2:57 pm , December 31, 2021

শহিদুল ইসলাম জামাল, চরফ্যাসন ॥ জনদস্যুদের কবলে পরে সর্বস্ব হারিয়ে ভারতীয় জেলেদের সহযোগিতায় প্রাণে বেঁচে আছেন সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া চরফ্যাশনের ২০ জেলে। গত ৫ দিন পূর্বে ভারতে উড়িষার পারাদীপ সামুুদ্রিক থানা পুলিশের হেফাজতে আটক থাকলেও আইনী জটিলতার কারণে দেশে ফিরতে পারছেন না অসহায় জেলেরা। বিদেশের জেলখানায় আটক জেলেদের নিয়ে চরফ্যাশনের জেলে পরিবারগুলোতে হাহাকার থাকলেও স্বজনদের ফিরিয়ে আনার উপায় দেখছেন না দরিদ্র পরিবারগুলো। অসহায় পরিবারগুলো জেলেদের ফিরে পেতে পররাষ্টমন্ত্রীর দ্রুত হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। ভারতের উড়িষা পারাদীপ সামুদ্রিক পুলিশের হেফাজতে আটক আল্লাহর দান মাছধরা ট্রলারের প্রধান মাঝি নুরুল ইসলামের ছেলে মনির হোসেন জানান, আল্লাহরদান মাছধরা ট্রলার নিয়ে ৬ ডিসেম্বর চরফ্যাসনের বেতুয়াঘাট থেকে সাগরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় আল্লাহর দান ট্রলারটি। ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়ার ২দিনপর ট্রলারের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। গত ২০ ডিসেম্বর একটি টেলিটক নাম্বার থেকে জলদস্যু দলের লোক দাবী করে অজ্ঞাত ব্যক্তি বেতুয়াঘাটের আড়তমালিক কাশেম মিলিটারীকে ২০ জেলেসহ ট্রলারটি জিম্মি করা হয়েছে বলে জানান এবং জেলেসহ ট্রলারের মুক্তির জন্য দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। আড়ৎমালিক কাশেম মিলিটারী জলদস্যুদের দাবী অনুযায়ী রকেট সার্ভিসের মাধ্যমে জলদস্যুদের ৭০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। কিন্ত বাকী টাকা নিয়ে দেনদরবার করায় ক্ষুদ্ধ জলদস্যুরা জিম্মি জেলেদের ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল করে ট্রলারসহ ২০ জেলেকে সাগরের গভীর ¯্রােতে ছেড়ে দেয় ছেড়ে দেয়ার আগে জেলেদের সব ফোন এবং ট্রলারের জ্বালানী ও খাবারগুলো নিয়ে যায়। এক সপ্তাহ অথৈ সাগরে না খেয়ে ভাসতে ভাসতে ট্রলারটি ভারতের উড়িষার পারাদীপ সামুুদ্রিক থানা এলাকায় গেলে স্থানীয় (ভারতীয়) জেলেরা ২৭ ডিসেম্বর ট্র্রলারসহ ভাসমান বাংলাদেশী ২০ জেলেকে উদ্ধার করে নিকটতম পারাদীপ সামুদ্্িরক থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। বহিরাগত ২০ জেলে উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে ভারতের একটি হিন্দি টিবি চ্যানেলে খবর প্রকাশের পর নিখোঁজ ২০ জেলের বেঁচে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন পরিবারগুলো। ইতিমধ্যে কোষ্টগার্ডের মংলা স্টেশন থেকে চরফ্যাসনের মানিকা কোর্ডগার্ড স্টেশনের মাধ্যমে ভারতে নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারের বিষয়টি পরিবারগুলোকে নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্ত প্রতিবেশী দেশের পুলিশ হেফাজত থেকে কি ভাবে স্বজনদের ফিরিয়ে আনা যায় এ নিয়ে জেলে পরিবারগুলোর মধ্যে চরম অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। ভারতে আটক প্রধান মাঝি নুরুল ইসলামের ছেলে মনির হোসেন বলেছেন, ভারতে আটক বাবা নুরুল ইসলাম আমার সাথে ফোনে কথা বলেছেন। কিন্ত কি ভাবে বাবাসহ আটক ২০জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা যায় তা আমাদের জানানেই। আমরা এ বিষয়ে বাংলাদেশের ভারতীয় হাইকমিশনে আবেদন করেছি। এবিষয়ে আমরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের সর্বোচ্চ মহলের দ্রুত হস্তক্ষেপ এবং কার্যকর সহযোগিতা চাই।
ভারতে আটক ২০ জেলের মধ্যে চরফ্যাসনের খোদেজাবাগ গ্রামের মিরাজ, মোতাছিন মাঝি ও মো.বশার, চর কচ্ছপিয়া গ্রামের সোহেল, রিপন, বেল্লাল, সবুজ ও জামাল, দক্ষিণ ফ্যাসন গ্রামের নুর ইসলাম, মোতাছিন, আবু জাহের, ছলেমান, হানিফ ও ছালাউদ্দিন, চর মানিকা গ্রামের দেলোয়ার ও ছালাউদ্দিন, ওমরপুর গ্রামের মোস্তাফিজ এবং আলীগাও গ্রামের হারুন এবং জিন্নাগড় গ্রামের নুরুল ইসলাম মাঝির নাম জানাগেছে ।