দমছে না এসআই মহিউদ্দিন! নির্দোষ প্রমানে চিকিৎসককে ব্যবহার দমছে না এসআই মহিউদ্দিন! নির্দোষ প্রমানে চিকিৎসককে ব্যবহার - ajkerparibartan.com
দমছে না এসআই মহিউদ্দিন! নির্দোষ প্রমানে চিকিৎসককে ব্যবহার

2:29 pm , January 10, 2021

হেলাল উদ্দিন ॥ হত্যার অভিযোগ মাথায় নিয়েও দমছে না বরিশাল মেট্রো ডিবি থেকে সদ্য প্রত্যাহার হওয়া এসআই মহিউদ্দিন। নিজেকে রক্ষার মিশনে চতুরতার আশ্রয় নিচ্ছে সে। যার প্রধান অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করেছে হাসপাতালের এক চিকিৎসকে। পুলিশী নির্যাতনে রেজাউলের মৃত্যু ঘটেনি ওই চিকিৎসকের এমন বক্তব্য এসেছে গনমাধ্যমে। বরিশালের একাধিক গনমাধ্যমে চিকিৎসকের ওই বক্তব্য সম্বলিত খবর একাধিক অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশ করা হয়েছে। যা প্রচারের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়ানো হয়েছে। ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক না হয়ে এবং ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কোন ভাবেই এ ধরনের বক্তব্য দেয়ার ইখতেয়ার তার নেই বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকরা।
ডাঃ আতিক আহমেদ আকন্দ নামের ওই চিকিৎসক বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের মেডিকেল অফিসার। আহত রেজাউল কে যখন শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো রেজাউল কে ক্যানোলা লাগিয়ে রক্ত ও স্যালাইন সঞ্চালনের ব্যবস্থা করেন। শুধু মাত্র এতটুকু চিকিৎসায় নিয়োজিত থেকেই রেজাউলের মৃুত্যুর কারন জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। স্পষ্ট ভাবে বলেছেন রেজার শরীরের একই জায়গায় বারবার নেশার ইনজেকশন পুশ করায় ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। সেই ক্ষত থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ কারণেই রেজার মৃত্যু হয়েছে।
স্পর্শ কাতর একটি বিষয় নিয়ে তার এমন দায়িত্বহীন আচরনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন স্বয়ং হাসপাতাল প্রশাসন। শেবাচিম হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডাঃ মনিরুজ্জামান শাহিন বলেন এক কথায় আমি হতবাক ও বিস্মিত। অপরিপক্কতা থেকেই হয়ত এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছে সে। তবে একজন জুনিয়র চিকিৎসক হয়ে এ ধরনের স্পর্শকারতর বিষয়ে বক্তব্য দেয়ার কোন অধিকার তার নেই। তার বক্তব্যের দায়ভার তাকেই গ্রহন করতে হবে। প্রয়োজন হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে শোকজ করবে।
জানতে চাইলে ডাঃ আতিক আহমেদ আহমেদ আকন্দ বিভ্রান্তিকর জবাব দেন। প্রথমে তিনি বলেন ওই বক্তব্য তিনিই দিয়েছেন। পরে আবার বলেন আমি শুধু বলেছি অতিরিক্ত রক্তক্ষরনে রোগী রেজাউলের মৃত্যু ঘটেছে। এর পরেই ফোন কেটে দেন তিনি।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাঃ রেফায়েত হোসেন বলেন আদালত ছাড়া কারো কাছেই আমরা রিপোর্ট নিয়ে কথা বলতে বাধ্য নই। এখনো ঢাকা থেকে রেজাউলের রিপোর্ট এসে পৌছায়নি বলে জানান তিনি।
এদিকে একাধিক সুত্র জানিয়েছে নিজেকে রক্ষার জন্য এস আই মহিউদ্দিন ডাঃ আতিক আহম্মেদ কে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছে। মহিউদ্দিনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন্ যা সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করেছে মহিউদ্দিন।
গনমাধ্যমে প্রচারিত ডাঃ আতিকের বক্তব্যঃ (ধারণা করছি রেজার শরীরের একই জায়গায় বারবার নেশার ইনজেকশন পুশ করায় ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। সেই ক্ষত থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ কারণেই রেজার মৃত্যু হয়েছে।
(রোগীর পুরো শরীর দেখা হয়েছে। কোথাও স্পষ্টভাবে মারধরের কিংবা দুর্ঘটনার কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এমনকী রোগীর কাছে জানতে চেয়েও এই ধরনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।)
(রেজা সুঁইয়ের মাধ্যমে নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করতেন বলে চিকিৎসকদের জানিয়েছিলেন। এই কারণে তার হাত-পায়ে শিরাগুলোতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক ছিল না। বেশিরভাগ সময়ই তিনি বাম পায়ের সংযোগস্থল দিয়ে নেশার ইনজেশন নিতেন। এই কারণে সেখানে ক্ষত তৈরি হয়েছে। ওই ক্ষত দিয়েই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে।)
২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাত ৮টায় শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাউল করিম রেজাকে বরিশাল নগরীর সাগরদী হামিদ খান সড়ক থেকে ধরে নিয়ে যান মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহিউদদ্দিন। তার দাবি, রেজার কাছে ১৩৮ গ্রাম গাঁজা ও ৪ পিস নেশাজাতীয় ইনজেকশন পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় ৩০ ডিসেম্বর কোতোয়ালি মডেল থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। এরপর ওই দিন তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। রেজা অসুস্থ থাকায় আদালতের নির্দেশে কারা কর্তৃপক্ষ কারা-হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়। সেখানে ১ জানুয়ারি রেজাউলের অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে তাকে কারা হাসপাতাল থেকে শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ২ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিটে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT