2:37 pm , October 14, 2020
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ইলিশ সংরক্ষন অভিযানের উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে কীর্তনখোলা নদীর ডিসি ঘাট এলাকায় এর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। উদ্বোধনী কর্মসুচীতে কীর্তনখোলা নদীতে স্পীড বোর্ডে মহড়া দেয়া হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক জানান, ইলিশ সংরক্ষনে আগামী ২২ দিন নৌ-পুলিশ, কোষ্ট গার্ড, র্যাব, পুলিশ, মৎস অফিস ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে নদী ও বাজারে অভিযান করবে। এ সময় ইলিশ শিকার, সংরক্ষন, বাজারজাতের সাথে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিচার করা হবে। তিনি বলেন, ইলিশ শিকার বন্ধের দিনগুলোতে মৎস অধিদপ্তর থেকে পাঠানো জেলেদের সহায়তা পৌছে দেয়া হয়েছে। তাই মা ইলিশ সংরক্ষন কর্মসূচিতে যারা ব্যতয় ঘটাবে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। জেলা মৎস জেলা কর্মকর্তা আবু সাইদ জানান, আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত এ অভিযান চলবে।
মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদী মিলে প্রায় সাড়ে সাত হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে ইলিশের বিচরণ এলাকা। প্রতিবছর আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমায় মা ইলিশ সাগর থেকে ডিম ছাড়ার জন্য নদীর মিঠা পানিতে চলে আসে। প্রজনন সময়ে মা-ইলিশ রক্ষায় ২২ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। শুধু বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলই নয় সারা দেশে নদীতে এই ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। নিষিদ্ধ সময়ের মধ্যে কোনো ব্যক্তি আইন অমান্য করলে শাস্তি কমপক্ষে ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদ- অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দ- হতে পারে। মৎস্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, নিষিদ্ধ এই সময়ে প্রতি জেলে পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হবে। সেই অনুযায়ী বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার ৪১ উপজেলায় দুই লাখ ৮২ হাজার ৫০০ জেলে পরিবারের জন্য পাঁচ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বরিশাল জেলায় ৪৭ হাজার জেলে পরিবারকে ৯৪০ মেট্রিক টন, পিরোজপুর জেলায় ১৭ হাজার জেলে পরিবারকে ৩৪০ মেট্রিক টন, পটুয়াখালী জেলায় ৫৮ হাজার জেলে পরিবারকে এক হাজার ১৬০ মেট্রিক টন, ভোলা জেলায় ১ লাখ ২০ হাজার জেলে পরিবারকে দুই হাজার ৪০০ মেট্রিক টন, বরগুনা জেলায় ৩৭ হাজার জেলে পরিবারকে ৭৪০ মেট্রিক টন ও ঝালকাঠি জেলায় তিন হাজার ৫০০ জেলে পরিবারের জন্য ৭০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মৎস্য অধিদফতর বরিশাল বিভাগের উপ-পরিচালক আনিছুর রহমান তালুকদার জানান, ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ মৌসুমে কেউ মাছ আহরণে নদীতে নামলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলায় জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি জেলে পরিবার ২০ কেজি করে চাল পাবে। প্রতিটি উপজেলার থানা নির্বাহী কর্মকর্তা এসব চাল উপজেলা মৎস্য অফিসের তালিকাভুক্ত জেলেদের ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে দেয়া হবে বলে জানান তিনি। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব আহমেদ, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ হেলাল উদ্দিন, নৌ-বন্দর থানা ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন সহ কোষ্টগার্ড ও বিভিন্ন সরকারী কর্মকর্তা। পরে বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ হেলাল উদ্দিন নগরীর পদ্ধাবতী এলাকার বিভিন্ন বরফ কলে মজুদকৃর্ত বরফ সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন ও ভেঙ্গে ফেলেন।