3:12 pm , November 17, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল-ঢাকা নৌ-রুটের এমভি সুন্দরবন ১১ লঞ্চের ছাদে গার্মেন্টস শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার লঞ্চটি বরিশাল নৌ-বন্দরে ভেড়ার পর লঞ্চের কর্মচারীরা ধোঁয়া নির্গমনের চিমনির আড়ালে শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে। পরে সিআইডি, কোতয়ালী ও নৌ-পুলিশ গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশের ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করে। কি কারনে কারা কখন হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে, সেই বিষয়ে লঞ্চের কর্মচারীরা কিংবা পুলিশ কিছুই জানাতে পারেনি। হত্যার শিকার ওই গার্মেন্টস শ্রমিক হলো-মো. শামীম হাওলাদার (২৪)। সে নলছিটি উপজেলার কুশঙ্গল ইউনিয়নের কুপিলা গ্রামের বাসিন্দা খালেক হাওলাদারের ছেলে। সে নারায়নগঞ্জের
ফতুল্লার গার্মেন্টস আবির ফ্যাশনের শ্রমিক।
লঞ্চের সুপারভাইজার মো. সিরাজ জানান, এমভি সুন্দরবন-১১ লঞ্চ সোমবার রাতে ঢাকার সদরঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে বরিশাল নৌ-বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। মঙ্গলবার সকালে লঞ্চ বরিশাল নৌ-বন্দরে এসে পৌছে। যাত্রীরা নেমে যাওয়ার পর কর্মচারীরা লঞ্চ পরিষ্কার করতে ছাদে যায়। তিন তলার ছাদে ধোঁয়া নির্গমনের চিমনির আড়ালে ওই যুবকের ক্ষতবিক্ষত লাশ দেখতে পায় তারা। তখন বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।
খবর পেয়ে সিআইডি, কোতয়ালী মডেল থানার ও নৌ-পুলিশসহ র্যাবের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তারা লাশের ও ঘটনাস্থলের অবস্থা পর্যবেক্ষন করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। পরে শামীমের লাশের ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
এছাড়াও পুলিশ লঞ্চের ডেক থেকে একটি ভিজিডিং কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। ওই কার্ডে নাম লেখা রয়েছে রিপন হাওলাদার, নলচিঠি, বিহঙ্গল কুলকাঠী। পাশাপাশি সেখানে সাব্বির ফ্যাশন, নারায়নগঞ্জ, টুয়েলকাম সহকারী লেখা রয়েছে। তবে শামীমের ব্যাগ কিংবা কোন মালামাল লঞ্চে পাওয়া যায়নি।
সদর নৌ থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ী ফেরার কথা পরিবারকে জানিয়েছে শামীম। সকালে বাড়ী না ফেরায় ও ফোন বন্ধ পাওয়ায় পরিবার তার সন্ধান শুরু করে। বিভিন্ন মিডিয়া ও ফেসবুকে শামীমের লাশের ছবি দেখে এসে শনাক্ত করেছে। লাশের ময়না তদন্ত শেষে শামীমের মামার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় শামীমের পরিবার থেকে মামলা করা হবে।
ওসি আরো জানান, শামীমের পেটে ও বুকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এতে তার পেট থেকে ভুড়ি বেরিয়ে গেছে। কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। লঞ্চের সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সাহায্যে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হবে।
নৌ পুলিশের এএসপি আহসান হাবীব জানান, লঞ্চে যাত্রীদের নিরাপত্তার কোন ব্যবস্থা নেই। লাশের ধরন দেখে বোঝা যাচ্ছে হত্যার পূর্বে ধস্তাধস্তি হয়েছে। হত্যাকান্ডে একাধিক ব্যক্তি জড়িত।
সিআইডি’র পরিদর্শক আল-মামুন জানিয়েছেন, হত্যায় কি ধরনের ধারালো অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন এলে নিশ্চিত হওয়া যাবে কি ধরনের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।