3:00 pm , March 24, 2021
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ গৌরনদী উপজেলার বেজগাতি এলাকায় অবৈধভাবে পরিচালিত সুইস হাসপাতালের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার বাসীন্দা শারমিন আকতার সুমী নামে এক নারী এ অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তার মা সানোয়ারা বেগমকে তলপেটের ব্যথা নিয়ে ২০২০ সালের ১৭ অক্টোবর উক্ত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, ‘এটা একুইট এপেন্ডিসাইট এবং এর জন্য রোগীর জরুরী ভিত্তিতে অপারেশন করতে হবে। ওই নারীর প্রচন্ড ব্যথা থাকার পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সানোয়ারা বেগমকে চারদিন হাসপাতালে রাখে। কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের জানায় ‘তারা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি বোর্ড গঠন করেছেন। বোর্ড এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক অপারেশন করবেন। অথচ হাসপাতালটিতে বিশেষজ্ঞ কোন চিকিৎসকই নেই। মূলত এ ধরণের কথা বলে রোগীর স্বজনদের সাথে প্রতারণা করা হয়। সানোয়ারা বেগম আসলে ডায়াবেটিস ও প্রেসারের রোগী ছিলেন। অথচ তাকে চারদিন রেখে ডায়াবেটিস ও প্রেসারের কোন ধরণের চিকিৎসাই করা হয়নি। উল্লেখিত বিষয়ে কোন ধরণের বিশেষজ্ঞও এ হাসপাতালে নেই। অভিযোগে সুমি আকতার উল্লেখ করেন, তার মাকে এমবিবিএস ডিগ্রিধারী সবুজ কুমার পাত্র নামে একজন চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু ওই চিকিৎসকের দেয়া ব্যবস্থাপত্রের বাম পাশে রোগীর প্রেসার, পালস রেট এবং ডায়াবেটিস পরীক্ষার কোন রিপোর্টই লেখা হয়নি। এই সবুজ কুমার পাত্রের প্রেসক্রিপশন ও আলট্রাসনোগ্রামের কাগজে ভিন্ন ভিন্ন স্বাক্ষর দেখা যায়। সত্যিকার অর্থে সবুজ কুমার কোন বিশেষজ্ঞই নয়। নামের সাথে বিশেষজ্ঞ লাগিয়ে বছরের পর বছর ধরে রোগীদের সাথে এভাবে প্রতারণা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আমার মা টানা চারদিন প্রচন্ড ব্যথায় যখন কাতরাচ্ছিলেন তখনও তারা আমার মাকে অন্যত্র চিকিৎসা করাতে যেতে দেয়নি। চারদিন হাসপাতালে রেখে ভুল চিকিৎসা দেয়ার পর যখন আমার মা মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছিলো তখন আমার মাকে ছাড়পত্র দিয়ে অন্যত্র নিয়ে ভর্তি করাতে বলেন। ওই দিনই আমার মা মারা যায়। এভাবে শুধু সুমির মাই নয় আরও অনেক রোগীর ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে এ হাসপাতালে। হাসপাতালটির বিরুদ্ধে বরিশালের সিভিল সার্জন বরাবরে বার বার অভিযোগ দেয়ার পরেও আজ পর্যন্ত কোন ধরণের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।