3:37 pm , August 31, 2020
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দুই দিনের সফরে গিয়ে সাগরকন্যা কুয়াকাটার সমুদ্র সৈকতের ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামিম এমপি। সফরের প্রথমদিন ২৯ আগস্ট থেকে তিনি কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান, ঝাউবনসহ উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকা ও সমুদ্রসৈকতের ভাঙ্গন কবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। এছাড়া ওইসময়ে তিনি পটুয়াখালী জেলা, কলাপাড়া উপজেলা, কুয়াকাটা থানা ও পৌর আওয়মীলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দর সাথে সাক্ষাৎ করেন। পাশাপাশি কুয়াকাটা প্রেসক্লাব পরিদর্শন ও প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দর সাথে সাক্ষাৎ করেন। ৩০ আগস্ট কুয়াকাটা থেকে ফেরার পথে শেখ হাসিনা সেনানিবাস সংলগ্ন ভাঙ্গন কবলিত নদী তীরবর্তী এলাকাও পরিদর্শন করেন। সমুদ্র সৈক?তের ভাঙ্গন কব?লিত এলাকা প?রিদর্শন শে?ষে সাংবা?দিক?দের বি?ভিন্ন প্র?শ্নের উত্ত?রে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামিম বলছেন, কুয়াকাটা ও কক্সবাজারে সরকারের একটি প্লান রয়েছে। সেই প্লান কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেলক্ষে ২ বছর আগে মন্ত্রনালয়ের সচিব ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক নেদারল্যান্ডে গিয়েছিলো। নেদারল্যান্ড তাদের সী-বিচগুলো তীর রক্ষা করে যেভাবে তাদের জনগনের জন্য তৈরি করেছে, সেই প্রক্রিয়াটি দেখে এসেছেন তারা। বাংলাদেশে এসে সেই অনুযায়ী সমীক্ষা শেষ করা হয়েছে। এখন ডিপিপি প্রণয়ন হয়ে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে সেখান থেকে একনেকে যাবে। কক্সবাজার এবং কুয়াকাটাকে আন্তর্জাতিক মানের সী-বিচ করার প্লান আমাদের রয়েছে। এসময় প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, সমুদ্রতীর রক্ষায় এখানে (কুয়াকাটায়) একটা প্রকল্প চলমান রয়েছে। সেক্ষেত্রে ছোট খাটো ভাঙ্গন রোধে কাজ করা হয়েছে, তবে স্থায়ী সমাধান নয়। স্থায়ী সমাধানের জন্য কাজ চলমান রয়েছে। এসময় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সমুদ্র তীর রক্ষায় কুয়াকাটায় কিছু জিও টিউব দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু সেই জিও টিউবগুলোতে দর্শনার্থীরা এসে বসেন এবং নানানভাবে ব্যবহার করে কেটে ফেলেন। যতদিন জিও টিউবগুলো ঠিক ছিলো, ততদিন তীর ভাঙ্গেনি কিন্তু ছিদ্র হয়ে টিউবের ভেতরের বালু পরে যাওয়ার পর থেকে তীর আবার ভাঙ্গছে। সাধারণ জনগনেরও কিন্তু একটা দায়িত্ব আছে, শুধু সরকারের ওপর নির্ভর করলেই হবে না। গোটা বাংলাদেশকে সরকারের পক্ষে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব হবে না, যতক্ষন জনগন সরকারের সাথে একসাথে মিলে কাজ না করবে। আমরা আহবান জানাবো ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে যাবে সমুদ্রতীরে ভাঙ্গন না হয়, কিন্তু কেউ যেন জিওটিউব ছিদ্র করে না ফেলে। এভাবেই স্থায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা সৈকতকে রক্ষা করবো। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের কারণে পৃথিবীর সকল দেশেই অর্থনৈতিক একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের ভেতরে আমরা সমৃদ্ধশালী দেশ হবো। কিন্তু করোনার কারনে আমাদের অগ্রযাত্রা একটু ব্যহত হয়েছে। তারপরও আমরা ও সরকার ঘাবড়ে না গিয়ে আবার ঘুরে দাড়িয়েছি এবং ২০৪১ সালের ভেতরে সমৃদ্ধশালী দেশ হওয়ার লক্ষ্যে পৌছাবো ইনশ্আল্লাহ। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে কক্সবাজার এবং কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতকে আন্তর্জাতিক মানের করার। তাই যত দ্রুত সম্ভব প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। কারণ আন্তর্জাতিক মানের হলে দেশের মান-সন্মান বৃদ্ধি যেমন পাবে তেমনি বিদেশীরাও আসবে। সমুদ্রতীরে বালু ও মাটি সরে সাবমেরিন ক্যাবল বেড়িয়ে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের কোন সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তাহলে আমরা তার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। নতুন প্রকল্পে বাধের উচ্চতা বাড়িয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, উপকূলীয় এলাকায় ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সাহায্যে ৩ হাজার ২৮০ কোটি টাকার প্রকল্প চলছে, যেখানে ১৩৯ টি পোল্ডারের কাজ হচ্ছে। ১৩৯ টি পোল্ডারের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১৭ টি প্লোডারের কাজ করার কথা ছিলো, কিন্তু জমি অধিগ্রহনের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় আমরা ১০ টি প্লোডারের কাজ করছি। বাকী ৭ টিসহ ২৯টি পোল্ডারের কাজ ভিন্ন প্রকল্পের আওতায় আগামী ৫ বছরের মধ্যে শেষ করবো। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের অনেক উপকৃত হবেন এবং আরো সুরক্ষিত হবেন।বন্যা-জলোচ্ছাসে ক্ষয়ক্ষতি কমে আসবে।