জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মিঠুর পদ বাণিজ্য জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মিঠুর পদ বাণিজ্য - ajkerparibartan.com
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মিঠুর পদ বাণিজ্য

2:58 pm , November 19, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ মুলাদী উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক পদ প্রত্যাশী ছিলেন রোকনুজ্জামান। তাকে পদ পাইয়ে দিতে ৬০ হাজার টাকা উৎকোচ নেন বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠু। তবে বয়স বেশি এবং বিবাহিত হওয়ার কারণে বাদ পড়েন রোকনুজ্জামান। পদ না পেয়ে ওই টাকা ফেরৎ চাইতে গিয়ে নাজেহাল হতে হয় রোকনুজ্জামানকে। একইভাবে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক পদ প্রত্যাশী মাসুদ রানার কাছ থেকে নেন ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু তাকেও শেষ পর্যন্ত পদ দিতে পারেননি মিঠু। এভাবে শুধু রোকনুজ্জামান ও মাসুদ রানাই নয় অনেকের পদ প্রত্যাশী নেতাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা ছাত্রদল সভাপতির বিরুদ্ধে। সরকার বিরোধী আন্দোলনে মাঠে না থাকলেও চাঁদাবাজিতে শীর্ষে অবস্থান করছেন এ নেতা। দলের দুর্দিনে যখন তৃনমূলের কর্মীরা মানবেতন জীবন যাপন করছেন সেই সময় রাজধানীর বিলাস বহুল হোটেলে মাসের পর মাস লাখ লাখ টাকা ভাড়া দিয়ে থাকছেন তিনি। কমিটি গঠনের পর রাজনীতির মাঠে দুই বছর নীরব থাকলেও চাঁদাবাজিতে সরব উপস্থিতি এ নেতার। কমিটির নামে দলের দুর্দীনে চাঁদাবাজির কারণে তৃনমূলের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। দলের দুঃসময়ে মাঠে থাকা নেতাদের বাদ দিয়ে ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট মাহফুজুল আলম মিঠুকে সভাপতি ও কামরুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা ছাত্রদলের একটি পকেট কমিটি ঘোষনা করা হয়। কমিটি গঠনের দুই বছরের বেশি সময় পার করলেও আজ পর্যন্ত আন্দোলনের মাঠে কোন ধরণের ভূমিকা রাখতে পারেননি এ দুই নেতা। পারেননি পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করতেও। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজীব আহসান তার নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য অযোগ্য দুই নেতাকে দিয়ে কমিটি গঠন করায় শুরু থেকেই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেণ তৃনমূলের নেতাকর্মীরা। গত দুই বছরে আন্দোলনের মাঠে তাদের উপস্থিতি বলতে গেলে শূন্য। দলীয় কর্মসূচি বাদ দিয়ে তারা নানা অজুহাতে পড়ে থাকেন ঢাকায়। সংগঠনের সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠুর বিরুদ্ধে দলীয় নেতার হাতের কব্জি কেটে দেয়াসহ আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। একাধিক ছাত্রদলের নেতাকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সামনে ছাত্রদলের কমিটি। আমরা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে পদে রাখা হবেনা। সভাপতি মিঠু যা করছেন তা মানার মত নয়। কমিটি বানিজ্যের টাকা দিয়ে থাকছেন ঢাকার অভিজাত হোটেল উপবন ও রহমানিয়ায় যেখানে প্রতিদিন ভাড়া গুনতে হয় ৩ হাজার টাকা। মিঠু এমনভাবে চলাফেরা করেন দেশের একজন মন্ত্রীও এত ভিআইপিভাবে চলেন না। কিনেছেন নতুন প্রাইভেটকার। শুধু তাই নয় ওয়াকিটকি ব্যবহারের পাশাপাশি সাথে সার্বক্ষনিক তিনজন পিএস নিয়োগ দিয়েছেন। এরা হলেন- রাজু, রফিক ও আশিষ। মিঠু উৎকোচ বানিজ্যের জন্য নতুন করে ঢাকাস্থ বরিশাল জেলা ছাত্রদলের কমিটি করেছেন। ওই কমিটির নাম দিয়ে অনেকের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছেন। ঢাকাস্থ বরিশাল জেলা ছাত্রদলের কমিটির সভাপতি করার আশ্বাস দিয়ে রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রদলের এক নেতা বলেন, মাহফুজ আলম মিঠুকে কেউ ছাত্রদল নেতা হিসেবে চেনেন না। তাকে চেনে হাতকাটা মাহফুজ নামে। নগরীর ১৫নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি হেলালের হাতের কব্জি কেটে আলোচনায় আসে মিঠু। ছাত্রদলের বিভাগীয় টিমের নেতারাও মিঠুর অপকর্মের বিষয়টি অবগত বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT