4:03 pm , August 23, 2020
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিবার বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও টানা কয়েকদিনের জলাবদ্ধতায় এলোমেলো পুরো নগরীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বিশেষ করে পানির নিচে থেকে সড়কের বেহাল দশার সাথে বড় সমস্যা এখন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। গত কয়েকদিনে নগরীর নিম্নাঞ্চল সহ প্রায় ৫০ শতাংশ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে ছিল। বর্ষনও ছিল টানা প্রতিদিনই। এ কারনে সড়ক, ড্রেন, আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান একাকার হয়ে যায়। জোয়ারের সময় এই পানি বাড়লেও তা একেবারেই কমেনি ভাটার সময়ও। এ জন্য সকল ময়লা আবর্জনা পানিতে ভেসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে পুরো নগরীর রাস্তায়। কয়েকদিন আগের জলাবদ্ধতায় শুধু নগরীর নিম্মাঞ্চল এর বাসিন্দারা এই সমস্যার ভুক্তভোগী হলেও এখন পুরো নগরীর সকল এলাকা এবং তার বাসিন্দারা ভুগছেন আবর্জনার সমস্যায়। প্রত্যেকটি সড়কেই এখন আবর্জনা এবং পঁচা আবর্জনার দুর্গন্ধ। অবশ্য এর জন্য নাগরিকরাও অনেকটা দায়ী। বিশেষ করে বর্ষায় জমে থাকা পানির মধ্যেই ময়লা-আবর্জনা ফেলায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েদিনে সিটি কর্পোরেশনের স্বাভাবিক আবর্জনা অপসারন প্রক্রিয়া তার স্বাভাবিক নিয়মে চলতে না পাড়ায় এখন খোদ বিসিসির পরিচ্ছন্নতা বিভাগকে এ পরিস্থিতি সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছে। তবে তারা জানিয়েছেন পানি কমে যাওয়া এলাকাগুলোতে বর্ধিত দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিকে আনার প্রচেষ্টা চলছে। এছাড়া পানি কমলে নগরীর প্রতিটি ড্রেন পর্যবেক্ষন করবে কর্মিরা। যাতে করে পানি উঠলেও যেনো তা দ্রুত নেমে যায়। এছাড়াও ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাওয়া আবর্জনা অপসারন করে নেয়া হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে নগরবাসীর সহযোগীতাও কামনা করেছে বিসিসির পরিচ্ছন্নতা বিভাগ। অনুরোধ করা হয়েছে ময়লা আবর্জনা ফেলায় কিছুটা বিড়ম্বনা হলেও তা যেখানে সেখানে না ফেলার। যদি এলাকাভিত্তিক ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান পানিতে তলিয়েও গেলেও যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা না ফেলার অনুরোধ করা হয়েছে। উপকূলভাগ সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল সাগর আর উজানের ঢলের পানিতে সয়লাব হয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় কয়েক দিন থেকে। ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারের পানি ভাদ্রের বড় অমাবশ্যার বর্ষণে সয়লাব হয়ে যায় নগরী। গতকাল বরিবার পর্যন্ত অনেক রাস্তায় অনেক সড়কে ছিলো পানির ঢেউ। নগরীর ১৪টি বস্তি এলাকায় জোয়ারের পানি থৈ থৈ করেছে গত কয়েকদিন। হাজার হাজার ছিণœমূল মানুষের দূর্গতির শেষ ছিলনা এই সময়ে। নগরীর অন্তত ৫০ভাগ এলাকা পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। নগরীর সদর রোড সহ সকল এলাকায় প্রায় হাটু পানিতে তলিয়ে ছিলো। এ সকল এলাকার পানি পুরোপুরি নামেনি। কিছু স্থানের পানি নেমে যাওয়ার যায়গা থাকলেও এখনও নামেনি অনেক স্থানের পানি। ড্রেন আটকে জমে থাকা পানি গোটা এলাকা ড্রেনে পরিনত করেছে। বর্ষায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ নগরীর বেশির ভাগ সড়ক এবারের বন্যায় প্রায় পুরোপুরি শেষ হয়ে যাওয়ার পর্যায়ে পৌছে গেছে। সব মিলিয়ে বন্য পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও পুরো এলোমেলো আবস্থায় চলে গেছে গোটা নগরী। বন্যা পরবর্তি সময়ে আবর্জনার ব্যবস্থাপনার বিসয়ে বিসিসির পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম এর সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, বন্যার পানি থাকা অবস্থাও তারা পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার চেষ্টা করেছেন। প্রতিটি ওয়ার্ডে বন্যায় আবর্জনা অনেকটাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে তাই বর্ধিত জনবল দিয়ে দ্রুত তা অপসারন করা হচ্ছে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে প্রতিটি ড্রেন পরিস্কার করা হচ্ছে। ২০ টি ট্রাকের মাধ্যমে ৯০০ পরিচ্ছন্নতা কর্মি প্রতিদিন দু বেলা নিয়মানুযায়ী এই কাজ করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই প্রায় এলাকার আবর্জনা সরিয়ে নেয়ার ব্যাবস্থা হয়ে গেছে, যেসকল এলাকায় এখনও পানি জমে রয়েছে সে সকল এলাকা থেকে পানি কমে যাওয়া মাত্রই পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম শুরু করা হবে।