3:25 pm , December 25, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নগরীতে দিনের পর দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অবৈধ ব্যাটারী চালিত রিকশা। অবৈধ এ যানের কারণে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও বরিশালে নগরীতে বেড়েই চলছে ব্যাটারিচালিত প্যাডেল রিকশার সংখ্যা। প্রথম ধাপে এই রিকশার সংখ্যা কয়েকশ’ থাকলেও এখন এর সংখ্যা ছাড়িয়েছে কয়েক হাজার। নগরীর মূল সড়কগুলোতে এ রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এ নির্দেশনা মানছে না কেউই। সুযোগ পেলেই ট্রাফিক পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে গুর”ত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যাত্রী পরিবহন করছে এ রিকশা চালকরা। অনুমোদনহীন রিকশার কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে নগরীতে। পুলিশ বলছে, এ রিকশার বিষয়ে তারা কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ধীরে ধীরে এই রিকশা চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হবে নগরীতে। এ ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে দুর্ঘটনার শিকার এক কলেজছাত্র জানান, সেপ্টেম্বর মাসে নথুল্লাবাদ ব্রিজ এলাকায় সড়ক পারাপারের সময় বেপরোয়া গতির ব্যাটারিচালিত রিকশার ধাক্কায় গুরুতর আহত হই। মাথায় আঘাত পেয়ে চারদিন ভর্তি ছিলাম হাসপাতালে। নগরীর বাংলাবাজার এলাকার মুদি ব্যবসায়ী শরিফুল মাতুব্বর বলেন, প্যাডেল চালিত রিকশায় যখন মেশিন লাগানো হয় তখন সেই যান বা রিকশা অস্বাভাবিক চলবে সেটাই স্বাভাবিক। আর এতে দুর্ঘটনা ঘটবে তাও স্বাভাবিক। সরকারি বরিশাল কলেজের ছাত্র রফিকুল ইসলাম বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি আমিও। রিকশার বেপরোয়া গতির কারণে নগরীর সদর রোডে বাইসাইকেল নিয়ে দুর্ঘটনায় হাঁটুতে আঘাত পাই। যা নিয়ে তিন মাস বিশ্রামে ছিলাম চিকিৎসকের পরামর্শে। আবদুর রহিম তালুকদার নামে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালক জানান, ‘এক বচ্ছর ধইরা ব্যাটারি দিয়া চালাইন্না রিকশা চালাইতেছি। আগে চালাইতাম প্যাডেল রিকশা, তয় এহন হগলডি এই রিকশা নামাইতে আছে। যার লইজ্ঞা বছর হানে ধইরা মুইও প্যাডেল ছাইড়া ব্যাটারির রিকশা ধরছি। এডায় কষ্ট কম হয়। তয় পুলিশের কথামতো না চললে রিকশা লইয়াও যায়, আবার তার ছিঁইড়া হালায়।’ ছগির উদ্দিন নামে আরেক রিকশা চালক জানান, ‘ডেইলি দুইশ’ টাহা ভাড়ায় ব্যাটারির রিকশা চালাইতে হয়। এ রিকশায় দুইডা ব্যাটারি লাগাইন্না। অনেকগুলায় চাইরডাও আছে। এহন তো পুলিশে সদর রোড ঢোকতে মানা করে। তয় পলাইয়া পলাইয়া ঢুকি। তয় আবার পুলিশে যদি ধরতে পারে হেলে আবার ঝামেলা করে।’ গতকাল সন্ধ্যায় সাবেক এক কাউন্সিলর মুঠোফোনে জানান, তিনি ব্যাটারীচালিত রিকশায় করে বাসায় ফিরছিলেন। চালক এত দ্রুত গতিতে চালচ্ছিলেন আমি ভয়ে বার বার তাকে (চালক) গতি কমানোর জন্য বললেও শোনেনি। কিছু দূর যাওয়ার পরেই ব্রেক দিতে গিয়ে উল্টে যায়। এখন আমি হাসপাতালে ভর্তি। এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, হঠাৎ করে ব্যাটারি বা মেশিন চালিত এ রিকশার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে আমরা নানা নির্দেশনা দিয়েছি। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে এ রিকশা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। একসঙ্গে তো এত রিকশা নগরী থেকে সরিয়ে দেয়া সম্ভব নয়। তবে আমরা ধীরে ধীরে এসব রিকশা নগরীতে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেব।