বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ম্যুরাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ম্যুরাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ - ajkerparibartan.com
বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ম্যুরাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ

3:38 pm , September 28, 2020

আমি দূর্নীতি করি না দূর্নীতিকে প্রশ্রয়ও দেই না

জুবায়ের হোসেন ॥ “শেখ হাসিনা বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার স্নেহের কন্যা গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যকার ভালোবাসা ফুটিয়ে তোলার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় তৈরি করা হয়েছে দেশের সর্ববৃহত এই ম্যুরাল।” ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে দেশের সর্ববৃহৎ ম্যুরাল উদ্বোধন শেষে কথা গুলো বলেন, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সম্মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ূ কামনা করে দোয়া মোনাজাত শেষে এই ম্যুারাল উদ্বোধন করেন তিনি। বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের সকল নেতৃবৃন্দসহ বরিশালের সর্বস্তরের জনগনের অংশগ্রহনে এই দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক কল্যান কামনা করে বরিশালের জনগনের উদ্দেশ্যে বলেন “আপনাদের স্বপ্ন দেখতে হবে; বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো আমি আপনাদের সিটি মেয়র। বরিশাল সিটি কর্পোরেশন আপনাদের সম্পত্তি। আপনাদের জন্য সৃষ্টি হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের। আপনাদের প্রতিনিধি আমি শেষ দিন পর্যন্ত চেষ্টা করবো। মেয়র হিসেবেআমার সময় ৫বছর। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে”।

 

বর্তমানে বরিশালে সৃষ্ট নানা ধরনের সমস্যা কথা উল্লেখ করে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ আরো বলেন “বর্তমানে বরিশাল নগরীতে জোয়ারের পানি ওঠে। সমস্যা তৈরি হয়। আর এর দায়ভার মেয়রকেই নিতে হবে। কারন তিনি আপনাদের প্রতিনিধি। কিন্তু কেন এই জোয়ারের পানি ওঠে তা কি আপনারা কখনো চিন্তা করে দেখেছেন? আপনারা না করলেও মেয়র হিসেবে এই সমস্যার গোড়া উন্মোচন করেছি আমি। বন্ধ করেছি এই সমস্যা সৃষ্টির প্রধান কারন শহরের মধ্যে ড্রেজিং করে জলাশয় ভরাট করন। এছাড়াও নগরীর প্রতিটি ড্রেন ময়লা আবর্জনায় ভরাট হয়েও জলাবদ্ধতা তৈরি করেছে। প্রতিটি ড্রেন খুজে খুজে পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করি এই সমস্যা আর সামনে থাকবে না। আপনারা এখন না বুঝলেও আগামী ১০ বছর পর বুঝবেন আমি মূলত কি করেছি আপনাদের জন্য। আমি আপনাদের সেবক। আপনাদের জন্য করাই আমাদের কাজ। বর্তমানে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন বিগত দিনের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। দূর্নীতি কমানো চেষ্টা করার মাধ্যমে আমি সিটি কর্পোরেশনের মেরুদন্ড শক্ত করেছি। আমি নাছোরবান্দা লোক। এত সহজে হার মানার লোক আমি নই। আমার শহরের রাস্তাঘাট ভাঙা থাকবে না। লিপস্টিক মার্কা উন্নয়ন কাজ প্রতিনিয়ত করবো না আমি। আমি চাই টেকশই উন্নয়ন। তাইতো ৫বছরের গ্যারান্টি সহকারে সড়ক তৈরি করেছি। সিটি কর্পোরেশনের অধিকাংশ কাজ হচ্ছে কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে। এ সকল কাজের জন্য এখন পর্যন্ত কোন বরাদ্ধ আমার কাছে আসেনি। আমি আপনাদের মতো কাজ করে যাবো। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন আমার অর্থের প্রয়োজন নেই। শুধু মাত্র আমার শহরের উন্নয়ন কাজগুলো বাস্তবায়িত হলেই যথেষ্ট।” দূর্নীতির বিষয়ে সোচ্চার কণ্ঠে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমি আমার নিজের ঘরের লোককেও ছাড় দেইনি। আমি দূর্নীতি করি না। দূর্নীতিকেও প্রশ্রয় দেইনা। আপনারা যদি কখনো আমার দূর্নীতি দেখেন আমাকেও ছাড় দেবেন না। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে মান সম্মত জনবল এর ব্যবহার করে খুব শীঘ্রই নগরীর সকল সমস্যা সমাধান করা হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য একটি উন্নত শহর তৈরি করে যাবো। বরিশালের সন্তানেরা একদিন বরিশালেই কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। আমি আপনাদের প্রতিনিধি। আপনারা আমাকেই বলবেন অপনাদের কী প্রয়োজন। আমি জীবন থেকে শিখেছি তাই আপনাদের জন্য বাস্তবসম্মত সেবা আমি দিতে পারবো। আমাকে শুধু আপনারা সহায়তা করে যাবেন। আপনাদের সহায়তা পেলে সবকিছুই সম্ভব আমার পক্ষে। কারন জনগনতো বেশি কিছু চায় না।” বরিশালের শুরু হওয়া কিছু অসম্পূর্ন কাজের কথা উল্লেখ্য করে সিটি মেয়র বলেন, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের আগামী ১৬ই ডিসেম্বরের মধ্যে সকল অসম্পূর্ন কাজ সম্পূর্ন করার নির্দেশনা দিয়েছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে করতে না পারলে আমি এ্যাকশনে যাবো। সিটি কর্পোরেশনের মেরুদন্ড এখন শক্ত। আর মেয়র হিসেবে আমি কিছু চাইনা। আমি আপনাদেরই প্রতিনিধি। শেষ নিদ্রায় এই শহরে সায়িত হওয়ার স্বপ্ন আমার। তাই ভরসা রাখুন আমার উপরে। আমি কাপুরুষ না। আমি আপনাদের পাশেই থাকবো। কখনো পালিয়ে যাবো না। উন্নয়ন এর ধারা অব্যাহত রাখবো এবং আপনারাই আমাকে পুনরায় আপনাদের প্রতিনিধি হিসেবে বেছে নেবেন। বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রীর ৭৪তম জন্মদিন উদযাপন করেন নেতৃবৃন্দরা। ম্যুরাল উদ্বোধন উপলক্ষে রং-বেরংয়ের আতশবাজী ফুটানো হয়। এসময় নগরীর আকাশে একটি অন্যরকম পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পুরো নগরবাসী আনন্দ চিত্তে আতশবাজির বর্নিল আলোকছটা উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর সভাপতি এ্যাড: একেএম জাহাঙ্গীর হোসাইন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাড: তালুকদার মোঃ ইউনুস সহ মহানগর ও জেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং কাউন্সিলর বৃন্দ। এর পূর্বে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে দলীয় নেতা কর্মী ও অঙ্গ সংগঠনের উপস্থিতিতে মিলাদ ও দোয়া-মোনাজাত আয়োজন করা হয়। দোয়া-মোনাজাত পরিচালনা করেন জামে এবায়েদুল্লাহ মসজিদের খতিব আলহাজ্ব মাওলানা মীর্জা নুরুর রহমান বেগ। উল্লেখ্য রং-বেরংয়ের পাথর দিয়ে ৫০ ফুট উচ্চতার দৃষ্টিনন্দন ম্যুরালটির নির্মান কাজ শেষ করা হয়েছে ৪৫ দিন ও রাত পরিশ্রম করে। দলীয় নেতাকর্মীরা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের উপহার স্বরূপ দেশের সর্ববৃহৎ এ ম্যুরালটি নির্মাণ করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ম্যুরালটি নির্মিত হয়েছে। আর এটি নির্মাণের প্রধান উদ্যোক্তাও সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ ম্যুরালটির উচ্চতা ৫০ ফুট এবং চওড়া ৪০ ফুট। দৃষ্টিনন্দন এ ম্যুরালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বুকে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। দেখে মনে হয় এ যেন বাবার বুকে জড়িয়ে আছে আদরের মেয়ে শেখ হাসিনা। ম্যুরালের পেছন রয়েছে ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সভ্রমের বিনিময় অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সবুজ ও লালের মিশ্রণে জাতীয় পতাকার প্রতিকৃতি। বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়ামকে ঘিরে নির্মিত হয়েছে এ ম্যুরালটি। যার নকশা তৈরি করেছেন ঢাকার চারুকলার একটি দল। আর ম্যুরালের চিত্রটির রূপ দিয়েছেন চারুকলার শিল্পী রুদ্র। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, নবনির্মিত এ ম্যুরালটি ইতিহাস-ঐতিহ্যের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বরিশাল শহরকে জাগিয়ে তুলেছে। ম্যুরালটির চিত্র রূপকার চারুকলার শিল্পী রুদ্র বলেন, বিদেশী উন্নতমানের টাইলসের বিভিন্ন রঙ্গের টুকরা দিয়ে এটি চিত্রায়িত করা হয়েছে। চারজন সহযোগিকে নিয়ে দীর্ঘ ৪৫ দিন ও রাত পরিশ্রম করে এর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এটি হবে দেশে জাতির জনকের সবচেয়ে বড় ম্যুরাল। এরআগে এতো বড় ম্যুরাল দেশের অন্য কোথাও নির্মাণ হয়নি বলেও তিনি উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধুর কন্যার এ ঐতিহাসিক ম্যুরাল তৈরির জন্য বরিশালের মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিকসহ সকল অঙ্গনের সর্বস্তরের জনতা সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে সাধুবাদ জানিয়েছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT