শেবাচিম হাসপাতালে এক অর্থ বছরে প্রায় ৮০ কোটি টাকার অনিয়ম দূর্নীতি শেবাচিম হাসপাতালে এক অর্থ বছরে প্রায় ৮০ কোটি টাকার অনিয়ম দূর্নীতি - ajkerparibartan.com
শেবাচিম হাসপাতালে এক অর্থ বছরে প্রায় ৮০ কোটি টাকার অনিয়ম দূর্নীতি

2:33 pm , October 14, 2020

হেলাল উদ্দিন ॥ দূর্নীতি যেন পিছু ছাড়ছে না বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের। জনবল নিয়োগ দূনীর্তির রেশ কাটতে না কাটতেই এবার সামনে এসেছে হাসপাতাল পরিচালনায় নানা অনিয়ম দূর্নীতির আলামত। রোগী কিংবা সাধারন মানুষের অভিযোগ নয় খোদ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান অডিট অধিপ্তরের রিপোর্টে সম্প্রতি উঠে এসেছে দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের শেষ চিকিৎসা ভরসাস্থল এই হাসপাতালটিতে মহা দূর্নীতির চিত্র। শুধু (২০১৮-২০১৯) এক অর্থ বছরেরই এ হাসপাতালটিতে প্রায় ৮০ কোটি টাকার অনিয়ম দূর্নীতি হয়েছে। অডিট রিপোর্টে বলা হয়েছে কেনাকাটায় অর্থ আতœসাত, জালিয়াতি ও চিকিৎসা সেবায় ঠকবাজিসহ এ হাসপাতালটির অধিকাংশ সেক্টরেই দূর্নীতির মহোৎসব চলেছে। এদিকে অনিয়ম দূর্নীতির ছাপ পড়েছে হাসপাতাল পরিচালকের ব্যক্তিগত জীবনেও। দায়িত্ব নেবার পর থেকে অর্থ বিত্তে যেন ফুলে ফেপে উঠেছেন তিনি। নগরীতে বহুতল বিশিষ্ট দুটি বাড়ি ও গাড়ির মালিক হয়েছেন তিনি। এছাড়া রাজধানীসহ একাধিক স্থানে নামে বেনামে স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি অর্জনের বহু অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একাধিক সময় গনমাধ্যমে এ বিষয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। অথচ বিভিন্ন সভা সেমিনারে একাধিকবার নিজেকে ও হাসপাতালকে অনিয়ম ও দূর্নীতি মুক্ত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন হাসপাতাল পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন। নগরীর সুশীল সমাজ বলছে মুখে এক কথা বলে ভিতরে ভিতরে হাসপাতালের প্রতিটি কোনে কোনে অনিয়ম দূর্নীতি প্রবেশ করিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। এক অর্থ বছরে হাসপাতালে এত বড় দূর্নীতির দায় হাসপাতাল পরিচালক কোন ভাবেই এড়াতে পারেন না বলে মন্তব্য সুশীল সমাজের।
বিভিণœ অভিযোগে করোনার প্রারম্ভে পরিচালক বাকির হোসেনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলী করেছিলো স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়। কিন্তু করোনার মূহুর্ত বিবেচনায় তা স্থগিত করে মন্ত্রনালয়।
তথ্য মতে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান অডিট অধিদপ্তরের ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের অডিটে ১৭ টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বড় স্বাস্থ্য খাতের বড় ৪ টি দপ্তরে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতির তথ্য উঠে আসে। যার মধ্যে অন্যতম স্থানে রয়েছে শেবাচিম হাসপাতাল। রিপোর্টে বলা হয় এসব অনিয়ম দূর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তিদের কেউ কেউ সরাসরি জড়িত। আবার অনেকে পরোক্ষভাবে অনিয়ম-দুর্নীতিতে সায় দিয়েছেন। দায়ীদের চিহ্নিত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তাব্যক্তিদের চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ অডিট অধিদপ্তর।
শেবাচিম হাসপাতালের অনিয়ম দূর্নীতির রিপোর্টে বলা হয় আর্থিক ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে ক্রয়চুক্তি অনুমোদন করায় নিয়ম বর্হিভূত ভাবে ব্যয় করা হয় ৪ কোটি ৫৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। আমদানির পক্ষে কোনো রেকর্ড-পত্রগ্রহণ না করা সত্ত্বেও ভারী যন্ত্রপাতি সরবরাহ বাবদ ঠিকাদারকে জালিয়াতির মাধ্যমে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়। এমএসআর কেমিক্যাল রি-এজেন্ট বাজারমূল্য অপেক্ষা অতিরিক্ত দরে পরিশোধ করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি ১৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা। স্পেসিফিকেশন বহির্ভূত এমএসআর ওষুধ ও সার্জিক্যাল টেপ ক্রয়ে আর্থিক জালিয়াতি ১ কোটি ১৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। অতিরিক্ত দরে ব্রয়লার মুরগির মাংস ক্রয়ে আর্থিক ক্ষতি ৬০ লাখ ৫৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ। পণ্য খাতে রোগী অপেক্ষা পাউরুটি, কলা ও ডিম সরবরাহ দেখিয়ে ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা আত্মসাৎ। বেড সংখ্যা অপেক্ষা অধিক রোগীর পথ্য দেখিয়ে ১ কোটি ৮২ লাখ ৭৭ হাজার টাকা অতিরিক্ত পরিশোধ। এ ছাড়া অন্যান্য খাতে ৬৫ কোটি ৭৩ লাখ ৭০ হাজার ৮৯৬ টাকার গুরুতর অনিয়ম হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT