3:07 pm , October 10, 2021
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আজ মহাষষ্ঠীতে ঘোটকে চরে আগমন করবেন দেবী দূর্গা। শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বিদের সর্ববৃহত উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা। সকাল ৬ টা ৫৩ মিনিটে দেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ এবং ষষ্ঠীবিহিত পূজার মাধ্যমে শুরু হবে ৫ দিনের এই উৎসব। বরিশালে সকল মন্দীরে প্রতিমা নির্মানের পর গতকাল শেষ সময়ে চলেছে রং তুলির আচরে চুরান্ত অলংকরনের কাজ। জেলার এবারের মোট ৬৩৩ মন্ডপের সবগুলোতেই প্রতিমা নির্মান শেষ হয়েছে। সম্পন্ন হয়েছে দেবীকে বরনের সকল ধরনের প্রস্ততি। করোনার সংক্রমনের কারনে এবারেও স্বাস্থবিধী মেনে সিমীত পরিসরে উৎসব পালিত হবে। প্রতিবছর আশ্বিন এলে শুরু হয়ে যায়, সনাতনি সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দুর্গা পূজার প্রস্তুতি। এবারেও ২৪ আশ্বিন (১১ অক্টোবর) শুরু হয়ে পূজা সমাপ্ত হবে ২৮ আশ্বিন (১৫ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন এর মাধ্যমে। এদিনে দেবী দোলায় চরে ভক্তদের ছেড়ে গমন করবেন। গতকাল প্রস্ততির শেষ দিনে নগরীর বিভিন্ন মন্ডপে ঘুরে দেখা গেছে মৃত শিল্পি বা পালদের চুরান্ত ব্যাস্ততার চিত্র। ১৫/২০ দিন আগ থেকে তারা প্রতিমা নির্মানের কাজ শুরু করে শেষ করেছেন ২/৩ দিন আগেই। রং তুলির আচরে দেবীকে সাজানোর পর গতকাল প্রায় সকলকেই দেখা গেছে দেবীকে নিখুত রুপ দিতে চুরান্ত তুলির আচর ছোয়াতে। কালীবাড়ি রোড মন্দীরের পাল ফরিদপুরের সুরেন এর সাথে আলাপে জানায়, দেবী মাকে তৈরির পেশা তার পূর্বপুরুষের। এ পেষায় জরিয়ে আছে আবেগ ও ভালবাসা। নিজের মাকে নিজের হাতে সাজোনোর চাইতে আনন্দ আর কিছু হতে পারেনা জানান এই শিল্পি। তারা ২০ দিন আগ থেকে প্রতিমা নির্মান শুরু করেছেন। শেষ হয়েছে কয়েক দিন আগেই। এখন চলছে সাজানোর কাজ। মহাষষ্ঠীর মাধমে আজ থেকে শুরু হবে পূজা অর্চনা। তিনি জানান, এখন সকল মন্দিরেই এই কাজই হচ্ছে। এছাড়া এখন সকল মন্দিরে প্রতিমা কমিটির কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। পূজা উদ্যাপন পরিষদের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মানিক মুর্খাজি বলেন, আজ থেকে শুরু হচ্ছে দূর্গা পূজা। বেশিরভাগ মন্দিরেই পালরা প্রতিমা কমিটির কাছে বুঝিয়ে দিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রতিটি মন্ডপে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে কমিটির প্রধানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে এবারের শারদীয় উৎসবকে বর্ণিলভাবে উদ্যাপন করা হবে। এ বছর দুর্গা মায়ের কাছে বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করা হবে বলে জানান তিনি। বরিশাল মহানগর পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল দাস বলেন, নগরীতে এ বছর নতুন দুটিসহ মোট ৪৪টি ম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। যার মধ্যে ৩৮টি সার্বজনীন ও ছয়টি ব্যক্তিগত। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পূজাকে ঘিরে এরই মধ্যে নেওয়া হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি। বরিশাল জেলায় মোট পূজা মন্ডপের সংখ্যা ৬৩৩ টি। এর মধ্যে বাকেরগঞ্জ উপজেলা ৭১ টি, গৌরনদী উপজেলায় ৮৫ টি, মুলাদী উপজেলায় ১১ টি, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় ২৪ টি, হিজলা উপজেলা ১৫ টি, আগৈলঝাড়া উপজেলায় ১৫৯ টি, বাবুগঞ্জ উপজেলায় ২৫ টি, বরিশাল সদর উপজেলায় ২৪ টি, বরিশাল মহানগর ৪৪ টি, বানারীপাড়া উপজেলায় ৫৯ টি ও উজিরপুর উপজেলায় ১১৬ টি পূজা মন্ডপ রয়েছে। জেলা প্রশাসক বলেন, পূজা নির্বিঘœ করতে নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। থাকছে পর্যাপ্ত মোবাইল কোর্ট টিম। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটা পূজা মন্ডপে টি শার্ট দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। পঞ্জিকা মতে, আগামী ৬ অক্টোবর মহালয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে মর্তলোকে দেবীর আগমনী বার্তা বেজে উঠেছে। ১১ অক্টোবর (সোমবার) ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে দেবীর দুর্গার নবপত্র কল্পারম্ভ। ওইদিন ম-পে ম-পে বেজে উঠবে ঢাকঢোল আর কাঁসরের বাজনার শব্দ। ১২ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ১৩ অক্টোবর দেবীর মহাষ্টমী, ১৪ অক্টোবর মহানবমী ও ১৫ অক্টোবর দশমী বিহিত পূজা বিহীত সমাপনান্তে দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হবে দশমী। দেবী দূর্গা এবার দোলায় চরে গমন করবেন।