2:48 pm , October 7, 2020
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ এসো বোন-এসো ভাই ধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলি, ধর্ষকদের বিরুদ্ধে চল চল ছাত্র-জনতা আরেকবার যুদ্ধে যাই, মুক্তি যুদ্ধের বাংলায় ধর্ষকদের স্থান নাই। বিভিন্ন বানি লেখা প্লেকার্ড নিয়ে ও শ্লোগানে শ্লোগানে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতিবাদী মানববন্ধন কর্মসূচী পালনের মধ্যে নগরী উত্তাল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ নগরীর বিভিন্ন কলেজের সাধারন শিক্ষার্থী, গণসংহতি আন্দোলন, ছাত্র ফেডারেশন ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। গতকাল বুধবার দ্বিতীয় দিনে নগরীর প্রাণ কেন্দ্র সদর রোডে পৃথকভাবে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থী আদনান তুর্য, আজমান সামিদ, নাছিফ মেসকাতসহ বরিশাল বিএম কলেজ শিক্ষার্থী মাসরুফ, সিফাত ও মুনার নেতৃত্বে বিভিন্ন কলেজের ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীরা সদর রোডে ধর্ষকদের বিচারের দাবী জানিয়ে বিভিন্ন বানি লেখা সংবলিত প্লেকার্ড নিয়ে প্রতিবাদি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এ সময় বলেন, সরকার প্রধান একজন নারী। দেশে নারীদের ক্ষমতায়নে উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। কিন্তু তার দলের ছাত্রলীগ-যুবলীগের হাত থেকে নারীদের ইজ্জত রক্ষা নিশ্চিত করতে পারেনি। পরে তারা বৃষ্টি উপেক্ষা করে নগরীর বিভিন্ন সড়কে নারীদের নিরাপত্তা রক্ষা করা সহ ধর্ষকদের বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল প্রদক্ষিণ করে। একই সময় অশ্বিনী কুমার টাউন হল চত্বরের সামনে ধর্ষকদের দৃষ্টন্ত মূলক শাস্তি ফাঁসির প্রত্যশা করে গণসংহতি আন্দোলন বরিশাল শাখার ছাত্র ফেডারেশনের সদস্যরা রাস্তায় বসে দিনব্যাপি অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
অপরদিকে বেলা ১২টার দিকে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বরিশাল জেলা শাখা নগরীর ফকিরবাড়ি দলীয় কার্যালয় থেকে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে এসে প্রতিবাদী সমাবেশ করে। বাসদ বরিশাল জেলা শাখার আহবায়ক ইমরান হাবীব রুমনের সভাপতিত্বে সমাবেশে একাত্বতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বরিশাল মহিলা পরিষদ সাধারন সম্পাদিকা পূস্প চক্রবর্তী, বাসদ জেলা সদস্য সচিব ডাঃ মনিষা চক্রবর্তী, সাংস্কৃতিক সদস্য অপূর্ব রায়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সদস্য মিথুন, মারিয়া সহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সদস্যরা।
এসময় তারা বলেন, গত ৮ মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরকারের দলীয় অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হাতে সর্বশেষ সিলেটের এমসিসি কলেজ সহ ৮শত ৮৯ জন নারী ধর্ষনের শিকার হয়েছে। অন্যদিকে সরকারের স্বরাস্ট্রমন্ত্রী একটি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রধান নির্লজ্জভাবে বক্তব্য দিয়ে দেশের মানুষকে হতাশ করে ঘৃন্যতার পরিচয় দিয়েছে।
অপরদিকে বরিশাল বিশ্ব বিদ্যালয়ে (ববি)
প্রতিকী বিবস্ত্র মানববন্ধন করেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে হাফ প্যান্ট ও গেঞ্জি (স্লিভলেস) পরে এই মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন তারা। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। আমরা চাই ধর্ষণ বন্ধ হোক, সেইসাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর অতিদ্রুত বিচার ও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি নিশ্চিত হোক। তাই দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ধর্ষনের ঘটনার বিচার ও সর্বোচ্চ সাজার দাবি জানাচ্ছি। মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি রেজা শরীফ বলেন, গোটা দেশে আজ বিবস্ত্রকরণ ও ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে চলছে। এর প্রতিবাদে হাফ প্যান্ট ও গেঞ্জি পরে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছি। যেখানে প্রতিবাদী বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্লাকার্ড দিয়ে লজ্জা ঢাকার চেষ্টাও করা হয়েছে। আবার অনেকে ছেড়া গেঞ্জি পরেও প্রতিবাদ জানিয়েছে। অপরদিকে, ধর্ষনের প্রতিবাদে নগরীতে সাইকেল র্যালি করেছে একদল তরুনী। লাল সবুজ সোসাইটির আয়োজনে সকাল সাড়ে ৯টায় অশ্বিনী কুমার হল চত্বর থেকে এই র্যালী বের করা হয়। বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের ১৬ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহনে র্যালিটি সদর রোড, হাসপাতাল রোড, সিএন্ডবি রোড হয়ে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় তারা পিঠে প্রতিবাদী বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্লাকার্ড শোভা পায়। পরে সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পাদদেশে সাধারণ নারী ও পুরুষের অংশগ্রহনে ধর্ষনের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করে অংশগ্রহন করে ওই তরুনীরা। মানববন্ধনে বিভিন্ন পেশার মানুষদের পাশাপাশি, প্রতিবন্দি নারী ও লাল সবুজ সোসাইটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারীরা জানান, কোন আহবান নয়, যার মনে হয়েছে ধর্ষনের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানো প্রয়োজন, প্রতিবাদ করা উচিত তারাই এখানে অংশগ্রহন করেছে।