3:11 pm , September 7, 2020
সাঈদ পান্থ ॥ বাকেরগঞ্জ উপজেলার গারুরিয়া ও কলসকাঠি ইউনিয়নের সংযোগ সড়ক তালুকদার বাড়ি সড়ক। এই ৫ কিলোমিটার সড়কের প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা মাটির। তাই বছরের প্রায় অর্ধেক সময় হাটু কাদাঁ পানি থাকে। এই রাস্তা থেকে প্রতিদিন হাজারো মানুষের যাতায়েত। এই সড়কে হাটতে গিয়ে প্রতিদিন নাকানিচুবানি খাচ্ছে ুই ইউনিয়নবাসী। কিন্তু এই নিয়ে মাথা ব্যথা নেই ুই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের। এই রাস্তা থেকে চলাচল করা বেসরকারি সংস্থার চাকুরিজীবী শারমিন লুনা ও হান্নান মৃধা বলেন, এই রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই পরে যেতে হয়। কোন গাড়ি নিয়েও চলাচল করা যায় না। কিন্তু জনপ্রতিনিধিরা দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন। স্থানীয়রা জানান, এই উপজেলার (আসন বরিশাল-৬) সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির নেতা। যার কারণে তিনি কাজ আনতে পারছে না। উন্নয়নও লাগছে না এখানে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলে, ভোট এলে আমাদের কদর বাড়ে, কিন্তু ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর আর তাদের দেখা পাওয়া যায় না। এলাকার উন্নয়ন হয় না, শুধু তাদের নিজেদের উন্নয়ন ঘটে। মুলত তারা নির্বাচনে জয় লাভ করানোর জন্যই নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। এবিষয়ে গারুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এএসএম জুলফিকার হায়দার ও উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল আলম চুন্নু’র সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধবী রায় বলেন, প্রাচীনতম ইউনিয়ন কলসকাঠির এই সড়কটি মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে। এ বিষয়ে আমি কয়েকবার জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় এই সড়কের বিষয়টি তুলেছি। খুব শীঘ্রই এর একটি সুরাহা হবে। একইভাবে উপজেলার রঙ্গশ্রী, ভরপাশা, কবাই, ুলসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে গ্রামীন কাঁচা রাস্তার কারণে ুর্বিসহ জীবনযাপন করছে। জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের ক্ষিণ পাংশা গ্রামের গজালিয়া নূরানী তালিমুল কুরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসার পাশ থেকে ৫৬নং ক্ষিণ পাংশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাও কাঁচা। জন-গুরুত্বপূর্ণ প্রায় ৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার কারণে ুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, কাঁচা এই রাস্তাটি বৃষ্টিপাতের কারণে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে কাঁদামাটিতে একাকার হয়ে যায়। ঘন বর্ষার সময় পানি-কাদায় শিশু ও বয়স্কদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে এ রাস্তা। ফলে স্বাভাবিকভাবে চলাচলের আর উপায় থাকে না। বর্ষাকালে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন ক্ষিণ পাংশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ক্ষিণ পাংশা হাফিজিয়া মাদ্রাসা, মাধবপাশা হাইস্কুল ও কলেজ, ব্রাক শিশু কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীরা ও গ্রামের হাজার হাজার লোক চলাচল করে। বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে, পাংশা এলাকায় অবস্থিত কমিউনিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যেতে হলে রোগিদের কর্দমাক্ত রাস্তাটি পাড়ি দিতে হয়। যার রুন, অনেকেই চিকিৎসা সেবা নিতে কমিউনিটি ক্লিনিকে যেতে পারেন না। ৭ নং ওয়াডের্র বাসি›া আ: গফুর শরীফ, খলিল মৃধা, আলাউদ্দিন শরীফ জানান, ৪০বছরেও এই ৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তায় এক ডালি মাটিও পড়েনি। বর্ষাকালে এ রাস্তায় কর্দমাক্ততার কারণে হাঁটাও ায়। তবুও কর্দমাক্ত পিচ্ছিল এ রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে। হাবিবুর রহমান নামে এই এলাকার বাসি›া জানান, কর্দমাক্ত রাস্তা পাড়ি দিয়েই হাট-বাজারে যেতে হয় তাদের। তবে স্থানীয় বেশ কয়েকজন বাসিন্দা নিজেদের টাকা খরচ করে রাস্তাটির কিছু কিছু স্থানে ইটের খোয়া ও সুরকি বিছিয়ে কাদাপানি কমানোর চেষ্টা করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা আলী হোসেন শরীফ জানান, নির্বাচন এলেই জন প্রতিনিধিরা এ রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু নির্বাচনের পরে আর কেউ এর খোঁজ রাখেন না। এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, নেতা আসে নেতা যায়; কিন্তু এ রাস্তা পাকা হয় না। বর্ষা এলেই প্রতিবছরই এ রাস্তা দিয়ে চলাচলায় বন্ধ হয়ে পড়ে। হাঁটুসমান কাদাঁমাটি পেরিয়েই এ রাস্তা পাড়ি দিয়ে যেতে হয় তাদের। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে রাস্তার অবস্থা এতই খারাপ হয় যে, এই ুই-তিন মাস স্কুল-কলেজে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা ঠিকমতো প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না। জনপ্রতিনিধি বলায় কিন্তু বদলায় না আমাদের এলাকার ুর্ভোগের চিত্র। ফলে এ এলাকার চাষীরা উৎপাতি ফসল বাজারজাত নিয়েও পড়েন বিপাকে। এছাড়া কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে ্রুত কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে চিকিৎসাসেবা য়ো সম্ভব হয় না। মাধবপাশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জয়নাল আহমেদ জানান, একাদিকবার ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে রাস্তটি ষ্টিমেট করানো হয়েছে। টাকা পয়সা খরচ করতে পারিনি বলে টেন্ডারে আসছে না। তবে এই বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলার প্রধান প্রকৌশলী মনোয়ারুল ইসলাম’র কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে উপ-সহকারী প্রকৌশলী অরুন কুমার নাথ বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি তাই ওই রাস্তাটি সম্পর্কে কিছু বলতে পারছি না।’ শুধু মাত্র বাকেরগঞ্জ ও বাবুগঞ্জেই নয়, এমন ুর্ভোগের চিত্র পাওয়া যায় বানারীপাড়া উপজেলার বাইশারী, বিশারকা›ি, ইলুহারসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে, গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী, খাঞ্জাপুর, নলচিড়া, হিজলা উপজেলার ধুলখোলা, মেমানিয়া, বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই, চরকাউয়া, চরবাড়িয়া ইউনিয়নের কাগাসুরা, মেহেন্দিগঞ্জের ভাষানচর, আন্দারমানিকসহ বিভিন্ন ইউনিয়র সড়ক মাটির। যার কারণে চরম দুর্ভোগে এসব এলাকার হাজার হাজার মানুষ। বরিশাল বিভাগীয় আসন বরিশাল সদর উপজেলায়ও রয়েছে মাটির রাস্তা। সেখানে মানুষ নানা ুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বিশেষ করে রায়পাশা কড়াপুর, নগরীর ২৬ নং ওয়ার্ডের কাজকাঠি এলঅকায় প্রায় ড়ে কিলোমিটার সড়ক মাটির। বরিশাল সদর আসনের (বরিশাল-৫) সংসদ সদস্য ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব:) জাহিদ ফারুক শামীম বলেন, বিভাগীয় এই শহর এখনো কেন মাটির রাস্তা াকবে। তবে গত ১৫ বছর ধরে যিনি এমপি ছিলেন তিনি কি করেছেন। আমিতো মাত্র ২ বছর ধরে কাজ করছি। রোববারও আমার সাে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর সাথে কথা হয়েছে। অনেকগুলো প্রযেক্ট দেয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই একটি ভাল ফলাফল আসবে। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কোন কাজ হচ্ছে না। সেখানেতো আমি হস্তক্ষেপ করতে পারি না। ভাঙগাং সড়কের মেরামত