2:43 pm , December 6, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার প্রতিবাদে হিজলায় আয়োজিত সমাবেশে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এমপি পঙ্কজ নাথ গ্রুপ ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি গ্রুপের এই সংঘর্ষে উভয়পক্ষে কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ৩ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল সকাল ১০ টার দিকে উপজেলা সদরে এ ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনার জন্য উভয় পক্ষ এক অপরের উপর দায় চাপিয়েছে।
তথ্য মতে কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয় স্থানীয় সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ গ্রুপ ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি টিপু সুলতান গ্রুপ। উভয় পক্ষ একই সময়ে একই স্থানে (উপজেলা সদরে) এ কর্মসূচীর ঘোষনা করে। ক্ষমতাসীন দলের দুই গ্রুপের এমন ঘোষনা শুনে সর্তক অবস্থানে চলে যায় হিজলা থানা পুলিশ। সমাবেশ স্থলে সকাল থেকেই মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। সকাল ১০ টা নাগাদ মিছিল সহকারে সমাবেশ স্থলে আসতে শুরু করে এমপি পঙ্কজ নাথ গ্রুপ। এর কিছুক্ষন পরপরই মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে আসতে শুরু করে টিপু সুলতান গ্রুপ। কিন্তু সমাবেশ স্থলে প্রবেশের আগেই টিপু সুলতান গ্রুপকে বাধা দেয় পুলিশ। পরক্ষনেই দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয় । এ সময় উভয় পক্ষ সমাবেশ স্থলে নির্মানাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থলের ইট নিক্ষেপ শুরু করে। আধাঘন্টারও বেশী সময় ধরে চলতে থাকা এই সংঘর্ষে টিপু সুলতান গ্রুপের নেত্রী উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগমের স্বামী গিয়াস উদ্দিনসহ আরো ২ জন গুরুতর আহত হন। এছাড়া এমপি গ্রুপের অন্তত ১৫/২০ জন নেতাকর্মী আহত হন। কোন হাসপাতালে ভর্তি না হলেও তারা বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহন করেছেন বলে জানা গেছে।এদিকে সংঘর্ষে টিকতে না পেরে কিছুক্ষন পরই সমাবেশ স্থল থেকে পালিয়ে যায় এমপি পঙ্কজ নাথ গ্রুপ। পরে টিপু সুলতান গ্রুপ সমাবেশ স্থল থেকে চলে গেলে আবার পুনরায় সমাবেশ স্থলে ফিরে আসে এমপি গ্রুপের নেতাকর্মীরা।
এমপি অনুসারী উপজেলা চেয়ারম্যান বেলায়েত ঢালী বলেন, নির্ধারিত সময়ে সমাবেশ করার জন্য এমপি অনুসারীরা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য চত্বরে জড়ো হতে থাকেন। কিন্তু অপরপক্ষ নির্ধারিত সময়ের আগে সকাল ১০টার দিকে মিছিল নিয়ে ভাস্কর্যের পাদদেশের দিকে গিয়ে এমপি অনুসারীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এমপির অনুসারীরা অপ্রস্তুুত থাকায় তাৎক্ষণিক হামলা প্রতিরোধ করতে না পেরে দৌড়ে আত্মরক্ষা করে। অপরদিকে হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ টিপু সিকদার বলেন, এই ঘটনার জন্য এমপি পংকজ নাথ অনুসারীরা দায়ী। তারা নির্ধারিত সমাবেশে মিছিল সহকারে যাচ্ছিলেন। সকাল সোয়া ১০টার দিকে মিছিলটি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য এলাকা অতিক্রমকালে এমপি অনুসারীরা অতর্কিতে মিছিলের পেছনের দিকে হামলা চালায়। এ সময় এমপি বিরোধী পক্ষের প্রতিরোধের মুখে এমপি অনুসারীরা পালিয়ে যায়। হিজলা থানার ওসি অসীম কুমার সিকদার জানান, আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার পর পুলিশ উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।