হাসির মাঝে লুকিয়ে আছে কষ্ট হাসির মাঝে লুকিয়ে আছে কষ্ট - ajkerparibartan.com
হাসির মাঝে লুকিয়ে আছে কষ্ট

2:52 pm , July 4, 2021

 

মোঃ জসিম জনি, লালমোহন ॥ সাইফুল ও সিয়াম। দু’জনে সম্পর্কে খালাতো ভাই। সাইফুলের বয়স চৌদ্দ, আর সিয়ামের বয়স সাত। দু’জনের একজনও কখনো স্কুলের বারান্দায় পা রাখেনি। পড়া লেখা না করেই এ বয়সে রোজগারে নেমেছে। ওদের বাবার সামান্য আয়। তাই সন্তানদের পড়া লেখা করাতে কখনো আগ্রহ দেখাননি। সরকার বিনামূল্যে মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ার সুযোগ দিয়েছে। বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দেওয়া থেকে শুরু করে উপবৃত্তি দেয়। তারপরও এরা কেন স্কুলে ভর্তি হলো না তার উত্তর দিতে পারলো না এই দুই শিশু। দুইজনেই একসাথে লালমোহন বাজারে কাঁধে বস্তা নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। পুরোনা টিন, লোহা ও পরিত্যক্ত বোতল কুড়ায় ওরা। ওদের পরিচিতি এসমাজে তিন অক্ষরের একটি শব্দে। রাজধানীসহ সারাদেশেই এদের অস্তিত্ব মেলে। সাইফুল ও সিয়ামের সাথে কথা হয় লালমোহন বাজারের মসজিদ রোডে। তারা কাঁধে বস্তা নিয়ে পুরনো জিনিসপত্র কুড়াতে আসেন। সাইফুলের পিতার নাম আব্বাছ। উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের নবীনগর এলাকার গণি বাড়ি তাদের। বাবা অটো রিকশা চালায় এলাকায়। সাইফুলরা ভাই বোন ৩ জন। সবার বড় সে। একই বাড়ির সাইফুলের খালাতো ভাই সিয়াম। তার বাবা ছালাউদ্দিন ব্রিক ফিল্ডে কাজ করে। ৫ ভাই বোনের মধ্যে সিয়াম চতুর্থ। তারা জানায়, প্রতিদিন সকালে পুরনো জিনিসপত্র কুড়াতে বাড়ি থেকে বের হয়। দুপুর পর্যন্ত যা পায় তা নিয়ে নবীনগর বাজারে লিটনের ভাঙ্গারি দোকানে বিক্রি করে। দৈনিক একশত থেকে দুইশত টাকা পর্যন্ত পায় তারা। বিকেলে আবার ওই লিটনের দোকানেই পুরনো জিনিসপত্র ভাজ করার কাজ করেন। সেখানেও আরো একশত টাকা পায়। পুরনো জিনিসপত্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিত্যক্ত বোতল পায় তারা। এর কেজি বিক্রি করে ১৩ টাকা। অন্যান্যের মধ্যে টিনের কেজি ২০ টাকা, লোহার কেজি ২৫ টাকা পায়। সাইফুল ও সিয়াম জানান, কখনো তারা স্কুলে ভর্তি হয়নি। পড়ালেখা কখনো করেনি। সংসারে আয়ের জন্যই তারা এ কাজ করেন। এতে তাদের কোন দুঃখ নেই। সবসময় হাসি খুশিতেই থাকে তারা। দৈনিক নগদ টাকা পাওয়ায় তাদের মুখে এ হাসি। তবে এ হাসির মধ্যেও আছে তাদের অনেক পরিশ্রমের কষ্ট।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT