রাজী না হওয়ায় গৃহবধূকে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ রাজী না হওয়ায় গৃহবধূকে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ - ajkerparibartan.com
রাজী না হওয়ায় গৃহবধূকে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

3:35 pm , April 4, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নগরীর নিউ ভাটিখানা এলাকার রাজ্জাক দারোগার (অব.) অনৈতিক কর্মকান্ডে রাজী না হওয়ায় তার ভাড়াটিয়া গৃহবধূ লতা বেগমকে ধর্ষন মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা লতা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট জবানবন্দিতেও স্বিকার করেছেন। লতা কিষানী সভার তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক। গত ৭ মার্চ রাতে সাক্ষী হওয়ার কথা বলে তাকে বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানা নিয়ে মামলার ৩ নম্বর আসামী করা হয়। এ মামলার বাদী হচ্ছে চরমোনাইর বাসিন্দা নির্যাতিতা মেয়ের মা। বর্তমানে বাদী কাউনিয়া ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। এ মামলার অপর আসামী হচ্ছে নানুœ ও সেলিনা বেগম। গত ২৩ মার্চ লতা বেগম তার জবানবন্দিতে বলেন, রাজ্জাক দারোগার বাসার তৃতীয় তলায় সে পরিবার পরিজন নিয়ে বসাবাস করছেন। রাজ্জাক দারোগার চারতলা ভবনের সকল ফ্লাটেই অনৈতিক কাজকর্ম চলে। রাজ্জাক দারোগা প্রায়ই তাকে (লতা) কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছে। কিন্তু আমাকে কোনভাবে রাজী করাতে না পেরে তার অপর ভাড়াটিয়া সেলিনাকে দিয়ে আমাকে এ মামলা ফাসিয়েছে। ঘটনার দিন ৭ মার্চ আমার ছেলের বিয়ে থাকায় আমি ওই ভবনের সকলের ভাড়াটিয়াদের বাসায় মিষ্টি বিতরণ করি। এ সময় সেলিনার সাথে ৮ বছরের একটি মেয়ে দুইজন পুরুষ লোক নিয়ে আমার বাসায় আসে। আমি তাদের মিষ্টি খেতে দেই। পুরুষ দুজন হচ্ছে নান্নু ও পান্না। আমি রান্না ঘরে পরাটা ভাজতে গেলে এ সুযোগে ওই দুইজন মেয়েটিকে নিয়ে আমার একটি কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। এরপর আমি রান্নাঘর থেকে ফিরে দেখি ওই কক্ষের দরজা বন্ধ। তখন ডাকাডাকি করলে দরজা খুলে দেয়। এ সময় মেয়েটি আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করে এবং তাকে বাঁচাতে বলে। কি হয়েছে প্রশ্ন করলে মেয়েটি বলে তার সাথে পাশবিক নির্যাতিন চালিয়েছে ওই দুইজন। বিষয়টি আমি ওই ভবনের চতুর্থ তলার ভাড়াটিয়া সেলিনার বোনের বাসায় গিয়ে তাকে অবহিত করি। এ সময় সেলিনার বোন সেলিনাকে গালাগাল করেন। আর কাউকে কিছু না বলার অনুরোধ জানান। তখন আমি (লতা) সেলিনার উদ্দেশ্যে বলি সেলিনা এবং তার সাথে দুইলোক এ রকম ঘটনা ঘটাবে বুঝলে তাদের বাসায় ঢুকতে দিতাম না। এরপর মেয়েটির মা আমার বাসায় এসে সকল ঘটনা শোনেন। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন সাক্ষী দিতে পারবেন কিনা। আমি তাতে রাজী হই। এ ঘটনার পূর্বে আমি কখনো ওই দুই পুরুষকে দেখি নাই। সেলিনার মাধ্যমে আমি তাদের নাম জানতে পেরেছি। আমাকে গ্রেফতারের পর সেলিনা বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখায় এবং হুমকি দেয়। এদিকে লতা বেগমের স্বামী সুরুজ তালুকদার জানান, রাজ্জাক দারোগার ভবনে প্রায় ৪ বছর ধরে বসবাস করে আসছি। রাজ্জাক দারোগার সুযোগ পেলেই আমার স্ত্রীকে কু-প্রস্তাব দিতো। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসলেও বাড়িওয়ালা হওয়ায় আমরা বিষয়গুলো এড়িয়ে চলতাম। তারপরও সে পূর্বে পুলিশে চাকরি করেছে তারও ভয় দেখাতো। এ কারনে আমরা নিশ্চুপ থাকতে বাধ্য হয়েছি। আমার স্ত্রী তার প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় সেলিনার মাধ্যমে তাকে ফাসানো হয়েছে। এখানে আমার স্ত্রী কোনভাবে জড়িত নয়। সেলিনা নান্নু ও পান্না এবং মেয়েটিকে সাথে নিয়ে আমার বাসায় গিয়ে তাদের একটি কক্ষে ঢুকিয়ে দেয়। এ সময় আমার স্ত্রী রান্নাঘরে থাকায় সে কিছুই জানতো না। পরবর্তীতে বিষয়গুলো জানতে পেরে তা সেলিনার বোন এবং মেয়েটির মাকে অবহিত করে। যেদিন আমার স্ত্রী লতাকে বাসা থেকে পুলিশ নিয়ে যায়। তখন তাকে সাক্ষী বানানোর কথা বলা হয়। পরবর্তীতে রাজ্জাক দারোগার প্ররোচনায় তাকে আসামী করা হয়েছে বলে দাবি করেন লতার স্বামী। তবে এ ব্যাপারে রাজ্জাক দারোগা বলেন, আমার সব ভাড়াটিয়াদের সাথে কথা বলে দেখবেন আমি কোন ধরনের। আমি আমার চারতলা ভবনের দ্বিতীয়তলায় থাকি। সেখান থেকে তেমন একটা কোথাও যাই না। মাস শেষে ভাড়াটিয়ারা আমাকে ভাড়া দিয়ে যান। লতা জবানবন্দিতে যা বলেছে তা নিজেকে রক্ষার জন্য। আমার বিরুদ্ধে তার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT