শেবাচিম হাসপাতালে নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা মাঝপথে বন্ধ শেবাচিম হাসপাতালে নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা মাঝপথে বন্ধ - ajkerparibartan.com
শেবাচিম হাসপাতালে নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা মাঝপথে বন্ধ

3:11 pm , February 16, 2021

হেলাল উদ্দন ॥ মৌখিক পরীক্ষা গ্রহনের মাঝ পথে স্থগিত ঘোষনা করা হয়েছে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল হাসপাতালের জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়ার কার্যক্রম। উচ্চাদালতের স্থগিতাদেশ পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। এর আগে সোমবার রীটের প্রেক্ষিতে স্থগিতাদেশ দেয় উচ্চাদালত। ওই আদেশ মেইলে পাঠানো হয়। কিন্তু হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ মেইলে পাওয়া আদেশ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে। এছাড়াও আইনজীবীর পাঠানোর আইনী বৈধতা আছে কিনা জানতে দৌড়ঝাপ শুরু করে। এক পর্যায়ে আদালত অবমাননার কথা চিন্তা করে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহনের মাঝপথে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত ঘোষনা করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান।
সুত্র জানায়, হাইকোর্টের এই আদেশের বৈধতা নিয়ে সন্দেহ করে গতকাল মঙ্গলবার সকালে তৃতীয় ও শেষ দিনের মৌখিক পরীক্ষা নেয়া শুরু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ যখন নিশ্চিত হয়েছে হাইকোর্টের আদেশ সঠিক। তখনই মৌখিক পরীক্ষা চলার মাঝপথে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত ঘোষনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরাও খুব দ্রুত আইনজীবী নিয়োগের মাধ্যমে আইনী পদক্ষেপ গ্রহন করব।
উল্লেখ্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২টি ক্যাটাগরিতে ৩য় শ্রেণীর ৩২ জন কর্মচারী নিয়োগের জন্য গত বছর ২৩ ডিসেম্বর একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রায় ৭০০ আবেদনকারীর অংশগগ্রহণে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় ৪৪৪ জনকে উত্তীর্ণ দেখিয়ে ৬ ফেব্রুয়ারি ফলাফল প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারীর সন্তান ও স্বজন জালিয়াতি করে এই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। একই সাথে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওইদিন পরীক্ষার হলে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের নকল সরবরাহ করে বলে অভিযোগ করা হয়। এই অভিযোগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালের পরিচালক সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন দুই পরীক্ষার্থী। এরপরও নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রাখায় তারা ওই নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে সোমবার ১৫ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি একে-এম শহীদুল হকের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের একক বেঞ্চ কেন এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হবে না জানতে চেয়ে রুল জারীর নির্দেশ দেন। একই সাথে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া ৬ সপ্তাহের জন্য স্থগিতের নির্দেশ প্রদান করেন।
তবে হাইকোর্টের এই আদেশের প্রতি সন্দেহ পোষণ করে গতকাল মঙ্গলবার নিয়োগ কার্যক্রম (ভাইভা) চালিয়ে যান মেডিকেলের পরিচালক ও নিয়োগ কমিটির সভাপতি ডা. মো. বাকির হোসেন। তিনি বলেন, হাইকোর্টের এক আইনজীবীর প্রত্যয়ন পত্রে রিটের নম্বর নেই। এটা সঠিক কিনা তা নিয়ে তাদের সন্দেহ আছে। আনুষ্ঠানিকভাবে আদালতের আদেশ পেলে সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন। হাইকোর্টের আদেশে কর্তৃপক্ষ সন্দেহ পোষণ করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সিনিয়র আইনজীবীরা। তারা বলেছেন, হাইকোর্টের এই আদেশ সঠিক। মেডিকেল কর্তৃপক্ষের উচিত হাইকোর্টের আদেশের প্রতি সম্মান জানানো। এই আদেশের পরও নিয়োগ কার্যক্রম চালিয়ে মেডিকেল কর্তৃপক্ষ আদালত অবমাননা করেছেন বলে মন্তব্য করেন তারা। তবে হাইকোর্টের যে কোন আদেশ প্রাথমিকভাবে আইনজীবীরা প্রত্যয়ন করেন এবং এই প্রত্যয়ন গ্রহণযোগ্য বলে জানিয়েছেন মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী এ্যাড. আজাদ রহমান। তিনি বলেন এই প্রত্যায়ন কোন কর্তৃপক্ষ অবজ্ঞা করলে সেটা আদালত অবমাননার শামিল। তিনি বলেন স্থগিতাদেশ হাসপাতালের মেইলে ও কুরিয়ার যোগে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতাল পরিচালক এর সত্যতা জানতে দুপুরে ফোন দিয়েছিলেন। আমি তাকে জানিয়েছি হাইকোর্টের সাইটেও এ আদেশ রয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম বলেন, হাইকোর্টের ৪৪ ডিএলআর এর ২১৯ নম্বর পেজে উল্লেখ আছে, প্রাথমিকভাবে আদালতের যে কোন আদেশের প্রত্যয়ন আইনজীবীরা দিতে পারবেন। এটাই নিয়ম এবং গ্রহণযোগ্য।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT