2:54 pm , November 19, 2020

সাঈদ পান্থ ॥ সরকারি নির্দেশনার বালাই নেই বরিশালে। এখানকার বেসরকারি স্কুল-কলেজগুলো নানা অজুহাতে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছে অর্থ। যেখানে করোনা মহামারীর কারণ সরকার বলে দিয়েছে শুধু মাত্র টিউশন ফি নেয়া যাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। এর বাইরে টিফিন, পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন বাবদ এবং অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত কোনো ফি নেয়া যাবে না। সেখানে বেতন, সেশন চার্জসহ বিভিন্ন ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের পকেট কাটা হচ্ছে। বরিশালের বেসরকারি অধিকাংশ স্কুল কলেজেই এই অবস্থা বিরাজ করছে।
কোভিড ১৯-এর কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন ভাতা টিউশন ফি নিচ্ছে বহু প্রতিষ্ঠান। এমতাবস্থায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। কিন্তু তাও মানছে না বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো (এমপিওভুক্ত ও এমপিওবিহীন)। বরিশাল সদর উপজেলার রামকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেনির শিক্ষার্থী লামিয়া, নাঈম, ফরহাদ রেজা, ৮ম শ্রেনির রায়হান, আকাশ, ৯ম শ্রেনির মারিয়া, অর্পিতা ইসলামরা অভিযোগ করেন তাদের স্কুলে ১০ম শ্রেনির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকা, ৯ম শ্রেনির কাছ থেকে ১ হাজার ৪৭৫ টাকা, ৮ম শ্রেনিতে ১ হাজার ৩৬০ টাকা, ৭ম শ্রেনিতে ১ হাজার ২৭৫ টাকা ও ৭ম শ্রেনিতে ১ হাজার ২৫০ টাকা টাকা নেয়া হচ্ছে। সরকার যেখানে শুধু মাত্র টিউশন ফি নিতে বলেছে এখানে আমরা এতা টাকা কেন দেব। যদিও শিক্ষকরা বলছে তোমাদের ৬ মাসের বেতন মাফ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও কোন এতো টাকা আমাদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে। এই স্কুলের অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, এই স্কুলের ৩ শিক্ষক কোচিং করান। তাদের কাছে ছেলে বা মেয়েকে না পড়ালে পরীক্ষার ফলাফলে গরমিল হয়। বিষয় থেকেও আমরা পরিত্রান চাই। যেখানে সরকার করোনা থেকে বাঁচার জন্য স্কুল কলেজ বন্ধ করে দিয়েছে সেখানে দল বেধে কোচিং করিয়ে আমাদের করোনা ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের নজরদারি করা দরকার। শুধু রামকাঠি স্কুলেই নয় এই ঘটনা জেলায় প্রায় প্রতিটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।
রামকাঠি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নাসির মোল্লা বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১২শ ১৫শ টাকা না নেয়ার বিষয়ে আমি অনেক আগে থেকে বলে আসছি শিক্ষকদের। এখনতো সরকারই নির্দেশনা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে কোন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অর্থ আদায় করলে আমি নিজেই প্রতিবাদ করবো। এ বিষয়ে আমরা সোচ্চার আছি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোসলেম উদ্দিন বলেন, কোন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আমরা কোন টাকা পয়শা চাইনি, নেয়াও হয়নি। ফিও নেয়া হয়নি। এমনকি শিক্ষার্থীদের কোন চাপও দেয়া হয়নি। কিন্তু একটি গুজব ছড়ানো হয়েছে। মূলত, একটি শিক্ষা প্রাইভেট পড়ায়। যিনি বিভিন্ন পরীক্ষা নিচ্ছে। আর পরীক্ষার জন্য সে কিছু টাকা নেয় বলে আমরা শুনেছি। কিন্তু স্কুল ছেলে কোন টাকা নেয়া হয় না। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মেনহাজ সিকদার বলেন, সরকারি নির্দেষনা পাওয়ার পর আমরা টাকা নেয়া বন্ধ করে দিয়েছি। সবাই বলেছি টাকা যেন না দেয়। কিন্তু নির্দেশনার আগে যদি কোন শিক্ষার্থী কোন অর্থ লেনদেন করে থাকে তাদের টাকাও ফেরত দেয়া হবে।