করোনার প্রভাবে বেকায়দায় মৃৎ শিল্পীরা করোনার প্রভাবে বেকায়দায় মৃৎ শিল্পীরা - ajkerparibartan.com
করোনার প্রভাবে বেকায়দায় মৃৎ শিল্পীরা

2:46 pm , September 25, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ করোনার প্রভাবে আসন্ন মহানগরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় দূর্গাপূজায় অর্থনৈতিক কারনে বড় ধরনের আনন্দে ধাক্কা লেগেছে। অর্থনেতিক সংকটের ছোবলের মুখে পড়ে এবার তারা ব্যয় কমিয়ে দেবী দুর্গার প্রতিমা নির্মাণ করছেন আয়োজকরা। এবারের পূজা কমিটির আয়োজকরা বাজেট বরাদ্দ কমিয়ে আনার কারণে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন মৃৎশিল্পীরা। বিগত বছরগুলোতে প্রতিমা নির্মাণ করে যে অর্থ পাওয়া যেত এবার বাজেট অর্ধেকে নেমে এসেছে। তাই কাজ করছেন ঠিকই একারনেই মন খারাপ মৃৎশিল্পীদের। শুধু প্রতিমা নির্মাণই নয় সাজসজ্জাও হচ্ছে স্বল্প ব্যয়ের মধ্যে। এ সংকটের মধ্যেই গত বছরের তুলনায় এবার বরিশালে ১৭টি পূজা বেশি হচ্ছে। নগরীর বিভিন্ন পূজামন্ডপ ঘুরে প্রতিমা নির্মাণের মৃৎশিল্পী বা গুণরাজদের ব্যাপক ব্যস্ততা লক্ষ্য করা গেছে। শংকর মঠ পূজামন্ডপে দুর্গা প্রতিমা নির্মাণে নিয়োজিত শিল্পী সুমন পাল বলেন, করোনার আগে প্রতিবারের পূজোতেই প্রতিমা নির্মাণ কাজ করে ৮০ থেকে ১ লাখ টাকা মূল্যে পাওয়া যেত। করোনা পরিস্থিতিতে এ মূল্য প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে। অর্থের অভাবে অনেক স্থানে পূজাই বন্ধ হয়ে গেছে। তাই বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে এখন স্বল্প খরচ নিয়েই প্রতিমা নির্মাণ করতে হচ্ছে। বরিশাল মহানগর পূজামন্ডপ ফলপট্টির প্রতিমা শিল্পী নিতাই চন্দ্র পাল বলেন, পূজা কমিটিগুলো তাদের বাজেট কমিয়ে ফেলায় আমরা বিপাকে পড়েছি। বাজারে কোনো মালামালের দাম তো কমেনি। কিন্তু আমাদের প্রতিমা নির্মাণ ব্যয় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে জানতে চাইলে শ্রী শ্রী শংকর মঠ পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি কিশোর কুমার দে ও সাধারণ সম্পাদক লিমন কৃষ্ণ সাহা কানু বলেন, আমাদের পূজা সার্বজনীন। ভক্তদের অনুদানের ওপর পূজার ব্যয় নির্ভর করে। করোনাকাল গত বছর থেকেই মন্দিরে অনুদান বাজেট অনুযায়ী না আসায় আমাদের বিপাকে পড়তে হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে সবকিছু স্বল্প ব্যয়ে করতে হচ্ছে। আলোকসজ্জায় বাজেট থাকে প্রতিবছর প্রায় দেড় লাখ টাকা। এবার মাত্র ৫৫ হাজার টাকা। সাজসজ্জায় বাজেট থাকে ১ লাখ টাকা, কিন্তু এবার নামমাত্র সাজসজ্জা করা হবে। জানা যায়, ১১ অক্টোবর ভোর ৬টা ৫৩ মিনিটে শ্রী শ্রী দুর্গা দেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠীবিহিত পূজা। সায়ংকালে শ্রী শ্রী দুর্গাদেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যে দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এরপর ১২ অক্টোবর মহাসপ্তমী বিহিত পূজা, ১৩ অক্টোবর মহাঅষ্টমী বিহিত পূজা, ১৪ অক্টোবর মহানবমী বিহিত পূজা এবং ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিনে দেবী দুর্গার বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করা হবে। এর আগে ৬ অক্টোবর মহালয়ার মধ্যে দিয়েই পূজার আভাস শুরু হবে সবার মাঝে। এদিকে পূজা উপলক্ষ্যে এখন পর্যন্ত কোনো সভা না হওয়ায় পূজা কিভাবে উদ্যাপন করা হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদ। বরিশাল মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি তমাল মালাকার বলেন, মহানগরে গত বছরের তুলনায় দুটি পূজা বৃদ্ধি পেয়ে মোট ৪৫টি পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ৬টি ব্যক্তিগত। যে দুটি দুর্গা পূজামন্ডপ বৃদ্ধি পেয়েছে সেই দুটি নগরীর ২৬নং ওয়ার্ডে। এছাড়া জেলায় গত বছরের তুলনায় ১৫টি পূজা বৃদ্ধি পেয়ে ৫৯০টি দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সব পূজা কমিটিগুলোই বাজেট কমিয়ে এনেছে অনুদান কমে যাওয়ায়। তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর সঙ্গে আলোচনা করেছি। তিনি আমাদের সর্বাত্তক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়া প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের কোনো আলোচনা হয়নি। এবারও হয়তো স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজামন্ডপে প্রবেশের নির্দেশনা দেওয়া হবে। পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বলেন, ‘দুর্গাপূজায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় থাকবে। এছাড়া পূজা কমিটিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে চাহিদা অনুযায়ী অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে মন্ডপগুলোতে। পূজা আয়োজনে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টিও নজরদারিতে থাকবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT