৯ মাস পর চক্রের ৯ সদস্য গ্রেপ্তার ॥ স্বর্নালংকার উদ্ধার ৯ মাস পর চক্রের ৯ সদস্য গ্রেপ্তার ॥ স্বর্নালংকার উদ্ধার - ajkerparibartan.com
৯ মাস পর চক্রের ৯ সদস্য গ্রেপ্তার ॥ স্বর্নালংকার উদ্ধার

2:54 pm , December 20, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরার মাধ্যমে অপরাধীকে দ্রুত শনাক্ত করা যায়। এছাড়াও এর মাধ্যমে অপরাধ নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়। তাই নগরীর প্রত্যেক বাসা, মহল্লা ও মার্কেটে সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরা স্থাপনের আহবান জানিয়েছেন মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান। নগরীর কাটপট্টি রোডের একটি জুয়েলার্স থেকে দিনে দুপুরে অভিনব কৌশলে চুরি করা চোরাই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের পর আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এ আহবান জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। গতকাল রোববার মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন এলাকার জুয়েলার্স, বিকাশ, মোবাইলের ও কম্পিউটার-ল্যাপটপের দোকানে অভিনব পন্থায় দিনের বেলায় চুরি করা চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তারের তথ্য। এই চক্রটি গত ১৯ মার্চ দুপুরে নগরীর কাটপট্টি রোডের আশ্রাব এন্ড সন্স জুয়েলার্সে চুরি করে নিয়েছে ১২৬ ভরি ওজনের স্বর্নালংকার। এর মধ্যে একটি নেকলেস ও ৯ টি আংটি উদ্ধার করা হয়েছে।
চোরাই চক্রের গ্রেপ্তারকৃত সদস্যরা হলো-কোতয়ালী মডেল থানার এলাকার সাতটি চুরি মামলার আসামী সুমন (৩৭), কুমিল্লার তিতাস থানার ছয়টি চোরাই মামলার আসামী অলি (৩০), কুমিল্লার দেবিদ্বার থানার সাতটি মামলার আসামী জামাল (৪০), মুরাদনগর থানার একটি মামলার আসামী হাসান (১৭), একই থানার ছয়টি মামলার আসামী আলাউদ্দিন (২৫), চট্রগ্রামের পাচলাইশ থানার চারটি মামলার আসামী লিটন (২৮), নারায়নগঞ্জ থানার পাঁচটি মামলার আসামী নয়ন (২২), চাঁদপুরের কচুয়া থানার ছয়টি মামলার আসামী জসিম ওরফে জনি (২৮) ও লক্ষ্মীপুর থানার চারটি মামলার আসামী শুক্কুর (২০)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জুয়েলার্সে চুরির পর কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা করে আশ্রাব এন্ড সন্স জুয়েলার্সের মালিক বাচ্চু তালুকদার। চোর চক্র শনাক্ত ও চোরাই মালামাল উদ্ধারের জন্য কোতয়ালী মডেল থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. রাসেলকে দায়িত্ব দেয়া হয়। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও কুমিল্লা থেকে চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
সংবাদ সম্মেলনে সহকারী কমিশনার মো. রাসেল জানান, তার নেতৃত্বে কোতয়ালী মডেল থানার পুলিশের একটি দল ছদ্মবেশে চট্ট্গ্রামের হালিশহর এলাকায় অভিযান করেন। সেখান থেকে দুইটি আংটি, দুইটি মোবাইল সেট ও একটি মোবাইল সিমসহ চক্রের সদস্য লিটনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে আশ্রাব এন্ড সন্স জুয়েলার্সে চুরিসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরির কথা স্বীকার করে। এছাড়াও চক্রের সদস্যদের সম্পর্কে তথ্য দেয়। ওই সকল তথ্যর ভিত্তিতে টানা ৯ দিন অভিযান করে কুমিল্লা থেকে হাসান ও নয়ন, ঢাকা থেকে অলি, সুমন ও আলাউদ্দিন, চট্রগ্রাম থেকে জামালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জামালের দেয়া তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার বউ বাজার এলাকার স্বর্না জুয়েলার্সের মালিক পবন রায় এবং সুমনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী একই এলাকার শিফা জুয়েলার্সের মালিক আলম হোসেনের কাছ থেকে একটি নেকলেস ও নয়টি আংটি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সুমন, অলি, জামাল ও লিটন দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সহকারী পুলিশ কমিশনার আরো জানিয়েছেন, চুরির মুল পরিকল্পনাকারী হলো সুমন। সে সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের রাজারচর এলাকার হাওলাদার বাড়ির ফরিদ উদ্দিনের ছেলে। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়ি চট্টগ্রামে। সেখানে থেকে চক্রের সদস্যরা সংঘবদ্ধ হয়। পরে চক্রটি ঢাকায় এসে চুরির পরিকল্পনা করে। চক্রের সদস্যরা জানিয়েছে, মুলহোতা সুমন ১৪ মার্চ নগরীতে এসে আশ্রাফ এন্ড সন্স জুয়েলার্স চিহিৃত করে। ১৭ মার্চ অলি অপর সাত সদস্য নিয়ে নগরীতে এসে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে। ঘটনার দিন তারা লঞ্চঘাটের ভাই ভাই হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে নদীর তীরে গিয়ে চুরির বিষয়ে নানা পরিকল্পনা করে। দুপর ১টায় তারা কাটপট্টি রোডের জুয়েলার্সে কাছে আসে। পরে তারা আশে-পাশের দোকান খোলা থাকা অবস্থায় অভিনব পন্থায় লুঙ্গী দিয়ে আড়াল করে জুয়েলার্সের তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করে। জুয়েলার্স থেকে ১২৬ ভরি ওজনের (যার আনুমানিক মুল্য ৬৪ লাখ টাকা) বিভিন্ন স্বর্নালংকার চুরি করে। পুলিশী চেকপোষ্টের ভয়ে তারা সড়ক পথে না গিয়ে লঞ্চে উঠে। লঞ্চের কেবিনে তারা চোরাই স্বর্নালংকার ভাগ-বাটোয়ারা করে। মুলহোতা সুমন বেশি নিয়েছে। প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে তারা ঢাক যায়। সেখান থেকে চট্টগ্রামের শিফা জুয়েলার্সের মালিক আলম হোসেনের কাছে চোরাই স্বর্নালংকার বিক্রি করেছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT