প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাড. নানক বললেন ভাগ্নে ভাস্তে বাড়ির চাকরকে জনপ্রতিনিধি বানানো অশুভ লক্ষণ প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাড. নানক বললেন ভাগ্নে ভাস্তে বাড়ির চাকরকে জনপ্রতিনিধি বানানো অশুভ লক্ষণ - ajkerparibartan.com
প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাড. নানক বললেন ভাগ্নে ভাস্তে বাড়ির চাকরকে জনপ্রতিনিধি বানানো অশুভ লক্ষণ

3:30 pm , March 14, 2021

পরিবর্তন ডেস্ক ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বরিশালের আছমত আলী খান (একে স্কুল) ইনস্টিটিউটে পড়া অবস্থায় ১৯৬৯ সালে রাজনীতিতে হাতেখড়ি জাহাঙ্গীর কবির নানকের। ছিলেন বিএম কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত ভিপি। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগের চেয়ারম্যান হিসেবেও ছিলেন সফল। আওয়ামী লীগের ২১তম কাউন্সিলে ১৯ সদস্যের সভাপতিম-লীর তালিকায় স্থান পান তিনি। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন দলের গুরুত্বপূর্ণ এই নেতা। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের স্বজনপ্রীতির কথা তুলে ধরে অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘এখন একটা ট্রেন্ড হয়ে গেছে এমপি সাব, উপজেলা চেয়ারম্যান সাব বা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি তাদের ভাগিনা-ভাতিজাকে ক্ষমতায় আনতে চান। নিজেদের শক্তি বাড়াতেপ্রয়োজনে বাড়ির চাকরকেও (কাজের লোক) ক্ষমতায় বসাতে চান। এটা দলের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, নির্বাচনের জন্য এবং শক্তিশালী স্থানীয় সরকার গঠনের ক্ষেত্রেও একটি অশুভ সংবাদ ও অশুভ পদক্ষেপ। স্থানীয় রাজনীতিতে মাইম্যান তৈরির অসাধু চেষ্টার তীব্র সমালোচনা করে নানক বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য কথা কিছু লোক (স্থানীয় প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ) এক্ষেত্রে ঔদ্ধত্য দেখায়। তারা কেন্দ্রের নির্দেশনা অমান্য করেন। তিন বা ততোধিক প্রার্থীর নাম পাঠানোর জন্য বলা হলেও, কেউ কেউ একজনের নাম পাঠান। এই একজনের নাম পাঠানো, এটা একটি অশুভ ইঙ্গিত। এতে দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বঞ্চিত হওয়ার পথ তৈরি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা দীর্ঘদিন যাবৎ আওয়ামী লীগের জন্য ত্যাগ-তিতিক্ষা করেছেন, সেই মানুষগুলি কি করবে? যদি তিন বা ততোধিক নাম কেন্দ্রে পাঠাতেন তাহলে তাদের একটা শান্তনার জায়গা তৈরি হতো। তারা আত্মতৃপ্তি পেতেন এই ভেবে, আমরা মনোনয়নের জন্য দরখাস্ত করেছিলাম। যোগ্যতার মাপকাঠিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গঠিত নির্বাচনি মনোনয়ন বোর্ড মনোনয়ন দিতে পারেননি। উদাহরণ হিসেবে দাড় করান বিদ্রোহী বিজয়ী প্রার্থীদের। নানক বলেন, এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কিছু ঘটনা ঘটেছে। আমরা মনোনয়ন দিয়েছি, কিন্তু সেই প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী জয়লাভ করেছে। যিনি বিদ্রোহী প্রার্থী জয়লাভ করলেন, তিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। আওয়ামী লীগ হয়ে নির্বাচন করেছিলেন। এক্ষেত্রে দলের শক্ত ভূমিকা আশা করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, কাজেই আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, যারা একজন করে নাম পাঠিয়েছেন, তাদেরগুলো ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া উচিত জেলা-উপজেলায়। আমরা তিন বা ততোধিক চেয়েছি, তাদের নাম পাঠাতে হবে, একজনের নাম একসেপ্ট করা উচিত না। সমস্যা সমাধানে যেসব ত্যাগী নেতাকর্মীদের নাম আসছে না কেন্দ্রে তাদের জন্য ঢাকা থেকে ফরম বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। তিন বা ততোধিক নাম আসলে ঢাকা থেকে ফরম কেনার প্রয়োজন হতো না জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু তারা নিগৃহীত হয়েছেন, যেহেতু তারা বঞ্চিত হয়েছেন, যেহেতু তাদেরকে বঞ্চিত করেছেন; সেই কারণেই তারা ঢাকায় এসে অফিস থেকে নমিনেশন ফরম কিনে জমা দিচ্ছেন। এমনই এক বঞ্চনার গল্প শোনান আওয়ামী লীগের এই নেতা। বলেন, ‘‘একবার আমার কাছে একজন স্কুল শিক্ষক আসলেন। প্রায় ২৮ বছর শিক্ষকতা করেছেন এবং প্রধান শিক্ষক হিসাবে তিনি অবসরে (রিটার্য়ারমেন্টে) গেছেন। এই ভদ্রলোক বিএনপির আমলে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু সেই ব্যক্তিটির নাম আসে নাই। জীবন সায়াহ্নে এসে দাড়ানো বয়োবৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা মানুষটি, আমার কাছে এসে কাঁদছিলেন। অঝোরে বাচ্চা ছেলের মতো কাঁদছিলেন। ওই ব্যক্তির দাবি, আমি চেয়ারম্যান হইলাম বিএনপির ক্ষমতার আমলে। গতবার আমাকে বলা হল তুমি এবার ছেড়ে দাও, আগামীবার পাবা। কিন্তু এইবার আমার নামটা দেওয়া হলো না। আমাকে মূল্যায়ন করা হলো না। আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলাম। আমি এক টার্ম চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছি দক্ষতা ও সততার সঙ্গে। মানুষ আমাকে চায় কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা তার নামটা পাঠাননি। এখন এই বিষয়গুলি আমাদের বোর্ডের বিবেচনায় আনতে হবে।’ এসব বিষয়ে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপ করবেন জানিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, মাননীয় নেত্রী এসব বিষয়কে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন। গত পৌরসভা নির্বাচনে এমন অনেক বয়োজেষ্ঠ্য নেতাদের নেত্রী নমিনেশন দিয়েছেন। যারা হয়ত আর বেশিদিন বাঁচবেন না। তারা দীর্ঘদিন দল করেছেন, দলের জন্য জেল খেটেছেন, ১৫ আগস্টের পর জেল খেটেছেন, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন। ঘর সংসার সব ধ্বংস করে দিয়েছেন, এই দলটা করতে গিয়ে। জীবন সায়াহ্নে এসে দলের কাছ থেকে কি একটি পুরস্কার পেতে পারে না?

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT