3:02 pm , October 7, 2020
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কোটালীপাড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত স্বজনহীন প্রতিবন্ধি এক বৃদ্ধাকে দীর্ঘদিন সেবা প্রদানের মাধ্যমে সুস্থ করে তুলে আগৈলঝাড়ার প্রতিবেশীদের হাতে হস্তান্তর করে মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন চিকিৎসক সুশান্ত বৈদ্য। ১০ দিন চিকিৎসা প্রদান শেষে মঙ্গলবার রাতে পয়ষট্টি বছরের প্রতিবদ্ধি ওই বৃদ্ধাকে আগৈলঝাড়ার পশ্চিম সুজনকাঠী গ্রামের তার প্রতিবেশী ও বংশের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করেছেন কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ডা. সুশান্ত বৈদ্য। ডা. সুশান্ত বৈদ্য জানান, গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পরে কোটালীপাড়ায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন পয়ষট্টি বছরের ওই বৃদ্ধা। তাকে উদ্ধার করে কোটালীপাড়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নাম ঠিকানা কিছুই জানা জায়নি তার কাছ থেকে। ঘটনার দিন থেকে ওই বৃদ্ধার চিকিৎসা প্রদানের পাশাপাশি খাবারসহ সার্বিক তত্বাবধান করেন তিনি। একটু সুস্থ হবার পরে একেক সময় একেক নাম ঠিকানা জানিয়েছেন ওই বৃদ্ধা। মঙ্গলবার শারিরীক প্রতিবন্ধি ওই বৃদ্ধা তাকে জানিয়েছেন তার নাম ঊষা সরকার। স্বামীর নাম কৃষ্ণ কান্ত সরকার, বাড়ি আগৈলঝাড়ায়। ডা. সুশান্ত তার স্বাস্থ্য সহকারী প্রদীপ অধিকারীকে খুঁজে বের করতে বলেন বৃদ্ধার ঊষার বাড়ি ঘরের। প্রদীপ আগৈলঝাড়ায় স্বাস্থ্য সহকারী সিঞ্চন বাড়ৈর মাধ্যমে ঊষার ঠিকানার সন্ধান পান আগৈলঝাড়ার পশ্চিম সুজনকাঠী গ্রামে তার বাড়ির। স্বামী মারা গেছেন অনেক আগেই। অনেক আগে ছেলেও মারা গেছে অনাকাঙ্খিত এক ঘটনায়। ঊষার একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন পাশ্ববর্তি উজিরপুর উপজেলায়। মা ঊষা রানী নিখোঁজের পর থেকে মেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পরেছে। তাই বৃদ্ধার নির্ভরযোগ্য প্রতিবেশীদের খুজে বের করলেন ডা. সুশান্ত। মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স করে ঊষা রানী ও কোটালীপাড়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাওন সিকদার টুটুল, ডা. সবুজ বিশ্বাস ও এক আয়াকে সাথে নিয়ে আগৈলঝাড়ায় পৌঁছান ডা. সুশান্ত। আগৈলঝাড়ায় পৌঁছে ঊষার জন্য আগে থেকেই অপেক্ষমান প্রতিবেশী নিত্যানন্দ মজুমদার, রমনী কান্ত সরকার, সৈকত মন্ডল দীপুসহ স্থানীয় লোকজনের কাছে হস্তান্তর করেন ঊষাকে। বৃদ্ধা ঊষার প্রতিবেশী নিত্যানন্দ মজুমদার, রমনী কান্ত সরকার, সৈকত মন্ডল দীপু জানান, ঊষার শারিরিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি সে মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই চিকিৎসকদের কাছে তার সঠিক নাম পরিচয় জানাতে পারেনি। দীর্ঘ ১০দিন হাসাতালে রেখে চিকিৎসা প্রদানের পাশাপাশি ঊষার সার্বিক তত্বাবধান করে খোঁজ করে তাদের হাতে তুলে দেয়ায় ডা. সুশান্ত বৈদ্য মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিছেন তারা।