2:05 pm , December 4, 2020

এস মিজানুল ইসলাম, বানারীপাড়া ॥ শিশির ভেজা ঘাসের ডগায় মৃদু মন্দ ঠান্ডা হাওয়ায় এমনকি কুয়াশার রাত্রি শেষে জ্যোৎ¯œার ঝলকানীতে প্রচন্ড শীত যখন প্রকৃতিকে কাঁপিয়ে চলে ঠিক এমন সময়ে ও পাওয়া যাচ্ছে না গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের খেজুর রস। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুঁর গাছ। বিগত দিনে শীতের মৌসূম এলে রস আহরন কারী বহু গাছিঁরা গ্রামের পর গ্রাম ঘুরে রস আহরনের জন্য অগণিত খেজুঁর গাছ চেঁছে পাইল করতেন। কয়েকদিন পরে খেজুর গাছ থেকে রস নামানোর জন্য পাইল কেটে গাছে হাড়ি পাতার ব্যবস্থা করতেন। গাছে হাড়ি উঠলেই শুরু হতো পিঠা, গুড় আর পায়েস খাওয়ার উৎসব। পল্লী বাংলার পল্লী শিল্পি আব্দুল আলীমের “বধূর বাড়ী মধূপুর …মোদের মিলন বাঁশির সুর” এ গান যারা শুনেছেন নিশ্চয়ই খেজুর গুড়ের বর্ননা কত সুন্দর ভাবে দরাজ কন্ঠে শিল্পি গেয়েছেন। জ্যোৎ¯œা রাতের প্রথম প্রহরের খেজুঁর রসের শিরনী শীতের সময় চাঁদর- কাঁথা মুড়িয়ে অনেকে একত্রে মিলে খাওয়ার ধুম পড়তো। যারা সেই স্বাদ পেয়েছেন তারা নিশ্চয়ই ফিরে যাবেন ছোট বেলার স্মৃতি মন্থনে। সেই সব দৃশ্য এখন চোখে পরে না বললেই চলে। মৌসুম শুরু হয়েছে। অনেক পরিবার তাদের জিবিকা নির্বাহ করত খেজুর রস বিক্রির মাধ্যমে। এ সময় দেখা যেত কাঁচা রাস্তায়র দু’পাশে সারি সারি খেজুর গাছ। বিকেল হলেই দেখা যেত গাছিদের খেজুর গাছের মাথায় রস সংগ্রহের জন্য হাড়ি রাখার দৃশ্য। দিন যায় খেজুঁর গাছের সংখ্যা কমে যায়। এর পেছনে বিবিধ কারন রয়েছে। সৈয়দকাঠী গ্রামের সত্তেরোর্ধ গাছিয়া আঃ হক জানান, যখন পালাক্রমে গাছ কাটতাম তখন ৪০/৫০ হাড়ি খেজুর রস বিক্রী করতাম, এখন ইটভাটাদের লইগ্গা সেরকম গাছ ও নেই আর রসও নেই। পরিবেশ নিয়ে কাজ করেন মোঃ খালেদ হোসেন জানান, ইট ভাটায় বেশির ভাগ খেজুঁর গাছ দিয়ে ইট পোড়ান হয়। কম খরচে গৃহ নির্মানের জন্য খেজুর গাছ ব্যবহার করায় গাছের সংখ্যা কমেছে। যার ফলে এখন আর দেখা মেলেনা শীতের সকালে কুয়াশা ভেদ করে পাড়ার বাজারে, গলির মোড়ে গাছিঁদের রসের হাঁড়ির পসরা। দেখা যায়না রস বোঝাই হাড়ি কাঁধে নিয়ে বাড়ি বাড়ি ফেরী করার সেই সব দৃশ্য। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস হারিয়ে যাচ্ছে।