দক্ষিনাঞ্চলের দুই ল্যাবে করোনা নমুনা পরীক্ষার স্রোত দক্ষিনাঞ্চলের দুই ল্যাবে করোনা নমুনা পরীক্ষার স্রোত - ajkerparibartan.com
দক্ষিনাঞ্চলের দুই ল্যাবে করোনা নমুনা পরীক্ষার স্রোত

3:06 pm , July 5, 2021

হেলাল উদ্দিন ॥ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবের নমুনা পরীক্ষার ধারন ক্ষমতা ১৮৮ টির। একই সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করার সক্ষমতা রয়েছে ভোলায় অবস্থিত ল্যাবের। সব মিলিয়ে এই দুই ল্যাবে দিনে ৩৮০ টির মত নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গোটা বিভাগ জুড়ে করোনা সংক্রমন অধিক মাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভাগের ৬ জেলা ৪২ টি উপজেলা থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ শতাধিক নমুনা আসছে। দুই ল্যাবে সক্ষমতার ৩৮০ টি নমুনা পরীক্ষার জন্য রেখে বাকিগুলো ঢাকায় পাঠাচ্ছে বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগ। নমুনার এমন আধিক্যের ফলে ফলাফল পেতেও বেশ বিলম্ভ হচ্ছে। বরিশালে যে সব নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে, তার ফলাফল পেতেই দু দিন লেগে যাচ্ছে। আর যেসব নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয় তার রিপোর্ট আসতে ৩ থেকে ৫ দিন লেগে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বলা চলে নমুনা পরীক্ষার চাপে পিষ্ট হচ্ছে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ানরা। ল্যাবের সক্ষমতার চেয়ে বেশি পরিমাণ করোনা পরীক্ষার নমুনা আসায় রিপোর্ট দিতে হিমশিম খাচ্ছে বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগ। নমুনা পরীক্ষা করতে দেওয়া অধিকাংশ রোগীদেরই রিপোর্ট পেতে বিলম্ব হচ্ছে। ভোলায় আরটি পিসিআর ল্যাব থাকলেও বাকি ৫ জেলাসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলার একমাত্র ভরসাস্থল বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাব। এ ল্যাবে দৈনিক ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা থাকলেও শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই (শেবাচিম) গড়ে প্রায় দুশ’ নমুনা জমা হচ্ছে। এর বাইরে বিভাগের অপর জেলা ও উপজেলাগুলো থেকেও আসছে সাড়ে তিনশ থেকে চারশ নমুনা। বিভিন্ন উপজেলায় জিন এক্সপার্ট ও রেপিট এন্টিজেন্ট টেস্টে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৬০টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হলেও বাকিটা চলে আসে শেবাচিমে। ফলে গত কয়েকদিন ধরে সক্ষমতার কয়েকগুন বেশি নমুনা নিয়ে বিপাকে পড়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।সংশ্লিষ্টরা বলছে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে বেশি সময় লেগে যাওয়ায় অনেক রোগী চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র না নিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আবার কারোর তেমন উপসর্গ না থাকায় অবাধে চলাফেরা করার ৩/৪ দিন পর জানতে পারছে পজেটিভ। অনেকের উপসর্গ থাকলেও পরীক্ষা জটিলতার কারনে নমুনা পরীক্ষা না করানোর ফলে সংক্রমিত হচ্ছে আশপাশের মানুষ। এতে করে বিভাগে প্রতিদিনই সংক্রমনের সংখ্যায় নতুন রেকর্ড গড়ছে। শেবাচিমের পিসিআর ল্যাবের প্রধান ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ একেএম আকবর কবীর জানান, গত কয়েকদিন ধরে সক্ষমতার অধিক নমুনা আসছে। তবে কয়েকদিন পর পর ৩ থেকে ৪শ’ করে নমুনা স্বাস্থ্য বিভাগ ঢাকায় পাঠিয়ে দিচ্ছে। তিনি আরও জানান, এ ল্যাবে বর্তমানে একজন ল্যাব কনসালটেন্ড সহ ৭ জন কর্মরত রয়েছে। দুই সিফটে এই জনবল দিয়ে কাজ চালিয়ে নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহ ধরেই বিভাগে গড়ে আক্রান্ত হচ্ছে দুই শতাধিক মানুষ। উপসর্গ ও আক্রান্ত মিলিয়ে গড়ে দিনে ১০ জনের মৃত্যু হচ্ছে। প্রয়োজনের চেয়ে কয়েকগুণ কম জনবল থাকা সত্বেও শেবাচিমের ১৫০ বেডে’র করোনা ওয়ার্ডে আরো ৫০ বেড সংযুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে ৯০ ভাগ রেডে রোগী ভর্তি রয়েছে। নতুন ১০টি সহ আইসিইউ বেড রয়েছে ২২টি। এর মধ্যে ২১টি বেডে রয়েছেন আশংকাজনক রোগী। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস বলেন বিভাগে দৈনিক ৭ শতাধিক নমুনা সংগ্রহীত হচ্ছে। ভোলা ও বরিশালের আরটি পিসিআর ল্যাবের বাইরে উপজেলাগুলোতে জিন এক্সপার্ট ও রেপিট এন্টিজেন্ট টেস্ট করা হচ্ছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT