থায়। দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিনÑপশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সাথে রাজধানী সহ পদ্মার পূর্ব তীরের জেলা সমুহের সড়ক যোগাযোগ রক্ষাকারী ফেরি সেক্টরগুলোতে ২৪ ঘন্টায় রেকর্ড সংখ্যক ২১ হাজার ২৭৬টি যানবাহন পারপারের পরেও শনিবার সকালে সাড়ে ১২শরও বেশী অপেক্ষমান ছিল। ঈদের ছুটি শেষে শুক্রবার থেকেই ঢাকা এবং চাঁদপুর হয়ে কুমিল্লা, সিলেট ও চট্টগ্রামমুখি যাত্রীদের ভীড়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্ত্বম বরিশাল নদী বন্দরে তিল ধরার ঠাই নেই। শুক্র ও শণিবার প্রায় ২০টি করে নৌযানে প্রায় দুলাখ মানুষ বরিশাল বন্দর ত্যাগ করে। পটুয়াখালী ও ভোলা নদী বন্দর সহ দক্ষিনাঞ্চলের আরো ৩০টি স্টেশন থেকেও আরো অর্ধ শতাধিক নৌযান ঢাকা ও চাঁদপুরের লক্ষাধিক যাত্রী পরিবহনের পরে শণিবারেও একই অবস্থা অব্যাহত ছিল। শণিবারেও বরিশাল বন্দর থেকে দুটি ক্যাটামেরন সহ প্রায় ২০টি নৌযানে আরো প্রায় ১ লাখ যাত্রী ঢাকা এবং চাঁদপুর হয়ে সন্নিহিত বিভিন্ন এলাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেছে। জন¤্রােতের চাপে ধারন ক্ষমতার দ্বিগুনেরও বেশী যাত্রী নিয়ে নৌযানগুলো বন্দর ত্যাগ করলেও বিআইডব্লিউটি এবং প্রশাসনের কিছু করার ছিলনা। একটি কেবিনের টিকেটের জন্য গত পনের দিন ধরে মানুষ লঞ্চের এক অফিস থেকে আরেক অফিসে ধর্ণা দিলেও স্বাভাবিক সময়ের বেশী দামেও তা মিলছে না। তবে কর্মস্থলমুখি এ জনস্রোত সামাল দিতেও রাষ্ট্রীয় নৌ বানিজ্য প্রতিষ্ঠান-বিআইডব্লিউটিসি’র তেমন কোন তৎপড়তা নেই। শুধুমাত্র ঈদের পরের ৩দিন বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ থেকে বরিশাল-চাঁদপুর হয়ে ঢাকামুখি ৩দিন ১টি করে স্টিমার সার্ভিস পরিচালনের পরে সব দায়িত্ব শেষ করেছে সংস্থাটি। এদিকে ঈদের আগের দুদিনের মত পরের দুদিনও এবার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলমুখি দেশের প্রধান ফেরি সেক্টরগুলোতে গাড়ীর জন্য ঘাটে ঘাটে ফেরি অপেক্ষা করলেও শুক্রবার দুপুরের আগে থেকেই পদ্মার পশ্চিম তীরে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। ফলে শণিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশের প্রধান ফেরি সেক্টরগুলোতে এযাবতকালের সর্বাধীক ২১ হাজার ২৭৬টি যানবাহন পারাপারের পরেও অপেক্ষমান ছিল ১ হাজার ২৬৭টি। এরমধ্যে পাটুরিয়া সেক্টরে ২৪টি ফেরির সাহায্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক, ১৩ হাজার ৭৮৩টি যানবাহন পারাপারের পরে অপেক্ষমান ছিল মাত্র ৩শটি গাড়ী। রাজধানীর সাথে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চরের ২১টি জেলার সংক্ষিপ্ত সড়ক পথের মাওয়া সেক্টরেও ১০টি ফেরির সাহায্যে ২৪ ঘন্টায় ৫ সহশ্রাধীক যানবাহন পারাপারের পরে অপক্ষেমান ছিল ৬শ। অপরদিকে চট্টগ্রাম,কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের সংক্ষিপ্ত সড়কপথের চাঁদপুর-শরিয়তপুর সেক্টরে ১টি কে-টাইপ ফেরি বিকল থাকার পরেও ৬টি ফেরির সাহায্যে ২৪ ঘন্টায় প্রায় সাড়ে ১৩শ যানবাহন পারাপার হয়েছে। অপক্ষেমান ছিল ২শ। উপকূলীয় ৩টি বিভাগ, চট্টগ্রামÑবরিশালÑখুলনা মহাসড়কের ভোলা ও লক্ষ্মীপুরের মধ্যবর্তি ফেরি সেক্টরেও ৪টি মধ্যে ১টি ফেরি বিকল। ফলে ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ উপমহাদেশের সর্বাধীক দৈর্ঘের এ সেক্টরে ২৪ ঘন্টায় ৫১৭টি যানবাহন পারাপারের পরেও ৭৭টি অপেক্ষমান ছিল। একই মহাসড়কের ভোলা ও বরিশালের মধ্যবর্তি লাহারহাটÑভেদুরিয়া সেক্টরেও এসময়ে সোয়া ৫শ যানবাহন পারাপার হলেও অপেক্ষমান ছিল ৯০টি। বিআইডব্লিউটিসি ২৬ এপ্রিল থেকে গত ১২ দিনে বহরের ৫৪টি মধ্যে ৪৯টি ফেরির সাহায্যে দেশের প্রধান ফেরি সেক্টরগুলোতে প্রায় পৌনে ২ লাখ যানবাহন পারাপার করেছে বলে জানা গেছে। এসময়ে উর্ধে ২ হাজার থেকে সোমবার সকালে সর্বনি¤œ ৫৬২টি যানবাহন অপক্ষেমান থাকলেও শুক্রবার দুপরের পর থেকে ঘাটগুলোতে যানবাহনই চাপ বাড়ছে।পদ্মা সেতু চালুর পূর্বের সম্ভবত শেষ ঈদের ভীড় সামাল দিতে বিআইডব্লিউটিসি’র কারিগড়ি, বানিজ্য ও মেরিন বিভাগের কর্মকর্তাÑকর্মচারীগন এবার যুদ্ধকালীন তৎপড়তায় সর্বকালের রেকর্ড সংখ্যক যানবাহন পারাপারে পরিস্থিতি অনেকটাই সমাল দেয়া সম্ভব হয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় নৌযান মজুত থাকার পরেও যাত্রী পরিবহনে সংস্থার বানিজ্য পরিদপ্তরের সীমাহীন উদাশীনতাকে ‘রহস্যজনক’ মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহল। বিষয়টি নিয়ে সংস্থার পরিচালকÑবানিজ্য-এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি প্যাডেল জাহাজগুলো পুরনো এবং স্ক্রু-হুইল নতুন নৌযানে বিপুল পরিচালন ব্যায়ের কথা তুলে ধরে লোকশানের বিষয়টি জানান। তবে সরকারী-বেসরকারী প্রতিটি ফ্লাইটই স্বাভাবিক সময়ের তিনগুন ভাড়াও ঈদের আগে এবং পড়ে ফুল লোড নিয়ে ঢাকাÑবরিশালÑঢাকা আকাশপথে যাত্রী পরিবহন করছে। এমনকি বিমান ও নভো এয়ারের বিশেষ ফ্লাইটে দ্বিগুনেরও বেশী ভাড়ায়ও টিকেট মিলছে না।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT