3:01 pm , September 25, 2020
শাকিল আহমেদ, মঠবাড়িয়া প্রতিবেদক ॥ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার মিরুখালী বাজারের পরিচয়বিহীন মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী (৩৫) সড়কের ওপর বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে ফুট ফুটে এক ছেলে শিশুর জন্ম দিয়েছে। সড়কে ওপর অসহায় নারীর সন্তান প্রসবের বিষয়টি স্থানীয় নারী সাংবাদিক ইসরাত জাহান মমতাজ জানতে পেরে তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করে তিনি থানা পুলিশের সহয়তায় ঘটনাস্থল হতে প্রসূতি নারী ও নবজাতককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বর্তমানে মা ও সদ্যজাত সন্তান সুস্থ রয়েছেন বলে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফেরদৌস ইসলাম নিশ্চত করেছেন।হাসপাতাল ও স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অজ্ঞাত ওই নারী উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়ন বাজারে ঘোরাফেরা করছিল। বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে বাজারের সেতু সংলগ্ন সড়কের ওপর তিনি প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছিলেন। এ অবস্থায় সে সড়কের ওপর একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। স্থানীয় বৃদ্ধা লাইলী বেগম প্রসূতি মা ও সদ্যজাত শিশুটিকে তার বাসায় আশ্রয় দেন। পরে বাজারের পাহারাদার আবদুস সালাম স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা তুলে খাবার ও পোষক কিনে দেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঊর্মি ভৌমিককে অবহিত করলে তিনি থানা ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে প্রসূতি মা ও শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মা ও সদ্যজাত শিশুর স্বাস্থ্য সেবা, ঔষধ পত্রসহ চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। শুক্রবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঊর্মি ভৌমিক শিশুটির খোজ খবর নেন এবং শিশুর দুধ, খাদ্য, কাপড়সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করে দেন। এসময় শিশুটির নাম রাখা হয়েছে পথিক। অনেকেই শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফেরদৗস ইসলান জানান, প্রসূতি মা মানসিক ভারসাম্যহীন। হাসপাতালে ভর্তির প্রসূতি মা ও সদ্যজাত শিশুর যথাযথ চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে প্রসূতি মা ও শিশটি সুস্থ রয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঊর্মি ভৌমিক জানান, অজ্ঞাত অসহায় মা ও শিশুটির দায়িত্ব এই মুহুর্তে রাষ্ট্রের। তাদের পরিচয় উদঘাটন করা যায়নি । সমাজ সেবা দপ্তরের মাধ্যমে তাদের বরিশাল এর আগৈলঝাড়া সেফ হোমে পাঠানো হবে। সেফ হোমে শিশটি প্রতিপালন হবে সেই সাথে মানসিক মায়ের চিকিৎসারও উদ্যোগ নেওয়া হবে। পরবর্তীতে অভিভাবক যদি আসে বা কেউ দত্তক নিতে চায় আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে দেয়া হবে।