3:11 pm , October 5, 2020
আগৈলঝাড়া প্রতিবেদক ॥ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজা। অ-সাম্প্রদায়িক চেতনার উর্বর ভূমি বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সকল ধর্মের লোকজনের অপূর্ব মিলন মেলায় অনুষ্ঠিত হবে পাঁচ দিন ব্যাপি দুর্গোৎসব। তাই পুজার আয়োজনের মধ্যে প্রধান উপকরণ ও মন্দিরের অন্যতম আকর্ষণ দেবী দূর্গার প্রতিমা তৈরীতে এখন মহাব্যস্ত মৃৎ শিল্পীরা। করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে কেন্দ্রীয় পুজা উদযাপন পরিষদের ২৬দফা শর্ত মেনে অন্যান্য বছরের মতো এবছরও দেশের সবচেয়ে বেশী পুজা মন্ডপে আয়োজন চলছে আগৈলঝাড়া উপজেলা। উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিপুল দাস জানান, বৈশ্বিক মহামারি করোনার মধ্যেও গত বছরের চেয়ে এ বছর উপজেলায় তিনটি পুজা মন্ডপে বেশী আয়োজনের মধ্য দিয়ে মোট ১৫৮টি পুজা মন্ডপে শারদীয় দূর্গা পুজা মন্ডপে প্রতিমা তৈরী হচ্ছে। সূত্র মতে, এ বছর রাজিহার ইউনিয়নে ৪৭টি, বাকাল ইউনিয়নে ৩৯টি, বাগধা ইউনিয়নে ২৩টি, গৈলা ইউনিয়নে ২৫টি ও রতœপুর ইউনিয়নে ২৪টি পুজা মন্ডপসহ সর্বমোট ১৫৮টি মন্ডপে প্রতীমা নির্মানের কাজ চলছে। কেন্দ্রীয় পুজা উদযাপন পরিষদের ২৬ দফা শর্ত অনুযায়ি ধর্মীয় রীতি-নীতি মেনে বাহ্যিক সকল প্রকার আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই এবছর পুজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন হিন্দু নেতৃবৃন্দ। কোথাও আয়োজন থাকবে না কোন আলোকসজ্জা, সাউন্ডবক্স ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। ২৬ দফার শর্ত অনুযায়ি পুজারী, ভক্ত আর দর্শনার্থীদের প্রত্যেককে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাধ্যতামুলক মাস্ক ব্যবহার করে মন্দিরে প্রবেশ করতে হবে। দীর্ঘ সময় পুজা মন্ডপে অবস্থান না করা ও নারী পুরুষ পৃথক পথ ব্যবহার করে মন্দিরে প্রবেশ ও বের হতে হবে। প্রতিমা তৈরীর মৃত শিল্পী উপজেরার পাল পাড়ার বাসিন্দা শিব শংকর পাল, সুদেব পাল, জয়দেব পাল, জয়দেব পালের ছেলে সঞ্জয় পালসহ মৃৎ শিল্পীরা জানান, এ বছর জামজমকপূর্ণ পুজা না হলেও অন্যান্য বছরের মতো এবছরও সকল পুজা মন্ডপে পুজা অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তারা। এ বছর সাউন্ড সিস্টেম ব্যবসায়ি, লাইটিং, মিউজিক ম্যান ও ড্যান্স শিল্পীরা কোথাও পুজায় আগাম বায়না না পেয়ে অলস সময় কাটাচ্ছেন। এবছর তার বিপরীত চিত্রে চরম আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে ঘরে বসে সময় কাটাতে হচ্ছে উল্লেখিত শিল্পী ও ব্যবসায়িদের। পঞ্জিকা মতে, ২২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ষষ্ঠী পুজার মধ্য দিয়ে দেবীর নবপত্র কল্পারম্ভ, ওইদিন মন্ডপে মন্ডপে বেঁজে উঠবে ঢাক-ঢোল আর কাঁসরের বাজনার শব্দ। ২৩ অক্টোবর শুক্রবার সপ্তমী পূজা, ২৪ অক্টোবর শনিবার মহাঅষ্টমী পুজা, ২৫ অক্টোবর রোববার মহানবমী পূজা ও ২৬ অক্টোবর সোমবার দশমী বিহিত পুজা ও দশহরার মধ্য দিয়ে পাঁচ দিন ব্যাপি শারদীয় দুর্গা পুজার সমাপ্তি ঘটবে। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন বলেন, অ-সাম্প্রদায়িক উপজেলা হিসেবে পরিচিত আগৈলঝাড়ায় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বাস্তবায়নসহ পুজা শুরু থেকে প্রতিমা বিসর্জন পর্যন্ত মন্ডপগুলোতে নিরাপত্তার জন্য গুরুত্ব বিবেচনা করে তিন ভাগে ভাগ করা হবে। প্রত্যেক পুজা মন্ডপে সম্প্রীতি কমিটি গঠনের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। পুজা মন্ডপের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দল কাজ করার সাথে আইন-শৃংখলা রক্ষায় পুলিশ, পুরুষ-মহিলা আনসার, র্যাব ও সাদা পোশাকধারী পুলিশ নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে।