3:34 pm , September 5, 2020
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ খরা কাটিয়ে অবশেষে সুখবর দিয়েছে রুপালী ইলিশ। গত দুই দিন ধরে সাগরের প্রচুর ইলিশ আসা শুরু করেছে বরিশাল মৎস্য মোকামে। এর একটি অংশ বড় আকারের ইলিশ। তবে এখনই ইলিশ সস্তা বলা যাচ্ছে না। মৎস্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাগরে টানা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার ফলস্বরূপ এখন বড় আকারের ইলিশ ধরা পড়ছে। সাগরে ইলিশ শিকারে দরপতন হচ্ছে। তাই এ বছর ব্যবসায়ীরা ইলিশ রপ্তানির দাবিও তুলবেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। তবে স্থানীয় বাজারে সংকট থাকায় ইলিশ রপ্তানির সুযোগ নাকচ করে দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।বৃহস্পতি ও শুক্রবার দেখা গেছে, প্রাণ ফিরেছে নগরীর পোর্ট রোড ইলিশের পাইকারী বাজারে। ব্যবসায়ীরা জানান, গত ১৫ দিনে ইলিশের দেখা মেলেনি। বৈরী আবহাওয়ায় সাগরেই যেতে পারেনি জেলেরা। এখন সাগর থেকে ইলিশ নিয়ে ফেরা শুরু করেছে। মোকাম ঘুরে বেশি নজরে পড়েছে বড় আকারের ইলিশের। এসব ইলিশ নগরীর অলিগলিতেও খুচরা বিক্রেতাদের বেচাকেনা করতে দেখা গেছে। জানতে চাইলে জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ভরা মৌসুমের খরা কাটিয়ে আবার ধরা পড়ছে ইলিশ। গত দুই সপ্তাহ ধরে ইলিশের দেখা মেলেনি। এখন যা আসছে এগুলো সাগরের ও সাগর মোহনার। গতকালও পোর্ট রোডে সাগরের ইলিশ গড়ে কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়। মৎস্য কর্মকর্তা ড. বিমল বলেন, এবার ইলিশের সাইজও বেশ বড়। তিনি বলেন, যেহেতু দৈনিক হাজার মণ ইলিশ আসা শুরু করেছে সেহেতু সুদিন উঁকি দিচ্ছে। বড় আকারের ইলিশ ধরা পড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সমুদ্রে ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বড় ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। বার্মা থেকে ২ বছর আগে এ ধরনের বড় বড় ইলিশ আসত। তখন ১ কেজি সাইজের ইলিশ কেজি প্রতি বিক্রি হতো হাজার টাকার উপরে। গত দুই দিনে সেই ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা দরে। তিনি বলেন, ইলিশ ব্যাপক হারে ধরা পড়লে আড়তদাররা এবার রপ্তানি খুলে দেওয়ার দাবি তুলবে বলে জানিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা আশায় আছেন ব্যাপক ইলিশ ধরা পড়লে এবং দাম কেজি প্রতি ৩০০-৪০০ টাকায় নামলে রপ্তানির জোর দাবি তুলবেন। এর যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে ড. বিমল বলেন, ব্যাপক ইলিশ ধরা পড়লে বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়ার জন্য সরকার এটি হয়তো চিন্তা করবে। বরিশাল মৎস্য আড়তদার সমিতির অফিস সেক্রেটারি মো. রানা বলেন, দুই দিন ধরে ইলিশ আসা শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার প্রায় ৯০০ মণ ইলিশ মোকামে উঠেছে। গত বুধবার আমদানি হয়েছিল ১ হাজার মণের মতো। দামও সহনশীল। তিনি বলেন, সাগরের এবং সাগর মোহনায় এ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি ভোলা সংলগ্ন মেঘনার শেষ সীমানা ঢাল চরে বড় ইলিশ ধরা পড়ছে। এর আকার ১ কেজি থেকে দেড় কেজি। এক কেজি সাইজের ইলিশ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। তিনি বলেন, একটু বেশি বড় ইলিশ দেখা যাচ্ছে। গত দুই দিনে সাগর থেকে ছয় থেকে সাতটি বোট এসেছে। তার ধারণা ইলিশ আমদানি আর কমবে না বরং বাড়বে। রপ্তানির দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি সরকারের সিদ্ধান্ত। তবে মাছ ভরপুর থাকলে রপ্তানি করলে বৈদেশিক মুদ্রা আসবে। একটা সময় ইলিশের দাম ৪০০ টাকা কেজি হলে রপ্তানি করার কথা ভাবতেই পারেন ব্যবসায়ীরা।
আড়তদার ইয়ার উদ্দিন বলেন, দুই দিন ধরে সাগরের ইলিশ আসা শুরু করেছে। এর মধ্যে বড় সাইজের ইলিশ বেশ নজরে পড়েছে। তিনি আশা করেন, শিগগিরই ইলিশের বাজার জমে উঠবে।