3:29 pm , May 9, 2021
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ আন্ত.জেলা সড়ক পরিবহন বন্ধের সরকারী নির্দেশনার মধ্যেই রাজধানী থেকে মাওয়া হয়ে পদ্মা পাড়ি দিয়ে কাঠালবাড়ী থেকে বাসযোগে হাজার হাজার মানুষ নির্বিঘেœই বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে পৌছে যাচ্ছে। করোনার আতংক থামাতে পারেনি ঘরমুখো মানুষে যাত্রা। গত ৪-৫ দিন ধরে এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলেও পদ্মার পশ্চিম তীরে তা প্রতিরোধে শুরু থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। অথচ ইতোমধ্যে বিভাগে সরকারী হিসেবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। মারা গেছেন প্রায় পৌনে ৩শ। শুরু থেকে যথাযথ প্রতিরোধ ছিল না। ফলে ঢাকা থেকে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ মাওয়া’র শিমুলিয়াতে পৌছে যেকোন ভাবেই পদ্মা পার হয়ে কাঠালবাড়ী পৌছে সেখান থেকে অভ্যন্তরীন রুটের বাসে ভাংগা-মোস্তফাপুর হয়ে মাদারীপুর ও বরিশালের সীমান্তবর্তী ভুরঘাটায় পৌছে যাচ্ছেন। কাঠালবাড়ী থেকে ভুরঘাটা পৌছতে সময় লাগছে পৌনে দু ঘন্টা। আর ভুরঘাটা থেকে নগরীতে দেড়ঘন্টা। এমনকি কাঠালবাড়ী থেকে বরিশাল পর্যন্ত গ্যাস চালিত বিপুল সংখ্যক থ্রী-হুইলারও প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী পরিবহন করছে। আর বরিশাল থেকে পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা ও ঝালকাঠীতে পৌছে যাচ্ছেন জেলার অভ্যন্তরীন রুটের বাস সহ বিভিন্ন যানবাহনে।
অপরদিকে কাঠালবাড়ী থেকে ভাংগাÑগোপালগঞ্জ-টুংগিপাড়াÑপাটগাতি হয়ে বিভিন্ন যানবাহনে মানুষ ছুটছে পিরোজপুর, বাগেরহাট, মোড়েলগঞ্জ, সণ্যাশী সহ বিভিন্ন গন্তব্যে। পার্থক্য শুধু কিছু বাড়তি সময় ও অর্থ ব্যয়ের। ঈদের দিন পর্যন্তই ঘরমুখী মানুষের এ শ্রোত অব্যহত থাকবে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
রোববার বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ঢাকা থেকে আগত কয়েকজন যাত্রী জানান, ‘মাওয়া এসে পদ্মা পাড়ি দিতেই কিছু কষ্ট ও সময় ব্যয় হলেও আর কোন সমস্যা হয়নি। কাঠালবাড়ী ভুরঘাটা পর্যন্ত মাদারীপুর জেলার অভ্যন্তরীন রুটের বাসে আসার পরে সেখান থেকে বরিশালের অভ্যন্তরীন রুটের বাসে চলে এসেছি’। গ্যাস চালিত স্কুটার এবং মাইক্রোবাসও চলছে।
বরিশাল মিনিবাস টার্মিনালেও একই চিত্র। হাজার হাজার মানুষ ভাংগা পথে অভ্যন্তরীন রুটের বাসেই ছুটছে পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠী ও পিরোজপুর সহ বিভিন্ন এলাকায়। আর নগরী থেকে সড়ক পথে লাহারহাটে পৌছে সেখানে থেকে স্পীডবোটে তেতুলিয়া নদী পাড়ি দিয়ে অসংখ্য মানুষ ছুটছে দ্বীপজেলা ভোলাতে।
এভাবেই করোনা মোকাবেলার লকডাউন আনলক করে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখন দক্ষিণাঞ্চলমুখি জনশ্রোত অব্যাহত রয়েছে। আর এ জনশ্রোতকে ‘বর্তমান করোনা সংকটে জনস্বাস্থ্যের জন্য কোন ভাল লক্ষন নয়’ বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগন। তাদের মতে, ‘এসব ঘরমুখি মানুষের কতজন যে করোনা ভাইরাসের বাহক, তার হিসেব নেই। এরাই দক্ষিণাঞ্চলে এসে নিজ পরিবার ও আত্মীয় স্বজনকে সংক্রমিত করতে পারে’। ‘গত বছরও ঈদের পরেই দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমন সর্বোচ্চ চুড়ায় পৌছেছিল’ বলে স্মরন করিয়ে দিয়ে ‘সকলকে অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে সতর্ক হবার’ পরামর্শ দিয়েছে চিকিৎসকগন। তবে ঘরমুখি এ জনশ্রোত প্রতিরোধে এখন আর তেমন কোন কার্যক্রমও নেই প্রশাসন সহ আইনÑশৃংখলা বাহিনীর।