লালমোহনে টানা বর্ষনে পঁচে যাচ্ছে ক্ষেতের আমন ধান লালমোহনে টানা বর্ষনে পঁচে যাচ্ছে ক্ষেতের আমন ধান - ajkerparibartan.com
লালমোহনে টানা বর্ষনে পঁচে যাচ্ছে ক্ষেতের আমন ধান

3:01 pm , October 31, 2020

মোঃ জসিম জনি, লালমোহন ॥ লালমোহনে টানা বৃষ্টিপাতে কৃষকদের সর্বনাশ হয়েছে। রোপনকৃত আমন ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আর এক মাস পরেই ধান কাটার কথা থাকলেও কোথাও কোথাও ধান জলাবদ্ধতার কারণে পঁচে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শাকসবজি ও পানের বরজ। এ বছর তুলনামূলক বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ায় কৃষকদের লাভের তুলনায় ক্ষতিই বেশি হয়েছে বলে দাবী করেন কৃষকরা। ভারী বর্ষণের কারণে উপজেলার কৃষকরা দেরিতে তাদের জমিতে আমনের চারা রোপন করেছে। চারা রোপন করার পর গত ২১, ২২ ও ২৩ অক্টোবরের টানা বৃষ্টিপাতে আমনের জমিতে জলাবদ্ধতা হয়ে কৃষকের রোপনকৃত চারা পচন শুরু হয়েছে। এতে হতাশ হয়ে পড়েছে হাজারো কৃষক। খালগুলো দখল ও স্লুইজ বিকল থাকায় জমির পানি নামছে না বলেও কৃষকরা অভিযোগ করেন।
সরেজমিনে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বৃহৎ সাতদরুন বিল। এ বিলটি বেতুয়ার খাল সংলগ্ন হওয়ায় এখানকার চাষকৃত জমির বৃষ্টির পানি বেতুয়ার খালের মাধ্যমে অপসারিত হওয়ার কথা থাকলেও এ খালটিতে অবৈধ বিহন্দি জাল, বেরজাল ও খুর্ছিজাল বসিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। বসানো জালের কারণে ওই খালের জোয়ার ভাঁটা বন্ধের পথে। অপসারণ হতে পারেনা বেতুয়ার দুই কূলের চাষকৃত জমির পানি। এ বেতুয়ার খালের রমাগঞ্জ, ধলীগৌরনগর ও লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যবর্তী রায়চাঁদ বাজার থেকে উত্তরদিকে আজাহার রোড ও চতলা বাজার ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক অবৈধ জাল দিয়ে দখল করে আছে খালটি। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলের কারণে কিছু অসাধু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি এ খালে মাছ শিকার করে তাদের অবৈধ ক্ষমতার দাম্ভিকতা হাসিল করে যাচ্ছে। আর বেতুয়ার জোয়ার ভাঁটায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হওয়ার কারণকে দায়ী করেছেন স্থানীয়রা।
রমাগঞ্জের বৃহৎ সাত দরুনসহ একাধিক বিলের শতশত একর চাষকৃত আমনের চারা জলাবদ্ধতা হয়ে পঁচে যাচ্ছে বলে কৃষকরা জানান। এতে ভেস্তে যেতে বসেছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। আষাঢ় মাস হলো কৃষকের আমন ধানের বীজ বপনের পুরো সময়। কিন্তু দীর্ঘদিন ভারীবর্ষণের কারণে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। মৎস্য চাষীদের লক্ষ লক্ষ টাকার চাষকৃত মাছের ক্ষতি হয়। তার কারণে কৃষকরা দেরীতে আমন ধান রোপন করেন। এসব ধান আর এক মাস পরই কাটার কথা। এসময় টানা বৃষ্টিপাতে ধানের ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
ওই এলাকার একাধিক কৃষক জানান, এ উপজেলায় বিভিন্ন খালের মাথায় ৮-১০টি স্লইজগেট বিকল হয়ে আছে। এ কারণে খালের জোয়ার-ভাঁটা প্রায় বন্ধের পথে। ভাটার সময় পানি নামতে না নামতে আবার খাল ভরে যায়। ফলে বিলের জলাবদ্ধতা শেষ হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম শাহাবুদ্দিন বলেন, উপজেলার অনেক বিল রয়েছে যা জলাবদ্ধ হয়ে আছে। জমির পানি নামার বা যাতায়াতের স্লুইস গেটগুলো ও বক্স কালভার্টগুলো প্রায় বন্ধ রয়েছে। সে কারনেই এ জলাবদ্ধতা। এগুলো সংস্কার করা দরকার। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে লালমোহন উপজেলার ৬০ হেক্টর জমির শাক সবজি পানিতে নিমজ্জিত হয়। ৫ হেক্টর জমির পান বরজ আক্রান্ত হয়। এছাড়া ১৫ থেকে ২০ হেক্টর জমিতে পানি না নামার কারণে আমনের সমস্যা হয়েছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT