উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানার বিরুদ্ধে দুই মামলার সুপারিশ দুদক’র উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানার বিরুদ্ধে দুই মামলার সুপারিশ দুদক’র - ajkerparibartan.com
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানার বিরুদ্ধে দুই মামলার সুপারিশ দুদক’র

2:59 pm , January 6, 2022

 

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সরকারি বিধি নিষেধ তোয়াক্কা না করে গত এক যুগ ধরে দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারি ভাতা উত্তোলন করে আসছেন বরিশাল সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা বেগম। বর্তমানে তিনি তৃতীয়বারের মত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। চেয়ারম্যানের পূর্ব থেকে তিনি বরিশাল সদর উপজেলার কাগাশুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের সহকারি শিক্ষক পদে কর্মরত। ওই পদ আজ পর্যন্ত ধরে রেখে কোন ধরনের ক্লাস না নিয়ে সেখান থেকেও সরকারি ভাতা উত্তোলন করছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলেও বহালতবিয়তে রয়েছেন রেহানা বেগম। তবে এবারে বিষয়টি ভিন্ন। প্রথমবারের মত দুর্নীতি দমন কমিশন রেহানার বিরুদ্ধে পৃথক দু’টি মামলা দায়েরের কেন্দ্রীয় অফিসে সুপারিশ পাঠিয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, রেহানা বেগম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে ২০০৮ সালের ১৭ নভেম্বর কাগাশুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদ থেকে এক বছরের জন্য ছুটি নেন। ২০০৯ সালের নির্বাচনে ভাইস চেয়ানম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮ সালের ২০ নভেম্বর থেকে ২০১১ সালের ২৭ জুলাই পর্যন্ত দুই বছর বিনা বেতনে ছুটি মঞ্জুর করানোর পরও ওই দুই বছর বিদ্যালয় থেকে ২ লাখ ১৪ হাজার ৫৯৬ টাকা বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন। ভাইস চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় ২০১১ সালের ২৮ জুলাই বিদ্যালয়ে যোগদান করে আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের উপজেলা নির্বাচনেও ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। একই সঙ্গে রেহানা বিদ্যালয়ের বেতন-ভাতা থেকে শুরু করে উপজেলা পরিষদের সম্মানী ভোগ করে আসছেন। জনস্বার্থে এক ব্যক্তি বিষয়টি লিখিতভাবে বরিশাল দুদক কার্যালয়কে অবহিত করেন। এরপর দুদক তা গ্রহন করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে পাঠায় সেখান থেকে তদন্ত করে দেখার বিষয়টি মঞ্জুর হয়। এরপর তদন্তে নামেন বরিশাল দুদক এর কর্মকর্তারা। দুদক তদন্তে জানতে পারে ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা বেগম বিদ্যালয় থেকে বেতন-ভাতা বাবদ ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ১৭৩ টাকা এবং ২০১১-২০১৯ সাল পর্যন্ত উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে সম্মানী হিসাবে ১৯ লাখ ২০ হাজার ৪৬৮ টাকা উত্তোলন করেন। সম্প্রতি বরিশাল দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল লতিফ হাওলাদার বরিশাল সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানার বিরুদ্ধে ওই তদন্ত প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে প্রেরন করেন। শিক্ষক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দু’টি সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অনৈতিকভাবে বেতন-ভাতা ভোগ করায় তার বিরুদ্ধে দুটি মামলার সুপারিশ করা হয়। এ ব্যাপারে বরিশাল সদর উপজেলা কার্যালয়ে যোগদানকারী ইউএনও মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, আমার জানা মতে গত এক বছর ধরে উপজেলা থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন না উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা বেগম। বরিশাল সদর উপজেলার পূর্বের ইউএনও মুনিবুর রহমান এ বিষয়ে রেহানা বেগমকে কারন দর্শানোর নোটিশ দেন। কিন্তু রেহানা বেগম কারন দর্শানোর কোন জবাব দেননি। ইউএনও মনিরুজ্জামান আরো বলেন, সবশেষ গত ২৯ ডিসেম্বর উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় আমিও সম্মানী না নেওয়ার কারণ জানতে চাই। ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা বেগম জানান তিনি আর সম্মানী নেবেন না। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এক মাসের সময় দিয়ে আবারো কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা বেগমের ব্যবহৃত মোবাইলে কল দেয়া হলে রিসিভ করেন। কিন্তু দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতনভাতা উত্তোলনে দুদক’র মামলার সুপারিশের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ব্যস্ততার কথা বলে সংযোগটি কেটে দেন। ২০০৯ সালে ভাইস চেয়ারমান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন-ভাতা নিচ্ছিলেন রেহানা বেগম। তার বিরুদ্ধে দুদক তৎপর হওয়ার পর গত এক বছর আগে থেকে উপজেলা পরিষদের সম্মানী নেওয়া বন্ধ করেন। বেতনভাতা উত্তোলন না করার জন্য দু’বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন তৎকালীণ সদর ইউএনও মুনিবুর রহমান। কিন্তু কোনো জবাব দেননি রেহানা বেগম।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT