3:42 pm , August 22, 2020
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল বিভাগের সর্ববৃহৎ সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (শেবাচিম) শুরু হয়েছে তীব্র সুপেয় পানির সংকট। এছাড়া সাধারণ ব্যবহারে যে পানি পাওয়া যাচ্ছে তা নোংরা এবং পর্যাপ্ত নয় বলেও জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। ৫২ বছর আগে স্থাপিত একটি নলকূপ অকেজো হয়ে যাওয়ায় এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। হাসপাতালের আকার ও রোগীর সংখ্যা দিনকে দিন বাড়লেও পুরনো পানি সরবরাহের ক্ষেত্রের আধুনিকায়ন না হওয়াকে দুষছেন সংশ্লিষ্টরা। আর সহসাই এই সমস্যার সমাধান নেই বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, গণপূর্ত বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে। এটা আমাদের পক্ষে সমাধান করা সম্বব নয়।
শেবাচিমের দুজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী (টেকনোলোজিস্ট) নাম প্রকাশ না করার শর্তে পানির সংকট নিয়ে কথা বলেন। তারা জানান, গত এক মাস যাবৎ তাদের সেখানে তীব্র সুপেয় পানির সংকট। প্রায় দিনই তৃষ্ণা মেটাবার কিংবা সাধারণ কাজকর্ম সম্পন্ন করার পানি পাওয়া যায় না। মাঝেমধ্যে দু একদিন পানির সংকট নিরসন হয় লবণাক্ত ও নোংরা পানি ব্যবহারের মাধ্যমে।
তারা বলেন, ‘জুলাই এর মাঝামাঝি সময় থেকে এই সমস্যা শুরু হয়েছে। কিন্তু কি কারণে পানির এই সংকট কিংবা কবে নাগাদ সমাধান হবে সেটা তারা জানেন না। এরই মধ্যে মাঝেমধ্যে তুলনামূলক বেশি পানি লাইনে পাওয়া যায়। তবে সে পানিতে লবণাক্ততা ও ময়লা পাওয়া যায়’। হাসপাতালটির সার্জারী (নারী) বিভাগে গত ১৫ আগস্ট ভর্তি হওয়া এক রোগীর স্বজন মনিরা বেগম। তিনি জানান, প্রথম দিন থেকে পানির সমস্যায় ভুগছেন তারা। এর মধ্যে গত বুধবার খাবার জন্য যে পানি তিনি হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করেছেন তা লবণাক্ত। এছাড়া গোসল কিংবা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য যে পানি পাওয়া যায় সেটাও নোংরা। মোজাম্মেল হাওলাদার নামে গাইনী বিভাগের একজন রোগীর স্বজন বৃহস্পতিবার সকালে জানান, বিভাগের শৌচাগার ও গোসলখানা থেকে তীব্র দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। কারু পানির সংকটের দরুণ কেউ ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছে না। এমনকি খাবার জন্য পানি হাসপাতালের সামনের দোকানগুলো থেকে অতিরিক্ত মূল্যে কিনে আনতে হচ্ছে।
হাসপাতালে পানি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী সেলিম তালুকদার জানান, পুরো হাসপাতালটিতে পানি সরবরাহের জন্য ১৯৬৮ সালে দুটি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়। এরপর আর কোনো পানযোগ্য পানি উত্তোলন কিংবা সরবরাহের ক্ষেত্র তৈরি করা হয় নি। এই নলকূপ দুটির একটি থেকে ইদানীং লবণাক্ত ও নোংরা পানি উঠছিল। যে কারণে সেটি বন্ধ করার দরুণ বর্তমানে পানির সংকট দেখা দিয়েছে।