সিভিল সার্জন কার্যালয়ের হিসাব রক্ষকের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের হিসাব রক্ষকের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ - ajkerparibartan.com
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের হিসাব রক্ষকের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ

2:35 pm , October 18, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সিভিল সার্জন কার্যালয়ের হিসাবরক্ষক মুন্নী বেগমের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন নেয়া হচ্ছে না। এমনকি একবারের জন্য তদন্ত কমিটি পর্যন্ত হয়নি। যে কারনে দূর্নীতির বেপরোয়া রাজ্যে অবাধে বিচরন করছেন এই নারী কর্মচারী। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে প্রকাশিত দূর্নীতিবাজ কর্মচারীদের তালিকায় বরিশাল স্বাস্থ্য সেক্টরের ৩ জন কর্মচারীর নাম উঠে রয়েছে। কিন্তু ওই তালিকায় স্থান পায়নি মুন্নী বেগমের নাম। অথচ বরিশাল স্বাস্থ্য সেক্টরে শ্রেষ্ঠ দূর্নীতিবাজ হিসাবে সবার মুখেই উচ্চারিত হয় এই মুন্নীর নাম। মুন্নীর দূর্নীতির ধরন এতই সুক্ষè যে সব সময় থাকে ধরা ছোয়ার বাইরে। কথিত আছে বরিশাল সিভিল সার্জনসহ স্বাস্থ্য সেক্টরের ঠিকাদারী কোন কাজ পেতে হলে হিসাব রক্ষক মুন্নীকে প্রথমে ম্যানেজ করতে হয়। মুন্নীই পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে সকল পথ বাতলিয়ে দেন।
তথ্য মতে এক যুগেরও বেশী সময় ধরে বরিশাল সিভিল সার্জন অফিসে হিসাব রক্ষক পদে কর্মরত আছেন মুন্নী বেগম। চাকুরীর শুরু থেকেই ঠিকাদারদের সাথে আতাত করে গুছ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন টেন্ডার করার অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু যখনই যে কেউ তার দূর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছে তখনই যে কোন প্রক্রিয়ায় তাকে ম্যানেজ করেছে সে। কৌশলী বুদ্ধির কাছে সকলকেই পরাজিত হতে হয়েছে তার কাছে। শুধু ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেয়া নয় জানা গেছে মুন্নী নিজেও ঠিকাদারীর সাথে জড়িত। ভিন্ন নামে লাইসেন্স করে স্বামী ও স্বজনদের দিয়ে বরিশাল স্বাস্থ্য সেক্টরের কাজ করাচ্ছেন তিনি।
জানা গেছে বছরে পর বছর অবলীলায় দূর্নীতি করে যাওয়ার মন্ত্র হিসাবে কিছু কৌশল প্রয়োগ করেন মুন্নী। এর অংশ হিসাবে প্রথমেই সিভিল সার্জনকে ম্যানেজ অন্যতম। অফিসের একাধিক সুত্র জানিয়েছে নতুন সিভিল সার্জন এলে প্রথমে তার সামনে বিশ^স্ত ও কর্মঠ ও একজন দায়িত্বশীল কর্মী রুপে অবতীর্ন হন মুন্নী। এরপর ওই সিভিল সার্জনের স্বরুপ বিশ্লেষন করে নানা প্রক্রিয়ায় তাকে ম্যানেজ করে ফেলেন। পরে মুন্নীই বনে যান টেন্ডারের বিষয়ে ডিসিশন মেকার। এছাড়া নিজের প্রয়োজনে অফিসের একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে হাতে রাখেন মুন্নী।
তথ্য অনুযায়ী পত্রিকায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ থেকে শুরু করে লটারী পর্যন্ত সব কিছুই চলে মুন্নীর বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তে। অনেক সিভিল সার্জন ধারনাই করতে পারেন না কোন স্থানে বা কোন পথে মুন্নী ফাক ফোকরে কাজ করছে।
অপরিচিত ঠিকাদারদের কাছে বিভিন্ন অযুহাতে টেন্ডারের সিডিউল বিক্রি না করা তার চিরাচরিত কাজ। যে কারনে গত ৩০ বছর ধরে এক জন ঠিকাদার বরিশাল সিভিল সার্জন অফিসের আওতাধীন সকল কাজ করছেন।
মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে চলতি বছর থেকে স্ব স্ব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পথ্য ও ঔষধ এবং চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহের টেন্ডার আহবান করা করলেও একটুও ক্ষমতা খর্ব হয়নি মুন্নীর। সিভিল সার্জন অফিসে বসেই তিনি নিয়ন্ত্রন করছেন জেলার ১০ উপজেলা ও বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের সকল টেন্ডার। বিভিন্ন হাসপাতালের হিসাব রক্ষকরা টেন্ডারে মুন্নীর হস্তক্ষেপের কথা স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে কথা বলতে মুন্নীর ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস বলেন, বরিশালের স্বাস্থ্যখাতের কেনাকাটা নিয়ে আমাকে কেউ কোন দিন প্রশ্ন করেনি। ওসব বিষয় আমার নলেজেও নেই। সিভিল সার্জনরা টেন্ডারের মাধ্যমে কেনাকাটা করে থাকেন। পরিচালক কার্যালয় কোন টেন্ডারের সাথে জড়িত নয়। স্বাস্থ্য খাতের কেনাকাটায় সিন্ডিকেটের কোন অভিযোগ আসলে বা কোন স্বাস্থ্য কর্মী জড়িত থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানান তিনি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT