2:49 pm , December 15, 2021
আগৈলঝাড়া প্রতিবেদক ॥ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিব বর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার সদস্যদের জন্য ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৪ হাজার ৫শ ৮৪ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ১২টি “বীর নিবাস” ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার পশ্চিম সুজনকাঠী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত ক্ষিতিশ চন্দ্র সরকারের নামে বরাদ্দকৃত ‘বীর নিবাস’ ভবন নির্মাণ কাজের মধ্য দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্বোধন করা হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডার ও ‘বীর নিবাস’ বাস্তবায়ন প্রকল্পর সভাপতি মো. আবুল হাশেম, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন সদস্য সচিব মো. মোশারফ হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সুনীল কুমার বাড়ৈ, সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মো. লিটন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবু তাহের মিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার, গৈলা ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল হোসেন টিটুসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায় অফিসার মো. মোশারফ হোসেন জানান, পাকা ১ তলা প্রতিটি বাড়ি হবে ৬৩৫ স্কয়ার ফিটের। এর মধ্যে ২টি প্রধান কক্ষ টাইলসসহ (বেড রুম), ১টি অতিথি কক্ষ (ড্রয়িং রুম), ১টি খাবার কক্ষ (ডাইনিং-রুম), ১টি রান্না ঘর ও ২টি বাথরুম থাকবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হাশেম জানান, ইতোমধ্যেই “বীর নিবাস” নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বান শেষে ঠিকাদাকে ১২টি “বীর নিবাস” নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের নিজস্ব জমিতে প্রতিটি “বীর নিবাস” নির্মাণ কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩শ ৮২ টাকা।
উপজেলার পাঁচটি ইউয়িনে জরাজীর্ণ টিনের ঘরে বসবাস করা “বীর নিবাস” প্রাপ্ত অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সেরাল গ্রাম নিবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আমবৌলা গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী মিয়া, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মাগুড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ তাহের, পশ্চিম সুজকাঠী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত ক্ষিতিশ চন্দ্র সরকার, বারপাইকা গ্রামের এসএম রফিকুল ইসলাম, খাজুরিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. শেহাব উদ্দিন, পয়সা গ্রামের মো. লিয়াকত বক্তিয়ার, পশ্চিম গোয়াইল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আ. ছাত্তার, বাকাল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত সুলতান হোসেন তালুকদার ও টেমার গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহম্মদ খান। এসকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জমির পরিমান ৭ থেকে ২৪ শতক।
মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিধবা স্ত্রী ও সন্তানদের বিধবা স্ত্রী ও সন্তানদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য মুজিব বর্ষ এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে সারা দেশে “বীর নিবাস” নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
প্রায় ৪ হাজার ১২২ কোটি ৯৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩০ হাজার ‘অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে আবাসনের ব্যবস্থা’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। গত ১৬মার্চ একনেক সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাড়ি সংস্কার, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় বরাদ্দ প্রাপ্ত সুবিধাভোগীরা নিজ খরচে বহন করার কথা রয়েছে।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে প্রকল্পর কাজ শুরু হয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যে বাড়ি নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে ব্যয় হবে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩শ ৮২টাকা।