2:59 pm , February 27, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিখোঁজ গৃহকর্মী নিপা বাড়ৈকে (১১) উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার আগৈলঝাড়া উপজেলার আস্কর গ্রামের বিমল বাড়ৈর বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর তাকে হেফাজতে নিয়েছে উজিরপুর থানা পুলিশ। এদিকে, শিশু গৃহকর্মী নিপাকে নির্যাতনের ঘটনায় গৃহকর্তা ঢাকার জাতীয় পঙ্গু হাসপাতালের অর্থপেডিক্স ও ট্রমা বিশেষজ্ঞ ডা. সিএইএস রবিন, তার স্ত্রী রাখি দাস এবং সহযোগী বাসুদেবের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শিশুটির চাচা তপন বাড়ৈ বাদী হয়ে শনিবার সকালে শিশু নির্যাতন দমন আইনে উজিরপুর থানায় মামলা করেন। এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে উজিরপুর থানার ওসি জিয়াউল আহসান জানান, মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উজিরপুরের জামবাড়ি এলাকার মানসিক প্রতিবন্দ্বী ননী বাড়ৈর মেয়ে নিপা বাড়ৈকে ৬ মাস পূর্বে ডা. সিএইএস রবিনের শ্যামলীর বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজের জন্য নেয়। চিকিৎকের স্ত্রী রাখি দাস নানা অজুহাতে তার উপর শারীরিক নির্যাতন করতো। কখনও গরম খুন্তির ছ্যাঁকা, কখনও ছুরির খোঁচা আবার কখনও দেয়ালে ঠোকা হতো তার মাথা। কখনও তার গলা চেপে শ্বাস রোধ করার চেষ্টা করতেন গৃহকর্তার স্ত্রী। অব্যাহত নির্যাতনে নিপা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে উজিরপুরের জামবাড়ি নিপার গ্রামের বাড়ির কাছে একটি দোকানের সামনে ফেলে যায়। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ওই রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরদিন বৃহস্পতিবার রাতেই তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তার স্বজনরা। কিন্তু শিশুটি অসুস্থ থাকায় চিকিৎসকরা তাকে ছাড়পত্র দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। শুক্রবার ভোররাতে শিশুটিকে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লাপাত্তা হয় তার স্বজনরা। এ ঘটনায় শুক্রবার সকাল ১১টায় উজিরপুর থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শামসুদ্দোহা তৌহিদ। নিখোঁজের ২৩ ঘণ্টা পর শনিবার ভোর ৪টার দিকে পাশ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার আশোয়ার গ্রামের জনৈক বিমলের বাড়ি থেকে নিপাকে উদ্ধার করে পুলিশ।