1:00 am , June 5, 2021
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ গত চৌদ্দ মাসে পুলিশকে লক্ষ্য করে অন্তত সাতটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কেউ প্রাণ না হারালেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। প্রতিটি হামলা হয়েছে আকস্মিক। এ কারনে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। আবার কাউকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। আর হামলার পর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। অবশ্য পুলিশ বলছে, এগুলো স্থানীয় সন্ত্রাসীদের কাজ। অপরাধীদের ‘দুর্গ’ ধ্বংস করে দেওয়ায় তারা পুলিশকে প্রতিপক্ষ ভাবছে। আর বাহিনীর মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য এসব হামলা চালানো হচ্ছে। গত ২ জুন পটুয়াখালীর দশমিনায় গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করার পর পুলিশের উপর হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। এতে পুলিশের এসআই মো. তৌসিফ ইসলাম, এএসআই মো. মনির, এএসআই এরশাদ ও কনস্টেবল মো. মারুফ হোসেন আহত হয়। এ ছাড়া ১১ জানুয়ারী দুপুরে উজিরপুরে ইচলাদী বাসস্টান্ডে নোমান ফকির অনিক নামের এক ইভটিজারকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এসময় ইভটিজিংয়ের শিকার ওই শিক্ষার্থীর সহোদররা থানায় ঢুকে ইভটিজার নোমান ফকির অনিকের ওপর হামলা চালায়। সে সময় তাদেরকে বাধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে উজিরপুর থানার ডিউটি অফিসার এসআই সুদেব, এসআই মাহাবুব ও এএসআই হাসান আহত হন। এদিকে ২০২০ সালের ২৯ মার্চ নগরীর চাঁদমারী এলাকায় পুলিশ অফিসার মেস সংলগ্ন ‘নূরসান ভিলা’য় মাদক উদ্ধারে অভিযান চালানোর সময় গোয়েন্দা পুলিশের এএসআই মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ও কনস্টেবল মনিরুজ্জামান আহত হয়। একই বছরের ৮ অক্টোবর উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের কাকরাধারী গ্রামে ধর্ষণ চেষ্টা মামলার আসামিদের গ্রেফতারের সময় হামলায় এসআই নিজামুদ্দিন ও এএসআই নুরুল ইসলাম আহত হয়। ১৫ অক্টোবর ইলিশ শিকার নিয়ে হিজলায় জেলেদের হামলায় নৌ পুলিশ সদস্য মনিরুল ইসলাম ও আবু জাফর আহত হয়। এ ছাড়া ২০ অক্টোবর রাতে সদর উপ?জেলার চন্দ্রমোহন ইউ?নিয়?নের তেঁতু?লিয়া নদী সংলগ্ন খা?লে ইলিশ রক্ষা অভিযানে হামলা চালিয়ে? ২ পুলিশ সদস্যকে আহত করা হয়। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে অভিযানে অংশ নেয় মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. জাকারিয়া রহমান। তবে পুলিশের উপর সম্প্রতি হামলার বিষয়ে পুলিশ কমিশনার সাহাবুদ্দিন খান বলেন, ‘বস্তি বা অপরাধ প্রবণ এলাকায় সংঘবদ্ধ একটি চক্র নিজেদেরকে বাঁচাতে অনেক সময় পুলিশের ওপর হামলা চালায়। সবাই কিন্তু পুলিশের ওপর হামলা করে না। শুধু বরিশালে নয়, সাড়া বাংলাদেশেই পুলিশের ওপর হামলা খুব কম। তার মানে হলো- পুলিশের কাজে বেশি সহায়তা করে জনগন। এসব হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেও মনে করেন বিএমপি পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।’ সচেতন মহল বলছে, ‘অপরাধের দুর্গ যারা তৈরী করতে চায়, তারা পুলিশকে প্রতিপক্ষ মনে করে হামলা চালাচ্ছে। এসব বন্ধে পুলিশ ভূমিকা রাখে। সুতরাং পুলিশের উপর হামলা করবে এটা তো স্বাভাবিক। এতে পুলিশের মনোবল ভেঙে গেলে অপরাধীদের কাজ করতে আরও সুবিধা হবে। আবার পুলিশের ওপর হামলার অনেক ঘটনা চাপা পড়েও যাচ্ছে।’