দূর্যোগপূর্ণ মৌসুমে উপকুলে নেই নিরাপদ নৌ-যান দূর্যোগপূর্ণ মৌসুমে উপকুলে নেই নিরাপদ নৌ-যান - ajkerparibartan.com
দূর্যোগপূর্ণ মৌসুমে উপকুলে নেই নিরাপদ নৌ-যান

3:25 pm , March 22, 2021

 

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ দেশের উপকুলভাগে দূর্যোগপূর্ণ মৌসুম শুরু হলেও নিরাপদ নৌ যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত হয়নি। বিআইডব্লিউটিসি’র ১৪টি সীÑট্রাকের ১০টি এখন বন্ধ। সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিবছর ১৬ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের উপকুলীয় এলাকা ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ এলাকা হিসেবে ঘোষনা করা হয়েছে। এসময়ে উপকুলীয় নৌযান হিসেবে নিবন্ধিত ছাড়া অন্য কোন নৌযানের চলাচল নিষিদ্ধ। সরকার দেশের উপকুলের বিশাল জনগোষ্ঠীর নিরাপদ নৌ-যোগাযোগের লক্ষ্যে গত দুই দশকে সরকারী অর্থে রাষ্ট্রীয় নৌ-বানিজ্য প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিসি’কে ১২ টি সী-ট্রাক ছাড়াও ১টি উপকুলীয় যাত্রীবাহী নৌযান সংগ্রহ করেছে। পাশাপশি আরো দুটি উপকুলীয় যাত্রীবাহী নৌযান পূণর্বাসন করা হয়েছে সরকারী অর্থে। উপরন্তু নিরাপদ উপকুলীয় নৌ-যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে বিশ^ ব্যাংকের সুপারিশে সরকার প্রতি বছর সংস্থাটিকে ৫০ লাখ টাকার নগদ ভর্র্তূকিও প্রদান করছে।
কিন্তু পূণর্বাসনের পরে ২০১১ সালের মধ্যভাগ থেকে বরিশালÑচট্টগ্রাম রুটে উপকুলীয় যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌ-সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। ‘এমভি বার আউলিয়া’কেও এ রুট থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ইতোপূর্বে বরিশালÑহিজলাÑইলিশা (ভোলা)Ñলক্ষ্মীপুর রুটের সীÑট্রাক সার্ভিসটি ইজারাদারের ইচ্ছায় বন্ধ হয়ে গেছে আরো ৫ বছর আগে। অথচ এ রুটে চলাচলকারী নিরাপদ সীÑট্রাক ‘এসটি খিজির-৮’এর মাধমে বরিশাল সহ সন্নিহিত এলাকার মানুষ নিরাপদে লক্ষ্মীপুর হয়ে অতিদ্রুত চট্টগ্রামে যাতায়াত করতো। সরকারী অর্থে কেনা এ সীÑট্রাকটি ইজারাদারের ইচ্ছায় এখন ভোলার ইলিশা ঘাটে রয়েছে। মাঝে মাঝে ইলিশাÑমজুচৌধুরীর হাট রুটে যাত্রী পরিবহন করছে বলে জানা গেছে। সংস্থাটির ১৪টি সীÑট্রাকের মধ্যে রবিবার পর্যন্ত মাত্র ৪টি যাত্রী পরিবহনে ছিল। ভোলার শশিগঞ্জ থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরায় দিনে একবার যাত্রী পরিবহন করছে ‘ এসটি শেখ কামাল’। ‘এসটি খিজির-৫’ ইলিশাÑমজুচৌধুরীরহাট রুটে দিনে একবার যাত্রী পরিবহন করছে। এছাড়াও হাতিয়াÑবয়ারচর রুটে যাত্রী পরিবহন করছে ‘এসটি শেখ মনি’।
গত ১৬ মার্চ ঝঞ্ঝা মৌসুম শুরুর আগের ৬ মাস ‘এসটি ভাষা শহিদ সালাম’ ইজারাদারের মাধ্যমে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে চলাচল করার পরে তা এখন বন্ধ। এছাড়া ‘এসটি সুকান্ত বাবু’ কক্সবাজারে পড়ে আছে। সংস্থাটির এক নম্বর ডকইয়ার্ডে ‘এসটি শেখ রাসেল’ ২০১২ সালের নভেম্বর মাস থেকে, ‘এসটি শেখ জামাল’ ২০১৫ সালের জনুয়ারী থেকে ‘এসটি শহিদ অবদুর রব সেরনিয়াবাত’ ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে মেরামতের নামে পড়ে আছে।
নারায়নগঞ্জের বাংলাঘাটে সংস্থার পোতাশ্রয়ে ‘এসটি খিজির-৬’ ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে, ২০১৪ সাল থেকে ‘এসটি রূপালী’ এবং ২০০৩ সাল থেকে ‘এসটি মিতালী’ নামের সীÑট্রাকগুলো পড়ে আছে। এছাড়া চট্টগামে সংস্থার পোতাঙ্গনে ‘এসটি ভাষা শহিদ জব্বার’ ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে অলস পড়ে আছে। গত বছর মধ্য আগষ্ট থেকে ভোলায় বিকলাবস্থায় পড়ে আছে ‘ এসটি খিজির-৭’। ইজারাদারের মাধ্যমে চলাচলকারী এ নৌযানটি স্থানীয় একটি বেসরকারী ডকইয়ার্ডে মেরামতের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। কবে নাগাদ নৌযানটি মেরামত সম্ভব হবে তা বলতে পারেননি দায়িত্বশীল মহল।
তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, জনগনের অর্থে সংগ্রহ করা এসব সীÑট্রাকগুলো যথাযথ মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষনের মাধ্যমে সংস্থার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালন করলে তা উপকুলবাসির নিরাপদ নৌ যোগাযোগের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারতো। ইতোপূর্বে ভোলার সাথে লক্ষ্মীপুরের চর আলেকজান্ডার রুটেও সী-ট্রাক সার্ভিসটি বন্ধ রয়েছে বিগত প্রায় ৫ বছর। বরগুনার চরদেয়ানী থেকে পিরোজপুরের বড় মাছুয়া হয়ে বাগেরহাটের সণ্যাশী পর্যন্ত একটি সী-ট্রাক চালু করলে সেখান থেকে রকেট স্টিমারের মাধ্যমে বরিশাল ও ঢাকার সাথে নিরাপদ নৌ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হতে পারত।
এসব বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি’র দায়িত্বশীল মহলে আলাপ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আমরা চেষ্টা করছি উপকুলীয় নৌ-যোগাযোগ আরো নিরাপদ করতে। অনেক এলাকাতেই সংস্থার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সী-ট্রাক সার্ভিস পরিচালন সম্ভব নয় বলেও জানান ঐ কর্মকর্তা।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT