2:47 pm , December 9, 2020

মো: আফজাল হোসেন, ভোলা ॥ আজ ১০ডিসেম্বর ভোলা মুক্ত দিবস। এইদিনে পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয় দ্বীপ জেলা ভোলা। ১৯৭১সালের এই দিনে হানাদারমুক্ত হয়ে রচিত হয়েছে ভোলায় প্রথম স্বাধীনতার ইতিহাস। দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রাম ও যুদ্ধের পর পাক-হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা ভোলার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে সেদিন দ্বীপ জেলা ভোলা থেকে পালিয়ে যায়। একই সাথ ভোলার কয়েক লাখ মানুষ আনন্দ উল্লাসে ফেটে পড়েন। স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর সেই স্মৃতি আজ মনে পড়ে ভোলার সাহসী সৈনিকদের।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভোলা শহরের যুগীরঘোল এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ড চত্বর দখল করে পাক হানাদার বাহিনী। পরে তারা সেখানে ক্যাম্প স্থাপন করে। সেখান থেকেই এক পর এক মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের সহকারী, সহযোগীদের ধরে এনে চালায় অমানুষিক নির্যাতন। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী নিরীহ মানুষদের ধরে এনে হত্যা করে। মরদেহ ফেলে রাখা হয় সেখানেই। শুধু তাই নয় ভোলার খেয়াঘাট এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারের ধরে এনে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়। মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয় নদীর পানি। পাক হানাদার বাহিনীরা অনেক নারীকে ক্যাম্পে ধরে এনে রাতভর নির্যাতন করে সকালে লাইনে দাঁড় করে নির্মমভাবে হত্যা করে। তৎকালীন অগণিত মানুষ মারা যায় ওই হানাদার বাহিনীর হাতে। সেখানে গণকবর দেওয়া হয় নিহতদের। সেটি এখন বধ্যভূমি হিসেবেই পরিচিতি লাভ করেছে।
১৯৭১ সালে দেশ রক্ষায় সারাদেশের ন্যায় দ্বীপ জেলা ভোলাতেও চলে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি। সরকারি স্কুলমাঠ,টাউনস্কুল মাঠ ও ভোলা কলেজের মাঠের কিছু অংশে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাক হানাদার বাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ হয় ভোলার ঘুইংঘারহাট, দৌলতখান, বাংলাবাজার, বোরহানউদ্দিনের দেউলা ও চরফ্যাশনে।
অবশেষে ১০ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে টিকতে না পেরে ক্যাম্প থেকে কার্গো যোগে পাক বাহিনী পলায়ন করে। তখনও মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ওপর গুলি বর্ষণ করে। ওই দিনই ভোলার আকাশে উড়ানো হয় স্বাধীন দেশের পতাকা। ভোলা পরিণত হয় উৎসবের শহরে।