সাত লাখ টাকা বাজেটের পূজো এবার দেড় লাখে ! সাত লাখ টাকা বাজেটের পূজো এবার দেড় লাখে ! - ajkerparibartan.com
সাত লাখ টাকা বাজেটের পূজো এবার দেড় লাখে !

3:03 pm , October 12, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে এবারে বরিশালে বেশ সাদা মাটা ভাবেই আয়োজিত হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা। ২২ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে পূজোর আনুষ্ঠানিকতা। এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় দেবীপক্ষ। তবে এবারের পূজোতে আলোকজ্জ্বল হবে না বরিশাল নগরী। প্রতিবছর টানা ১৫ দিন রঙ বেরঙের আলোক ও সাজসজ্জ্বায় মুখোরিত থাকে বরিশাল। কিন্তু এবারের পূজোটা হবে পুরোপুরি ভিন্ন আদলে। থাকবেনা এসব কিছুই। খুব সাধারণ ভাবেই অনুষ্ঠিত হবে এবারের পূজো, রবে না প্রতিযোগিতা আর জাঁকজমকতা। এমনটাইজানিয়েছেন বরিশালের পূজো মন্ডপগুলোর নেতৃবৃন্দ। বলেছেন, পূজোর বাজেট কয়েকগুন কমিয়ে আনা হয়েছে। করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিক অবস্থা সংকটাপন্ন থাকায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে অধিকাংশ পূজো মন্ডপগুলো। বরিশালের সর্ববৃহৎ মন্দির ও পূজো মন্ডপ শ্রীশ্রী শংকর মঠ। এখানেও প্রভাব পরেছে করোনা মহামারির। এখানকার নেতৃবৃন্দও বলছেন এবারে সকলেরই অর্থনৈতিক সংকট বেশ ভালোই রয়েছে। তাই তেমন আয়োজন সম্ভব না এবারে। শ্রী শ্রী শংকর মঠ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কিশোর কুমার দে ও সাধারণ সম্পাদক লিমন কৃষ্ণ সাহা কানু জানান, আমাদের বড় উৎসব হিসেবে বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালেও বেশ জাঁকজমক ভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো শারদীয় দুর্গাপূজা। মূল সড়কে আলোকসজ্জ্বা সহ প্রতীমা ও সাজসজ্জ্বা মিলিয়ে আমাদের খরচ হয়েছিলো ৭ লক্ষ টাকা। কিন্তু এবারে তা পুরোটাই ভিন্ন এই সার্বজনীন মন্দিরটিতে। করোনা মহামারির কথা বিবেচনা করে এবং বলতে গেলে প্রায় সকলেরই অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়ায় আমাদের এবারের বাজেট বেশ কমিয়ে আনা হয়েছে। মাত্র দেড় থেকে দুই লাখ টাকার মধ্যে এবারের পূজো সম্পন্ন করার টার্গেট নিয়েছি আমরা। যেখানে প্রতীমা তৈরীতে প্রায় দেড়লাখ টাকা বাজেট ধরা হয় সেখানে এবারে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে প্রতীমা তৈরী করা হচ্ছে। প্রতিবছর সহ¯্রাধিক মানুষ অষ্টমী পূজোর দিন এই মন্দিরে মহাপ্রসাদ গ্রহণ করে থাকেন। তবে এবারে করোনা মহামারির কারণে তাও বাতিল করা হয়েছে। বলতে গেলে পুরো সাদা মাটা ভাবেই আয়োজিত হবে শারদীয় দুর্গা পূজা। একই কথা বলছেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ নেতা ও নগরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরের সদস্য গোবিন্দ সাহা। তিনি বলেন, করোনা মহামারির কারণে এবারের পূজো অনেকটা সংকুচিত করা হয়েছে। আয়োজনও কমিয়ে আনা হয়েছে অনেকটা। গতবছর এমনদিনে ব্যস্ততা কাটিয়েছে সকল পূজা মন্ডপগুলো। কিন্তু এবারে নিস্তেজ পুরোপুরি। অনেক জায়গাতেই পূজানুষ্ঠান ব্যতিত কিছুই হবে না। আবার অনেক জায়গায় এবারে প্রতীমাই তৈরী করা হয়নি, সেখানে ঘট পূজোর আয়োজন করা হয়েছে। সবকিছুর মূল বিষয় হচ্ছে এবারে মানুষ অর্থনৈতিক সমস্যায় রয়েছে। আর করোনা মহামারি যাতে ব্যাপকতা না ছড়াতে পারে তাই এমন আয়োজন বলে দাবী এই ব্যক্তির। নগরীর ব্যয়বহুল পূজা মন্ডপ পাষানময়ী কালিমাতার মন্দির। পুকুরের মধ্যে মন্ডপ তৈরী করা হয় এই মন্দিরে। এই মন্ডপ কমিটির কয়েকজন সদস্য এবং মহানগর পূজা মন্ডপ ফলপট্রির সদস্যরাও বলছেন অর্থনৈতিক সংকটের কথা। বাজেট কমানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন এই দুই মন্ডপের কয়েকজন নেতা। সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন পূজা মন্ডপে গিয়ে একই চিত্র দেখা গেছে। তেমন কোনো আয়োজন নেই কারোই। সবার মুখে একই কথা ‘বাজেট কম’। বরিশাল মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুরঞ্জিৎ দত্ত লিটু জানান, এবারে সকল পূজা মন্ডপেই আয়োজনে তেমন রঙ নেই। অবশ্য তা থাকার কথাও না। যে মহামারি শুরু হয়েছে তা থেকে পরিত্রান না পাওয়া পর্যন্ত স্বাভাবিক হবে না কোনো কিছুই। ইতিমধ্যে আমরা সব পূজা মন্ডপের নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি। মন্ডপে যারা আসবে তাদের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চয়তা, মাস্ক পরিধান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের বিষয়টিই এবার কঠোর ভাবে দেখার জন্য নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। তিনি বলেন, সব মন্দিরেই এবারে বাজেট বেশ কমিয়ে আনা হয়েছে। করোনার কারণে অর্থনৈতিক সমস্যায় ধনী গরীব সবাই রয়েছেন। আয়োজন কমতি হওয়ার কারণ এটাই বলে আমি মনে করি। বরিশাল জেলা ও মহানগর মিলিয়ে এবারে ৬১৭টি মন্ডপে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। মহানগরে ৪২টি এবং বাকিগুলো জেলায় অনুষ্ঠিত হবে। জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি পূজা অনুষ্ঠিত হবে আগৈলঝাড়া উপজেলায় (১৫৭টি)। ২২ অক্টোবর দুর্গা দেবী ষষ্ঠীপূজার মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে দুর্গা পূজার এবং শেষ হবে ২৬ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে মা দুর্গার বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে।##

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT