দক্ষিণাঞ্চলে ১০ দিনে প্রায় ৬৩ হাজার করোনার টিকা গ্রহন দক্ষিণাঞ্চলে ১০ দিনে প্রায় ৬৩ হাজার করোনার টিকা গ্রহন - ajkerparibartan.com
দক্ষিণাঞ্চলে ১০ দিনে প্রায় ৬৩ হাজার করোনার টিকা গ্রহন

3:13 pm , February 16, 2021

 

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ দক্ষিণাঞ্চলে করোনা টিকা সম্পর্কে ভীতি ও আতংক কাটিয়ে গত ১০ দিনে প্রায় ৬৩ হাজার মানুষ প্রতিষেধক গ্রহন করেছেন। ইতোমধ্যে এ টিকা সমাজের সবার মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেললেও নিবন্ধন নিয়ে জটিলতা দুর করে তা আরো গনমুখী করার তাগিদ দিয়েছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ সহ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগন। বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতাল সহ দক্ষিনাঞ্চলের সব জেলা ও উপজেলা সদরে প্রতিদিনই টিকা গ্রহনকারীর সংখ্যা আশাব্যঞ্জক হারে বাড়লেও হাসপাতালগুলোতে স্পট রেজিষ্ট্রেশন সহ সব ধরনের নিবন্ধন বন্ধ করে দেয়ায় সাধারন মানুষের জন্য জটিলতা সৃষ্টি করছে। গত ৭ ফেব্রুয়ারী দেশব্যাপী টিকা প্রদানের শুরু থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার পর্যন্ত ১০ দিনে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার ৪২টি উপজেলাতে মোট ৪৩টি কেন্দ্রে প্রায় ৬৩ হাজার নারী-পুরুষ করোনা প্রতিষেধক টিকা গ্রহন করেছেন। যার মধ্যে নারী প্রায় ২০ হাজার।
তবে সমাজের পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠী টিকা প্রদান কেন্দ্রের বাইরে থেকে নিবন্ধন করে ভ্যাক্সিন গ্রহনে কতটা সক্ষম হবেন তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে ইতোমধ্যে। বিষয়টি সাধারন মানুষের জন্য আরো সহজতর করা সহ সব শ্রেণী পেশার মানুষ যাতে দ্রুত ও সহজে ভ্যাক্সিন গ্রহন করতে পারে সে বিষয়টি নতুন করে ভেবে দেখারও তাগিদ দেয়া হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের মতে, দক্ষিনাঞ্চলে টিকা গ্রহনকারীর মধ্যে সদর উপজেলা বাদে বরিশালের অবশিষ্ট ৯টি উপজেলাতে ১০ হাজার ৩৭২ জন ছাড়াও শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ হাজার ৩০৮ জন, পুলিশ হাসপাতালে ১ হাজার ৫৫ , জেনারেল হাপাতালে ৩ হাজার ৫ জন, পটুয়াখালীতে ১১ হাজার ৬৮ জন, ভোলাতে ১২ হাজার ৮২৫জন, পিরোজপুরে ১০ হাজার ২৭৮ জন, বরগুনাতে ৬ হাজার ৫২৫ জন ও ঝালকাঠীতে ৫ হাজার ১৩৯ জন করোনা প্রতিষেধক টিকা গ্রহন করেছেন।
প্রথম চালানে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ৩ লাখ ৪৮ হাজার ১০টি করোনা টিকা পৌছে গত গত ২৯ জানুয়ারী। যার মাধ্যমে সর্বমোট ১ লাখ ৭৪ হাজার জনকে দুই ডোজ টিকা প্রদান সম্ভব হবে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে বলা হয়েছে। প্রাপ্ত ভ্যাক্সিনের মধ্যে বরিশালে ১ লাখ ৬৮ হাজার ১০, পটুয়াখালীতে ৪৮ হাজার, ভোলাতে ৬০ হাজার, পিরোজপুরে ৩৬ হাজার, বরগুনায় ২৪ হাজার এবং ঝালকাঠীতে মাত্র ১২ হাজার ডোজ রয়েছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৫ হাজার ৪৫৫ জনকে টিকা প্রদানের লক্ষ্য নির্ধারন করা হলেও প্রথম দশদিনে টিকা গ্রহনকারীর সংখ্যা ৬৫ হজার।
তবে স্বাস্থ্য বিভাগের স্থানীয় দায়িত্বশীল সূত্র এ সংখ্যাকেও আশাব্যাঞ্জক মনে করছেন। তাদের মতে, টিকা প্রদানের আগেই এ সম্পর্কে সমাজের নানা শ্রেণীর মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব অনেকেই কিছুটা ভীত ছিলেন। ফলে প্রথম ৩-৪ দিন টিকা গ্রহনকারী সংখ্যা যথেষ্ঠ কম ছিল। কিন্তু ক্রমে সবভীতি ও অপ প্রচার ভুল প্রমানিত হওয়ায় ইতোমধ্যে সবার মধ্যে টিকা গ্রহনে সবার আগ্রহ বাড়তে শুরু করায় প্রতিদিনই সংখ্যাও বাড়ছে। এমনকি গত দশদিনে যে প্রায় ৬৫ নারী-পুরুষ করোনা প্রতিষেধক গ্রহন করেছেন, তার মধ্যে মাত্র ২২ জনের কিছু পাশর্^ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও তারা সবাই সুস্থ আছেন বলেও জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ১০ হাজার ৬৮৮ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১০ হাজার ৩৫১ জন। সুস্থতার হার প্রায় ৯৭%। আর মৃত্যু হয়েছে ২০২ জনের। তবে দক্ষিণাঞ্চলে আক্রান্ত ও মৃতদের সিংহভাগই এখনো নগরীতে। এ অঞ্চলে বসবাসকারী ১ কোটি মানুষের মাত্র সাড়ে ৬% মানুষ গরীতে বাস করলেও করোনা আক্রান্তের হার প্রায় ৪০%-এর কাছে। এ বিভাগে কোভিড-১৯’ এ মৃত্যুবরনকারী ২০২ জনের মধ্যে নগরীতেই মারা গেছেন প্রায় ৪০ জন।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সর্বশেষ প্রাপ্ত হিসেবানুযায়ী মোট আক্রান্ত ৪ হাজার ৮৭২ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮৮ জনের পটুয়াখালীতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৭৪৫। মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের। পিরোজপুরে ১ হাজার ১৯৩ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ২৫ জন। ভোলাতে ৯৯১ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ১০ জন। বরগুনাতে আক্রান্ত ১ হাজার ৩৪ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। আর ঝালকাঠীতে ৮৪৩ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ১৬ জন।
এ পর্যন্ত বরিশাল ও ভোলার দুটি আরটি-পিসিআর ল্যাবে ৫২ হাজারের বেশী মানুষের নমুনা পরীক্ষায় গড় শনাক্তের হার প্রায় ১৬%। সর্বশেষ হিসেবানুযায়ী দক্ষিণাঞ্চলে মৃত্যু হার ১.৮৫%-এর নিচে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT