3:31 pm , September 23, 2020
শামীম আহমেদ ॥ পাঠকের অভাবে বরিশাল সরকারি গণ গ্রন্থগারের সেলফে পড়ে রয়েছে প্রায় লাখো বই। নিত্য নতুন নামী দামী লেখকের বই এসে সেলফে জমা হয়। কিন্তু গত ৬ মাসে কোন পাঠক পায়নি এসব বই। সেলফে বইয়ের সাড়ি আর চেয়ার সাজানো রয়েছে পরিপাটি। পাঠকের অভাবে হাতেগোনা কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মস্থলে হাজিরা দিয়ে সময় পার করছেন। গণ গ্রন্থাগার ভবনের বাহিরে জরাজীর্ণ হলেও ভেতরের চিত্রটা সম্পূর্ন ভিন্ন। পরিপাটি করে সাজানো রয়েছে নামি দামী লেখকের গল্প, উপন্যাস, কবিতা সহ বিভিন্ন ধরনের দেশ-বিদেশের বই। রয়েছে শিশুদের জন্য গল্প, কবিতা ও জ্ঞানভিত্তিক বিভিন্ন বই। পাশাপাশি বিজ্ঞান ভিত্তিক মেধা বিকাশের কোডিং ট্রয় ব্রিজ খেলার সরঞ্জাম রয়েছে। এখানে আরো রয়েছে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা।
সুত্র জানিয়েছে, স্থাপনের গত ১৪ বছরের এই সরকারী গণ গ্রন্থগার লাইব্রেরীতে বিভিন্ন সময়ে জমা হয়েছে ৮০ হাজার ১৩টি বই। যে হারে লাইব্রেরীতে বই এসে জমা হয়েছে সেই হারে পাঠক বাড়েনি। শুধু মাত্র চাকুরির সন্ধান প্রার্থীরা এসে দৈনিক ও চাকুরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত পত্রিকা দেখে চলে যায়। শুধুমাত্র এই লাইব্রেরী ভবনটি আনন্দে-ফূর্তিতে খেলাধুলার মাধ্যমে মাতিয়ে রাখেন পাঠক শিশু সদস্যরা। তবে এখানে যে পরিমান জানাশোনা ও জ্ঞানের পড়ার মত বই রয়েছে শুধু প্রচার-প্রচারনার অভাবে বই প্রেমিকের সংখ্যা তেমনভাবে বাড়েনি ।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিএম কলেজের বিপরীতে তিনতলা বিশিষ্ট সরকারি গণগ্রন্থগার ভবন উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বিভিন্ন সময়ে পাঠকদের জন্য বই আনা হলেও কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ছাড়া তেমন কোন পাঠকের পা পড়েনি।
অপরদিকে বই পড়ার পিছনে সময় নষ্ঠ না করে এক শ্রেণির শিক্ষিত বেকার যুবক ছেলে-মেয়েরা পত্র-পত্রিকার চাকুরীর তথ্যের সন্ধান করেন।
অন্যদিকে শুধু তৃতীয় তলায় শিশুদের জন্য বই পড়ার পাশাপাশি তাদের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান অর্জনের জন্য রাখা আছে কোডিং ট্রয়ব্রিজ খেলার সরঞ্জাম। গণ গ্রন্থাগারের রেজিষ্টার জানায়, গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ১০ হাজার পাঠক আসে।
এ ব্যাপারে বরিশাল সরকারি গণগ্রন্থগারের সহকারি পরিচালক খালিদ মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, ভবনের বাহিরটা জরাজীর্ণতার মত কিন্তু ভিতরের সকল কিছুই ঠিক আছে। ভবনের বাহিরটা কাজ করার জন্য ইতি মধ্যে গণপূর্ত দপ্তরের সাথে কথা হয়েছে শিঘ্রই কাজ করবেন তারা।
এছাড়া এখানে বই পড়ার জন্য অত্যন্ত নিরিবিলি শান্ত পরিবেশ রয়েছে। আমারা তিন শিফটে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেয়া সহ সকল পাঠকের সাথে মতবিনিময় করে থাকি।
এছাড়া আমরা এখানে শিশুদের জন্য সাধারন জ্ঞান, বিজ্ঞান রেফারেন্স পাঠক তৈরী করার কাজ করে যাচ্ছি। এখানে গড়ে প্রতিদিন ৮০ জন শিশুর উপস্থিতি রয়েছে বলে তারা দাবী করেন।
অন্যদিকে বই পাঠকের চেয়ে তরুন চাকুরী প্রত্যাশি ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বেশি বলে তার মনে হয়। তবে যেহেতু সামনে বিএম কলেজের ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে তারাও বই পড়তে আসে কিন্তু এর সংখ্যা বেশি নয়।
তিনি আরো বলেন, গণগ্রন্থাগারের প্রচার-প্রচারনা একটু কম থাকার কারনেই হয়ত পাঠকের সংখ্যা কম হচ্ছে। সামনে যাতে এর সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করা যায়। গ্রন্থাগার খোলা হলে তা করা হবে।
অপরদিকে গণগ্রন্থাগারে সহকারী পরিচালক, হিসাব রক্ষক ও বুক সার্টারের পদ শুন্য রয়েছে। এখন মাত্র ১৫ জন জনবল নিয়ে এই গণগ্রন্থাগারটি পরিচালিত হচ্ছে।